“বারবার বুকে হাত দিচ্ছিল পুলিশটি ”

354
নারীর শ্লীলতাহানি, দৌড়ে পালালো পুলিশ কনস্টেবল আহাদ

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

বর্তমান সময়ে নারীরা প্রায়ই শ্লীলতাহানির শিকার হচ্ছেন। যারা ঘৃণিত এ অপকর্ম করছে তাদেরকে আইনের হাতে সোপর্দ করে বিচার দাবি করে ভুক্তভোগীরা। কিন্তু সেই আইনের লোকই যখন শ্লীলতাহানি করে তখন সাধারণ মানুষ বিচার চাইবে কার কাছে? এমন প্রশ্ন সাধারণ মানুষের।

ফতুল্লা থানার একটি মামলায় গ্রেফতারকৃত মামুন নামে এক হাজতির স্ত্রীর শ্লীলতাহানি করে নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশ কনস্টেবল আহাদ। পরে ঐ নারীর চিৎকারে মানুষ জড়ো হলে দৌড়ে পালায় পুলিশের ঐ সদস্য।

মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ কোর্ট প্রাঙ্গণে প্রকাশ্য দিবালোকে ঘটে এ ঘটনা। এ সময় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় আদালত পাড়ায়।

এ বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী একজন উকিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। পাঠকদের জন্য স্ট্যাটাসটি হুবুহু তুলে ধরা হলো –

এবার প্রকাশ্য দিবালোকে শ্লীলতাহানির সময় এক নারীর চিৎকারে দৌড়ে পালালো নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশ কনস্টেবল আহাদ। নারায়ণগঞ্জ আদালত পাড়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্য।

ফতুল্লার দেলপাড়া এলাকার এক হাজতি আসামী মামুনের ফতুল্লা থানার মামলা নং ৫১(৬)২১ এর বিচারপ্রার্থী স্বজনেরা মামলার শুনানির তারিখ থাকায় আদালতে আসামিকে একনজর দেখতে গারদ খানায় এসেছিলেন মঙ্গলবার সকালে।

সকাল ১১ টার দিকে গারদখানা থেকে পুলিশি পাহাড়ায় আাসামিকে নেয়া হচ্ছিল নারায়ণগঞ্জ জেলা জজ আদালতের দ্বিতীয় তলায়।
পুলিশি প্রহরায় আসামির সাথে সাথে হাঁটতে থাকেন নারী স্বজনেরা। সুযোগ পেয়ে পুলিশ কনস্টেবল আহাদ নারী স্বজন জান্নাতের বুকে প্রকাশ্যেই বারংবার হাত চালিয়ে শ্লীলতাহানি করেন।

উপায়ন্তর না দেখে উক্ত নারী বিশেষ পিপি’র অফিসের সামনে আলোচনারত আইনজীবী মাসুদ উর রউফ, সুমন মিয়া, মৃনাল কান্তি বাপ্পি ও বাদল পোদ্দারের সামনে এসে জোরে চিৎকার দিয়ে পুলিশ কতৃক শ্লীলতাহানির অভিযোগ দিতে দিতে বলেন আমরা কি মানুষ না? কয়েকবার আমার বুকে হাত দিলো বলে কেদে দেন উক্ত অসহায় নারী।

এই সময় অভিযুক্ত কনস্টেবল আহাদ সকলের সামনেই দৌড়ে পালিয়ে যান। উক্ত নারী এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ মাননীয় পুলিশ সুপার বরাবর দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল আহাদের দৃস্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করেছেন ভুক্তভোগী ও তাদের স্বজনরা।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী নারীর সাথে যোগাযোগ করা হলে ঐ নারীর বোন জানান, কোর্টে সবার সামনেই ঘটেছে এ ঘটনা। অনেকক্ষণ ধরে আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করছিলো ঐ পুলিশ। বাধা দিলে আমার বোনের স্বামীকে জেলের মধ্যে মারধর করবে বলে হুমকি দেয়। উপায়ন্তর না পেয়ে আমি চিৎকার দিলে সে ওখান থেকে দৌড়ে পালায়। এ ঘটনা দেখেছে কোর্টে উপস্থিত শত শত মানুষ।

তিনি আরও বলেন, কোর্টে সিসি ক্যামেরা আছে নিশ্চয়ই তা দেখলেই বোঝা যাবে সে আমার বোনের সাথে কি করেছে? কোন দেশে আছি আমরা, আমরা কি মানুষ না? আমরা ঐ কনস্টেবলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।

এদিকে, কোর্ট পুলিশের ইন্সপেক্টর আসাদুজ্জামান বলেন, কেউ এখনো কোনো অভিযোগ করেনি। তবে বিষয়টি শুনে আমি ঐ নারীকে ফোন করে আসতে বলেছি। কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা আসবে। তারা আসলে বিস্তারিত শুনে, অভিযোগের ভিত্তিতে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।