নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ :
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক পদ থেকে বহিস্কৃত এডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার বরাবরই বিএনপির স্বার্থের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন বলে তৃণমুলের দাবি তিনি যে নিজের স্বার্থেই রাজনীতি করেন তার প্রমানও তিনি বার বার দিয়েছেন।
তৃণমূলের মতে, বিএনপির রাজনীতি করে তিনি বহু টাকা পয়সা বাড়ি গাড়ি নাম জসের মালিক হলেও এই দলটিকে তিন কখনোই তেমন কিছু দিতে পারেননি। কিছু চাটুকার দালাল ছাড়া প্রকৃত কোনো নেতাকর্মীও তিনি তৈরী করতে পারেননি। কারনে-অকারনে তার মন মতো না হলেই দলের সমালোচনা করেছেন এই তৈমুর।
এর আগে সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনেও বিএনপির প্যানেলের বিপক্ষে প্যানেল দিয়েছিলেন এডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার। এতে তখন তিনি তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন।
এবার নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে তাকে বিএনপিরর মহাসচিব আর যুগ্ম মহাসচিব বার বার নিষেধ করার পরেও তিনি অংশগ্রহন করেছেন। দলের সিদ্ধান্তকে অমান্য করে এই নির্বাচনেও অংশ নিয়ে তিনি বিএনপির সাথে বেঈমানী করেছেন এবং সরকারকে সহায়তা করেছেন বলে মনে করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।
নাসিক নির্বাচনে তিনি দল থেকে পদত্যাগ করে অংশ নেন নাই। যার ফলে সরকারী দল বিদেশীদের কাছে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে যে এই সরকারের আমলে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয় এবং বিএনপির জেলা পর্যায়ের প্রভাবশালী নেতাও এই সরকারের আমলে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। মূলত এভাবেই তৈমুর আলম খন্দকার বর্তমান সরকারকে সহায়তা করে এসেছে। যার পরিনতিও তাকে ভোগ করতে হয়েছে। দল তাকে বহিস্কার কারতে বাধ্য হয়েছে।
সেই তৈমুরই এখন আবার নতুন করে বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। বিএনপির নতুন কমিটিকে তিনি নানা রকম হুমকি ধমকি দিতে শুরু করেছেন। অথচ তার বহিস্কারাদেশ এখনো প্রত্যাহার করা হয়নি এবং প্রত্যাহারের কোনো সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না। ফলে এখন আর তিনি বিএনপির কেউ নন।
তাই তার এসব বক্তব্য তার নিজের এবং সাবেক এমপি এডভোকেট আবুল কালামের কিছু পারিবারিক সদস্য ছাড়া আর কেউ আমলে নিচ্ছে না। বরং তৈমুর আলম খন্দকার যে বিএনপির জন্য বিশেষ ভাবে ক্ষতিকর এটা বুঝে সবাই।
এদিকে এডভোকেট আবুল কালামের পরিবারও প্রতিহিংসার আগুনে জ্বলছে। তাদের ভাবখানা এরকম যেনো তাদের হাতেই রাখতে হবে বিএনপির নেতৃত্ব। অথচ এই পরিবারের প্রয়াত জালাল হাজী যেভাবে নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন সেভাবে নেতৃত্ব দিতে পারেননি সাবেক এমপি এডভোকেট আবুল কালামও। অথচ বিএনপি তাকে বার বার মনোনয়ন দিয়েছে এবং তিনবার এমপি বানিয়েছে।
বিএনপি প্রতিষ্ঠার পর থেকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে কেবল মাত্র বিগত নির্বাচন ছাড়া আর কোনো নির্বাচনে এডভোকেট আবুল কালামের বাহিরে আর কেউ মনোনয়ন পায়নি। বিগত নির্বাচনে মনোনয়ন পেয়েছিলেন এসএম আকরাম। তার পরেও মহানগর বিএনপির সভাপতি ছিলেন এডভোকেট আবুল কালাম।
কিন্তু বিগত নির্বাচনের পর থেকে বয়সজনিত কারনে এডভোকেট আবুল কালাম অসুস্থ হতে থাকেন এবং দলের দায়িত্ব পালনে অক্ষম হয়ে পরেন। আর এ কারনেই এডভোকেট আবুল কালামকে অবসরে পাঠিয়ে এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানকে আহবায়ক করে এই নতুন কমিটি গঠন করা হয়।
কিন্তু কালাম পরিবারের সদস্য আতাউর রহমান মুকুল এবং পুত্র আবুল কাউসার আশা এই কমিটি মেনে নিতে পারছেন না। কারণ তারা মনে করেছিলেন এই পরিবারের হাতেই রেখে দেবে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির নেতৃত্ব। কিন্তু দল মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয় এডভোকেট সাখাওয়াৎ হোসেন খান এবং আবু আল ইউসুফ খান টিপুর হাতে দলের নেতৃত্ব তুলে দেন। ফলে এটা যে তারা সহজে মেনে নিতে পারবেন না এটাই স্বাভাবিক। তাই তাদের অনুসারীরা পদত্যাগ করেন।
কিন্তু তারা যে ভুলটি করেন সেটি হলো দল থেকে বহিস্কৃত এডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারের নেৃতত্বে সভা করেন এবং নয়া কমিটির নেতৃবৃন্দকে হুমকি ধমকি দেন। তাই সর্বত্র এখন প্রশ্ন উঠেছে এই মুহুর্তে এডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার বিএনপির কে? তার নেতৃত্বে যাওয়াটা কালামপন্থীদের জন্য কতোটুক সঠিক হয়েছে।
বরং তৈমুরের নেতৃত্বে না গিয়ে তারা যদি পদত্যাগ করতেন এবং কেন্দ্রে গিয়ে নালিশ করতেন তাহলে হয়তো পরিস্থিতি ভিন্ন হতো। অথচ মুকুল এবং আশার মতো নেতারা তৈমুরের নেতৃত্ব মেনে নিলেন যাকে দলীয় শৃংখলা ভঙ্গের দায়ে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। তাই এমন হঠকারী সিদ্ধান্ত তাদের জন্য বুমেরাং হয়েছে বলেই অনেকে মনে করেন। কারণ বিএনপি থেকে বহিস্কৃত প্লাস পদত্যাগের বিষয়টি আসলেই হাস্যকর হয়েছে বলে রাজনৈতিক মহল মনে করেন।