শামীম ওসমানকে ভোট দিতে সংগঠিত হচ্ছে পাড়া-মহল্লার জনগন

29
শামীম ওসমান

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে শক্তিশালী কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় অনেকটাই নির্ভার সময় কাটাচ্ছেন আসনটির সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী একেএম শামীম ওসমান। গত দুই মেয়াদে ব্যাপক উন্নয়নের কারণে এবারও শামীম ওসমানকে বিজয়ী করতে মুখিয়ে আছে ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ।

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিটি পাড়া-মহল্লার সাধারণ মানুষ আগামী ৭ জানুয়ারী নির্বাচনের দিন শামীম ওসমানকে ভোট দিতে সংগঠতি হচ্ছে। গত ১০ বছরে ধারাবাহিক ভাবে ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জে যে উন্নয়ন হয়েছে তাতে করে শামীম ওসমানকে আবারো ক্ষমতায় দেখতে চায় সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ। নির্বাচনী এলাকার প্রায় প্রত্যেকটি রাস্তা-ঘাট, স্কুল কলেজের উন্নয়ন, এলাকার আইনশৃংখলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটিয়ে জনগন শান্তিতে যাতে বসবাস করতে পারে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা, স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণসহ সকল সেক্টরেই যে পরিমাণ উন্নয়ন শামীম ওসমান করেছেন তার প্রতিদান দিতে প্রস্তুত ভোটাররা। অপেক্ষা শুধুই ৭ জানুয়ারির। কাজ করেছেন বলেই জনগন নৌকা প্রতীকে শামীম ওসমানকে ভোট দিতে মুখিয়ে আছে দাবি স্থানীয়দের।

স্থানীয়রা বলছে, এবারের নির্বাচনেও আমরা স্বত:স্ফূর্তভাবে নৌকা মার্কায় ভোট দিবো এবং শামীম ওসমানই আমাদের এমপি হবেন। কেননা, শামীম ওসমান মানেই নারায়ণগঞ্জের উন্নয়ন। গত ২ মেয়াদে ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জের আনাচে-কানাচে যে পরিমাণ কাজ ও উন্নয়ন হয়েছে তা স্বাধীণতা পরবর্তী সময়ের সর্বোচ্চ উন্নয়ন। শামীম ওসমান ইতিমধ্যেই বিশ^বিদ্যালয়, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, আইটি ইনকিউবেশন সেন্টার, মেডিকেল কলেজের অনুমোদন আনতে সক্ষম হয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে। এর মধ্যে কিছু কাজ চলমানও আছে, কিছু কাজ আগামী নির্বাচনের পরে শুরু হবে। তাই এসকল কাজ সমাপ্ত করতে এবং উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে শামীম ওসমানকেই ভোট দিবেন বলে জানান তারা।

ফতুল্লা থানা এলাকার এনায়েতনগর ইউনিয়নের বাসিন্দারা বলেন, আগে সামান্য বৃষ্টি হলেই দিনের পর দিন আমাদের জলাবদ্ধতায় থাকতে হতো। কিন্তু শামীম ওসমানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এখন আমাদেরকে জলাবদ্ধতায় থাকতে হয় না। আগে, ১০ মিনিট বৃষ্টি হলে দিনের পর দিন পানিবন্দী থাকতে হতো, এখন ৫দিন টানা বৃষ্টি হলেও ১০ মিনিট পানি আটকে থাকে না। এছাড়া, রাস্তা ভাঙ্গাচোরা থাকার কারণে, আগে চাষাড়া বা অন্য স্থান থেকে গাবতলী, ইসদাইর এলাকায় কোনো রিকশা আসতে চাইতো না। এখন আমাদের এলাকার প্রতিটি রাস্তা পাকা। এখন রিকশা নিয়ে আমরা আমাদের বাড়ির সিড়ির সামনে যেতে পারি। এসবই সম্ভব হয়েছে শামীম ওসমানের কারণে।

