নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:
দেশের রাজনীতিতে পরিবর্তনের হাওয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলে অভিমত রাজনৈতি বিশ্লেষক মহলের। তাদের মতে, এবার শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪১তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ব্যাপক ভাবে পালন করেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। দিবসটি উপলক্ষ্যে দলটির সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মাঠে নামতে দেখা গেছে। এবার তারা আগেই কিছু প্রস্তুতিমূলক সভাও করেছেন।
আর সোমবার সারা নারায়ণগঞ্জে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে দিবসটি পালন করতে দেখা গেছে। মিলাম মাহফিল ও রান্না করা খাবার বিতরনের মধ্য দিয়ে এভাবে দীর্ঘ সময় পরে বেশ জোড়ালোভাবে দিবসটি পালন করলো বিএনপি। এতোদিন বিএনপি যেকোনো অনুষ্ঠানেই সরকারী দল এবং পুলিশ বাধা দিতো। কিন্তু এবার দেখা গেলো ভিন্ন চিত্র।
গতকালের অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জের কোথাও বাধা দেয়ার খবর পাওয়া যায়নি। ফলে বিএনপির নেতাকর্মীরাতো বটেই সাধারন মানুষও এবারের অনুষ্ঠানে শামিল হয়েছেন। তাই আগামী বছর দেশে যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হচ্ছে তাতে দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরে আসবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করছেন অনেকে।
এদিকে বিগত প্রায় পনেরো বছর ধরে বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতার বাহিরে রয়েছে। এই পনেরো বছরে দেশে কোনো অবাধ ও সুষ্টু নির্বাচন হয় নাই বলে দাবি বিএনপি নেতাকর্মীদের। বিএনপির অভিযোগ এই সময়ে তাদের দলের বহু নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। কেড়ে নেয়া হয়েছেন জনগনের ভোটের অধিকার। সঙ্গে সঙ্গে সংবাদপত্রের স্বাধীনতাও কেড়ে নেয়া হয়েছে। দিনে দিনে দেশে বিদেশে সরকারের এই ধরনের ফ্যাসিবাদী আচরনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদও হয়েছে বলে দাবি তাদের।
গুম খুনের দায়ে র্যাবের সাতজন কর্মকর্তাতে যুক্তরাস্ট্র ভ্রমনে সেনশান দেয়া হয়েছে যাকে এ সরকারের প্রতি মার্কিনীদের অনাস্থা বলে দেখছেন প্রবীণ রাজনীতিবীদদের অনেকে। তাদের মতে, চিহ্নিত করা হয়েছে কারা দেশে এই গুম খুনের হোতা। আর যুক্তরাস্ট্রের এই সেনশানের পর থেকে দেশে অনেকটাই কমে এসেছে গুমের ঘটনা। কমেছে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডও। এছাড়া সরকার নিজেকে একটি গণতান্ত্রিক সরকার দাবি করলেও মার্কিন যুক্তরাস্ট্র, ইউরোপিয় ইউনিয়ন এবং জাতিসংঘ বলছে বাংলাদেশে কোনো গলতন্ত্র নেই।
এছাড়া, গণমাধ্যম সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি বলছে বাংলাদেশে সংবাদপত্র এবং সুশিল সমাজের কোনো স্বাধীনতা নেই এবং বিশ্বের বড় সব মানবাধিকার সংগঠনগুলি বলছে বাংলাদেশে মানবাধিকারের প্রবল ঘাটতি রয়েছে। একইসাথে দেশের ভেতর বিএনপি সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সরকারের টানা সমালোচনা করে চলেছে। তাই দেশী বিদেশী চাঁপে পড়ে সরকার অনেকটাই সহনশীল আচরন করছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। তাই আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি আরো ঘুরে যাবে বলেই অনেকে মনে করেন।
তবে সরকার যদি এবারও আগের মতোই কোনো একতরফা নির্বাচন করতে চায় তাহলে দেশে যে আন্দোলন দানা বেধে উঠবে এতে কারোই কোনো সন্দেহ নেই বলে অভিমত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের। কারন, সরকার দেশে বিগত সময়ে ব্যাপক উন্নয়ন করেছে এটা যেমন সত্য তেমনি দেশের মানুষের যে গণতান্ত্রিক অধিকার ছিলো না এটাও সত্য। তাই অধিকার বঞ্চিত মানুষ আগামী নির্বাচন একতরফা হতে দেবে না বলেই মত তাদের। ফলে দেশের রাজনীতিতে পরিবর্তনের হাওয়া একেবারে স্পষ্ট বলেও মনে করেন তারা।