তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিলে কোনো উত্তেজনা থাকবে না, নির্বাচনমুখী হবে সবাই...

ভেতর থেকে ভেঙ্গে পরেছে সরকার : গিয়াস উদ্দিন

168
সরকারকে বিদায় করে গণমানুষের দাবি প্রতিষ্ঠা করবো - গিয়াস উদ্দিন

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

নারায়ণগঞ্জে মানসিক ভাবে আরো চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। তারা মনে করেন দেশের ভেতর বিএনপি সহ বিরোধী দলগুলির শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের চাঁপ এবং দেশে গণতন্ত্র পূন:প্রতিষ্ঠার দাবিতে গণতান্ত্রিক বিশ্বের চাঁপের কারনে অনেকটাই কাবু হয়ে পরেছে সরকার যা কিনা এরই মাঝ সরকার প্রধান, এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তৃতায় তারা নিজেরাই প্রকাশ করে ফেলেছেন।

গতকাল নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিনের সাথে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, সরকার তার দূর্বলতা নিজেই প্রকাশ করে ফেলছে। বুধবার সরকার প্রধান মার্কিন যুক্তরাস্ট্র সহ পশ্চিমা দেশগুলিকে লক্ষ্য করে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে পরিস্কার হয়ে গেছে যে আওয়ামী লীগ এখন ক্ষমতা হারানোর ভয়ে একেবারে দিশেহারা হয়ে পরেছেন।

গিয়াস উদ্দিন বলেন, কারা নাকি এ সরকারকে ক্ষমতা থেকে সড়াতে চায়। কিন্তু বাস্তবতা হলো এই মুহুর্তে বাংলাদেশের জনগন তাদের ভোটের অধিকার ফিরে পেতে চায় এবং পশ্চিমা দেশগুলি এই ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যই সরকারের উপর চাঁপ দিয়ে যাচ্ছে। আর সরকার প্রধান বেশ ভালো করেই জানেন দেশে যদি একটি অবাধ ও সুষ্টু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় তাহলে আওয়ামী লীগ আর রাস্ট্র ক্ষমতায় আসতে পারবে না। তাই আমাদের দাবি হলো সরকার যতো তারাতারি সম্ভব দেশে কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে অবিলম্বে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করুক। দেশের মানুষ ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারলেই কোনো বিদেশী শক্তি আর এ দেশ নিয়ে মাথা ঘামাতে আসবে না। তখন আর যুক্তরাস্ট্রও কোনো ভিসা নীতি প্রয়োগ করবে না। কিন্তু দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরন করা হয়েছে বলেই এ দেশের নির্বাচন নিয়ে বিদেশীরা কথা বলার সুযোগ পাচ্ছে।

গিয়াস উদ্দিন আরো বলেন, সরকার এখন যে অবস্থায় এসে পৌঁছেছে তাতে এই সরকার আর এক মাস টিকবে কিনা বলা যাচ্ছে না। কারন সরকারের নীতি নির্ধারকদের কথায়ই বুঝাা যাচ্ছে তারা ভেতর থেকে একেবারে ভেঙ্গে পরেছে। পররাস্ট্র মন্ত্রী আবদুল মোমেনের কথায়ও সরকার যে ক্ষমতা হারানোর ভয়ে আতংকগ্রস্ত হয়ে পরেছে তার প্রমান পাওয়া যাচ্ছে। তিনি আরো ভয়ংকর কথা বলেছেন। মোমেন সাহেব বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থাকে ১৯৭৫ সালের আগস্টের সঙ্গে তুলনা করে সবাইকে সতর্ক করেছেন।

মন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর আগে আমরা যে ধরনের অবস্থা দেখেছিলাম, মনে হয় এখনো সেই ধরনের অবস্থা সৃষ্টি করার জন্য কেউ কেউ উঠেপড়ে লেগেছে। মনে হচ্ছে খুব একটা কঠিন সময় আসছে। মঙ্গলবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় শোক দিবস নিয়ে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের আগে দেশে একটা অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। জিনিসপত্রের দাম বাড়ে। একটার পর একটা অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। বহুলোকে বাংলাদেশে আনাগোনা করে। কিসিঞ্জার সাহেবও (সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার) ঢাকা শহরে ঘুরে যান। ১৯৭৫ এবং বর্তমান বাংলাদেশের বিষয়ে তিনি বলেন, আজকের বাংলাদেশের মধ্যে সে ধরনের একটা অস্থিতিশীলতা দেখি।

গিয়াস উদ্দিন বলেন, তার এসব কথা কতোটা ভয়ংকর সেটা বুঝার জন্য খুব বেশি বুদ্ধিমান হওয়ার প্রয়োজন পরে না। কিন্তু আমরা মনে করি দেশে আর কখনোই ওই ধরনের কোনো ঘটনার পূনরাবৃত্তি ঘটবে না। আমাদের কথা খুবই পরিস্কার, আর সেটা হলো দেশে এখন মানুষের কোনো গণতান্ত্রিক অধিকার নেই। তাই মানুষ তাদের সেই অধিকার ফিরে পেতে চায়। বর্তমান সরকারের অধীনে বিগত দুটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন সহ কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হয় নাই। এ দেশের মানুষ তাদের ভোটের অধিকার ফিরে পেতে চায়। দেশবাসী বেশ ভালো করেই জানে বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখে এ দেশে কোনো অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। তাই মানুষ নির্বাচন কালিন কেয়ারটেকার সরকার চায়। তাই সরকার কিভাবে নির্বাচন কালিন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করবে সেই আলোচনা শুরু করলেই সব কিছু পাল্টে যাবে। দেশে কোনো উত্তেজনাই থাকবে না। তখন সবাই নির্বাচনমুখী হবে এবং বিদেশীদেরও কিছু বলার থাকবে না। আর যদি সরকার আবারও সরকার জনগনের ভোটের অধিকার হরন করার চেষ্টা করে তাহলে এ দেশের সর্বস্তরের গণমানুষের তুমুল আন্দোলনে ভেসে যাবে সরকার। আমরা আশা করি সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে।