তাকে নিয়ে যা ভাবছেন আ:লীগ-বিএনপির নেতারা...

মনিরুল আলম সেন্টু, “না ঘরকা না ঘাটকা”

171

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

কুতুবপুরের চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টু একাধারে ফতুল্লা থানা যুবদলের সভাপতি এবং ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারন সম্পাদক ও সিনিয়র সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। গোটা ফতুল্লা থানা জুড়ে তিনি বিএনপির একজন জনপ্রিয় নেতা ছিলেন। সেই নেতা এবার নৌকা প্রতিক নিয়ে কুতুবপুরের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।

তিনি বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগ দিলেও তার অনুসারীরা বিএনপিতেই রয়ে গেছেন। বিশেষ করে বিএনপি নেতা হাজী মোহাম্মদ শহীদ উল্লাহ এবং শহীদুল ইসলাম টিটু এখনো বিএনপির রাজনীতিতেই সক্রিয় রয়েছেন। তাই এবার তিনি নৌকা প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করলেও আসলে তিনি কতোটা বিএনপি আর কতোটা আওয়ামী লীগ সেই প্রশ্ন রয়ে গেছে।

তবে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান এবং আওয়ামী লীগ নেতা শাহ নিজামের সু-নজরে থাকায় সেন্টু কুতুবপুরের চেয়ারম্যান হিসাবে আপাতত বেশ ভালো মতোই টিকে আছেন। তবে তিনি কতোটা শান্তিতে আছেন সেটা তিনি নিজেই বলতে পারবেন।

এ বিষয়ে কুতুবপুরের আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলের কয়েকজন নেতার সাথে কথা হলে কুতুবপুরের একজন আওয়ামী লীগ নেতা জানান, আমরা যতোটুকু জানি মনিরুল আলম সেন্টু সেই ছাত্র জীবন থেকে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। তার গোটা পরিবারও বিএনপি করেন। তাই তিনি কেবল চেয়ারম্যানের চেয়ারটা টিকিয়ে রাখার জন্যই নৌকা প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করেছেন। কিন্তু তিনি আওয়ামী লীগের মতাদর্শকে মোটেও গ্রহন করতে পারেননি। অনেক জায়গায় বক্তব্য দিয়ে তিনি ঠিক মতো জয় বাংলা শ্লোগানটা পর্যন্ত দিতে পারেন না। তিনি ঠেকায় পরেই আওয়ামী লীগে এসেছেন আর আমরাও ঠেকায় পরেই তাকে মেনে নিচ্ছি। আসলে আওয়ামী লীগ তার আসল ঠিকানা নয়। তার আসল ঠিকানা হলো বিএনপি। নৌকা নিয়ে চেয়ারম্যান হয়ে এখনো তিনি বিএনপির গোড়ায়ই পানি ঢালছেন। তিনি খুশী মনে নয়, বরং মন খারাপ করেই আওয়ামী লীগ করছেন।

একই রকম প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেন কুতুবপুরের বিএনপি নেতারাও। সম্প্রতি বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ পদে আসিন এক নেতা বলেন, মনিরুল আলম সেন্টু কেবল মাত্র চেয়ারম্যানের চেয়ারটি ধরে রাখার জন্য নৌকা প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করেছেন। তবে এটাও সত্য আমাদের দল বিএনপির একজন দল ত্যাগী নেতা এর জন্য দায়ী। দলত্যাগী ওই নেতা একজন শিল্পপতি। তিনি সেন্টুকে নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করে তাকে বিএনপি থেকে দূরে ঠেলে দিয়েছেন। ওই নেতা টাকা পয়সা খরচ করে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের ম্যানেজ করে মনিরুল আলম সেন্টুকে দল থেকে বহিস্কার করিয়েছেন। মূলত দলের এমন আচরনে অতিষ্ঠ হয়েই সেন্টু ধীরে ধীরে আওয়ামী লীগের দিকে ধাবিত হয়েছেন।

আরো পরিস্কার করে বলতে গেলে বলতে হয়, আমরা সেন্টুকে ধরে রাখতে পারিনি আর আওয়ামী লীগের এমপি একেএম শামীম ওসমান তাকে লুফে নিয়েছেন। এখানেই একজন রাজনীতিবিদের সাথে ওই শিল্পপতির পার্থক্য। শেষ পর্যন্ততো তিনি বিএনপিতে থাকলেন না, উল্টো বিএনপির ক্ষতি করে রেখে গেলেন। তবে নৌকা নিয়ে নির্বাচন করে মনিরুল আলম সেন্টুও স্বস্তিতে নেই বলে মনে করেন এই বিএনপি নেতা।
মূলত এভাবেই এখন মনিরুল আলম সেন্টু ‘না ঘরকা না ঘাটকা’ অবস্থায় রয়েছেন।