নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:
বাংলাদেশের বহুল প্রচলিত একটি প্রবাদ বাক্য হচ্ছে “ঝড়ে বক মরে, ফকিরের কেরামতি বাড়ে”। প্রচলিত এ বাক্যের মতো এক কান্ড ঘটেছে নারায়ণগঞ্জে। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে নিজের ক্রেডিট বলে প্রচার করছে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের অনুসারীরা।
দেশের প্রায় সকল জেলা পরিষদেই পরিবর্তন করা হয়েছে আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীদের। পুরোনোদের বাদ দিয়ে সুযোগ দেয়া হয়েছে নতুনদের। এরই ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও প্রশাসক আনোয়ার হোসেনের পরিবর্তে নৌকার মনোনয়ন দেয়া হয় মহানগর আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি, বোমা হামলায় পা হারানো ত্যাগী নেতা চন্দনশীলকে।
জানা গেছে, ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা নারায়ণগঞ্জের বর্ষিয়ান রাজনীতিবীদ আবদুল হাইকে জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসাবে দায়িত্ব দেন। পরবর্তীতে ২০১১ সালে চেয়ারম্যান পদে মহানগর আওয়ামীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনকে নৌকার মনোনয়ন দেন দলীয় প্রধান। এরই ধারাবাহিকতায় এবার আরেক ত্যাগী নেতা চন্দন শীলকে মনোনয়ন দেয় দলটি।
দলটির তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতে, বঙ্গবন্ধু কণ্যা, প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনার একক বুদ্ধিমত্তার কারণে দীর্ঘ সময় পর ২০০০ সালের ৬ জুলাই জেলা পরিষদ আইন প্রবর্তন করে এবং এর অধীনে খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান জেলা ব্যতীত অন্যান্য জেলায় জেলা পরিষদ গঠনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তার দূরদর্শী চিন্তা-চেতনার কারণেই দলের বঞ্চিত ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের নির্বাচনের সুযোগ দেয়া হয় স্থানীয় সরকারের অন্যতম বড় এ পরিষদে। এতে করে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে গণমানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ পায় দেশের সকল জেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যানবৃন্দ তথা ত্যাগী নেতৃবৃন্দ।
তবে, প্রধানমন্ত্রীর সার্বজনীন এই সিদ্ধান্ত ও দলীয় ধারাবাহিক পরিবর্তনকে এ জেলায় শামীম ওসমানের একক ক্রেডিট দাবি করে গুণকীর্তন করছে তার অনুসারী নেতাকর্মীরা। যা অনেকটাই “ফকিরের কেরামতি বাড়ার মতো কান্ড বলে” মনে করে দলটির তৃণমুলের নেতাকর্মীরা।
এদিকে, অনুসারীদের এমন কর্মকান্ডে প্রভাবশালী এ নেতাকে নিয়ে জেলাজুড়ে হাস্যরসের সৃষ্টি হলেও উত্তর বলয়ের নেতাকর্মীরা এ প্রসঙ্গ টেনে নিজেদের নেতার ক্ষমতা জাহিরের চেষ্টা করছে। শুধু তাই নয়, ফাঁকা এই অর্জনকে ঘিরেই শামীম বলয়ের নেতাকর্মীরা নিজেদের চাঙ্গা করার চেষ্টা করছে বলেও জানা গেছে।
অপরদিকে, জেলা-মহানগর আওয়ামীলীগের সিনিয়র অনেক নেতৃবৃন্দের মতে, ফাঁকা বুলি ছেড়ে আর লাভ হবেনা। কেননা আওয়ামীলীগের অধিকাংশ নেতাকর্মীসহ সাধারণ জনগন জানে জেলা পরিষদের মনোনয়নে কোনো ক্রেডিট নেই কারোই। প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছাতেই নৌকার মনোনয়ন দেয়া হয়েছে চন্দন শীলকে। ফলে “ঝড়ে বক মরে, ফকিরের কেরামতি বাড়ে” টাইপ কথাবার্তা বলা থেকে সকলের বিরত থাকা উচিত বলে মনে করেন সিনিয়র এই নেতৃবৃন্দরা।