যানজটে স্থবির চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়ক

164
যানজটে স্থবির চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়ক

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ :

যানজটে একেবারে স্থবির হয়ে পড়েছে চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়ক। সকাল নয়টার পর থেকে শুরু হওয়া এই যানজটে রাত দশটা পর্যন্ত ভুগতে হয় জনসাধারণকে। দিনে দিনে এই যানজট প্রকট আকার ধারণ করছে। ফলে এই সড়কে চলাচল করতে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারন মানুষদের।

গতকাল এই সড়কের অক্টোঅফিসের মোড়ে যানজটে আটকা পড়া রহুল আমিন জানান, পঞ্চবটি থেকে অক্টো মোড় পর্যন্ত আসতে প্রায় দুই ঘন্টা সময় লগেছে। রাস্তাটি দুই লেনের এবং কোনো ডিভাইডার নেই বলেই এমন যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
তার মতোই জ্যামে পড়ে থাকা আরেকজন বলেন, এই রাস্তাটি অন্তত চার লেন হওয়া দরকার। দুই পাশে জায়গা থাকার পরেও কেনো এমন ব্যস্ততম সড়কটি প্রশস্ত করা হচ্ছে না তা আমাদের বোধগম্য নয়।

প্রাইভেট কারে আসা এক ব্যাক্তি বলেন, প্রচুর জ্যাম হয় তা জানা সত্ত্বেও এ সড়ক দিয়েই চলাচল করতে হয়। তার বাড়ি ঢাকায়, কিন্তু কারখানা বিসিক শিল্প এলাকায়। ফলে শত কষ্ট সহ্য করে, গুরুত্বপূর্ণ সময় নষ্ট করে হলেও এ সড়ক দিয়েই চলাচল করতে হয়। এসব কথা জানিয়ে তিনি চরম হতাশা প্রকাশ করেন।

এদিকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড তথা একেএম শামসুজ্জোহা সড়কটি ছয় লেন করার কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। এতে নারায়ণগঞ্জ শহরের সাথে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগ আরো সহজ হবে। আরো কম সময়ে নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকার মানুষ দুই শহরে যাতায়ত করতে পারবে। ঐ সড়কটির মতোই গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হলো ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পূরনো সড়ক। এই সড়কটি নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া মোড় থেকে পঞ্চবটি এবং পাগলা হয়ে রাজধানীতে গিয়ে মিলেছে। শামসুজ্জোহা সড়ক নির্মানের আগে এই সড়কটিই ছিলো রাজধানীর সাথে নারায়ণগঞ্জের যোগাযোগের একমাত্র সড়ক।

কিন্তু নারায়ণগঞ্জবাসীর জন্য দু;খের বিষয় হলো সড়কটি অবহেলায় পরে আছে যুগের পর যুগ ধরে। কেননা অজানা কারণে প্রশস্ত করা হচ্ছে না গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি। সেই বৃটিশ বা পাকিস্তান শাসনামল থেকে সড়কটির প্রশস্ততা একই রয়েছে। তার মানে প্রায় শত বছর আগে যে দুই লেনের সড়ক নির্মান করা হয়েছে এখনো সেই দুই লেনই রয়েছে। বরং ক্ষেত্র বিশেষে এর প্রশস্ততা আরো কমেছে। ফলে রাষ্ট্রের সড়ক জনপদ বিভাগ এই সড়কটিকে এবং সাধারণ মানুষের গুরুত্বপূর্ণ কর্মঘন্টাকে চরম অবহেলা করছে বলে মনে করেন নারায়ণগঞ্জের সাধারন মানুষ।

অপরদিকে নারায়ণগঞ্জের সাধারন মানুষের মতে, স্বাধীনতার পূর্ব এবং পরবর্তী সময়ে এই সড়ক দিয়ে যে পরিমান যানবাহন চলাচল করতো এখন চলাচল করে তার চেয়ে অন্তত তিনশ গুন বেশি। কারণ বিগত পঞ্চাশ বছর আগে এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারীদের সংখ্যা ছিলো বর্তমানের দুইশ ভাগের এক ভাগ। বলা চলে সড়কটির দুই পাশে ছিলো চাষের জমি। কোনো মানুষ বাস করতো না।

তবে বর্তমানে এখানে গড়ে উঠেছে লাখ লাখ মানুষের বসতি। তাই সড়কটির প্রশস্ততা না বাড়ায় সারাদিন যানজট লেগেই থাকে। তাই সড়কটির দুই পাশে পর্যাপ্ত জায়গা থাকার পরেও কেনো প্রশস্ত করা হচ্ছে না এমন প্রশ্ন নগরবাসীর। নারায়ণগঞ্জের সাধারন মানুষ মনে করে, এখনই সড়কটি দুই পাশে প্রশস্ত করা না হলে ভবিষ্যতে আরও তীব্রতর যানজটের সৃষ্টি হতে পারে সড়কটিতে।