কাশিপুর ইউনিয়নের বাসিন্দারা বলেন, গত ১০ বছরে আমাদের জীবনমান একেবারে পাল্টে গেছে। রাস্তা-ঘাট, পুল-কালভার্টসহ যোগাযোগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এমন কোনো সেক্টর নেই যেখানে উন্নয়ন হয়নি। এখন আবার ২৬ শত কোটি টাকা ব্যায়ে পঞ্চবটি-মুক্তারপুর সড়কে দৃষ্টিনন্দন সড়ক ও ফ্লাইওভার নির্মাণের কাজ চলছে। যা আমাদের এলাকাসহ আশেপাশে এলাকার মানুষের জীবনমানকে অন্যতম উচ্চতায় নিয়ে যাবে বলে আমরা মনে করি।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন জালকুড়িসহ আশেপাশের এলাকার বাসিন্দারা বলেন, ডিএনডি এলাকার আওতাভুক্ত হওয়ায় বর্ষাকালে আমরা সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতাম। কিন্তু এমপি সাহেব পানিমন্ত্রীকে সরেজমিনে এনে ডিএনডি প্রকল্প পরিদর্শন করান। পরবর্তীতে শামীম ওসমানের অনুরোধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় ১১’শ কোটি টাকা বরাদ্দ দেন। সম্পূর্ণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই বর্তমানে আমরা এর সুফল ভোগ করছি। পুরো কাজ শেষ হলে পাল্টে যাবে এই অঞ্চলের চেহারা।

ফতুল্লা থানাধীন শিবু মার্কেট এলাকার বাসিন্দারা বলেন, রাজধানীর ঢাকার সাথে নারায়ণগঞ্জের যোগাযোগ ব্যবস্থার অভুতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে শামীম ওসমানের কারনেই। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকরোডটি ইতিমধ্যেই ৮ লেনে উন্নীতকরণ কাজ প্রায় শেষের দিকে। চাষাড়ার দিকে কিছু কাজ বাকী আছে, যা সম্পন্ন হলে মাত্র ৭/৮ মিনিটে চাষাড়া থেকে সাইনবোর্ডে আসা-যাওয়া করা যাবে। এসব সম্ভব শুধুমাত্র শামীম ওসমানের কারণে। তার মতো এমপি পেয়ে আমরা ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জবাসী অত্যন্ত গর্বিত।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন নাসিক ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দারা বলেন, সংসদ সদস্য শামীম ওসমান মানেই উন্নয়ন। আশপাশের যে কোনো সংসদীয় আসনের তুলনায় সর্বদা বেশ এগিয়ে থাকেন তিনি। তাই প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রেখে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে শামীম ওসমানকে আবারো এমপি নির্বাচিত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তারা।

নির্বাচনের জয়ের প্রশ্নে শামীম ওসমান বলেন, আমার বিপরীতে কারা প্রার্থী হয়েছে তাদেরকে আমি ভালোভাবে চিনিও না। নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে ভাবছিও না। তবে, আল্লাহ পাক যদি চায় এবং আমার এলাকার জনগন যদি আমাকে ভোট দেয়, তাহলে নির্বাচিত হলে আগামী ১-২ বছরের মধ্যেই নির্বাচনী এলাকার সকল কাজ সমাপ্ত করে ফেলবো। তবে, নির্বাচিত হলে সর্বপ্রথম প্রতিটি এলাকার রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে ১হাজার সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করবো। যাদেরকে সাথে নিয়ে সমাজ থেকে মাদক নির্মূল করবো।

তিনি আরও বলেন, আমার বাবার নামে কড়া শামসুজ্জোহা সড়ক তথা লিংকরোডের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখানে ইতিমধ্যে শেখ কামাল আইট ইনকিউবেশন সেন্টার নির্মাণের কাজ চলছে। এছাড়া, এখানে বিশ^বিদ্যালয়, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও মেডিকেল কলেজের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। আগামী নির্বাচনে আওয়ামীলীগ বিজয়ী হলে এসকল কাজ সমাপ্ত করা হবে। আমি শুধু চাই, মৃত্যুর পরে মানুষ যেন আমার জন্য চোখের দু ফোটা পানি ফেলে। এটাই হবে আমার প্রাপ্তি, আমার অর্জন।

উল্লেখ, এবারের নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের মোট ভোটার সংখ্যা ৬ লাখ ৯৪ হাজার ২০৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছেন ৩ লাখ ৫৭ হাজার ৩০৫ জন এবং নারী ভোটার রয়েছেন ৩ লাখ ৫৫ হাজার ৪০০ জন। এছাড়া, তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার আছে ৩ জন। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে এবার ভোটকেন্দ্র রয়েছে ২২৯ টি ও স্থায়ী ভোট কক্ষ আছে ১৫২৪ এবং অস্থায়ী ভোট কক্ষ আছে ৩৮টি।