একের পর এক গায়েবী মামলার অভিযোগ...

পুলিশকে অভিশাপ দিচ্ছে বিএনপির নেতাকর্মীরা

120
পুলিশকে অভিশাপ দিচ্ছে বিএনপির নেতাকর্মীরা

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

নারায়ণগঞ্জের বিএনপির নেতারা বলেন, নারায়ণগঞ্জের পুলিশ আমাদের প্রতি যে অন্যায় আচরণ করছে তার বিচার খুব শিগগিরই মহান আল্লাহপাক করবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি। কোনো রকম নাশকতা তো দূরের কথা, কোনো মিছিল বা জনসভাও হচ্ছে না তারপরেও বানিয়ে বানিয়ে গায়েবী মামলা দিচ্ছে পুলিশ। এতে আমাদের পরিবার পরিজন স্ত্রী-সন্তানরা কষ্ট পাচ্ছে। ফলে নিশ্চয়ই মহান আল্লাহপাক এই অন্যায় আচরনের কঠোর বিচার করবেন এবং খুব শিগগিরই এই জুলুমবাজ সরকারের পতন ঘটবে।

সম্প্রতি, ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে একের পর এই মামলা মামলা দেওয়ার কারনে তারা এমন মন্তব্য করেন।

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন এলাকায় জেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াস উদ্দিন পন্থীদের টার্গেট করে একটার পর একটা গায়েবী মামলা দেয়া অব্যাহত রেখেছে পুলিশ। ফতুল্লা থানা এবং সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ক্রমাগত ভাবে একটার পর একটা মামলা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন এই দুই থানার বিএনপি নেতৃবৃন্দ।

গতকালও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারন সম্পাদক ইকবাল হোসেনকে ১ নম্বর আসামী করে আরো একটি মামলা দেয়া হয়েছে। এর আগে ফতুল্লা থানায়ও তার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। গতকাল ইকবাল হোসেন ফোন করে এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি মনে করেন, স্থানীয় সংসদ সদস্যের নির্দেশনায় পুলিশ এসব মামলা দিয়ে তাদেরকে চরম ভাবে হয়রানী করছে। তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন বিষিয়ে তুলেছে এবং তাদের মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন করা হচ্ছে।

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর এবং থানা বিএনপির সাধারন সম্পাদক ইকবাল হোসেন আরো বলেন, আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে লিখুন। পুলিশ একেবারে বায়বীয় বানোয়াট ঘটনা বানিয়ে এসব মামলা দায়ের করছে। যদি এমন কিছু ঘটতো তাহলেতো নারায়নগঞ্জের সাংবাদিকরা চুপ করে বসে থাকতো না। তারা লিখতো। মানুষ জানতো। আমাদের বিরুদ্ধে একটার পর একটা নাশকতার মামলা দেয়া হচ্ছে। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি পুলিশ ঘটনার যে স্থান, সময় এবং ঘটনার বিবরন দিয়েছে তা আপনারা তদন্ত করে দেখুন। এমন কোনো ঘটনা ঘটেছে কিনা? তাই আমরা মনে করি এই অন্যায়ের বিচার খুব শিগগিরই মহান আল্লাহপাক করবেন এবং যে সকল পুলিশ কর্মকর্তা অতি উৎসাহী হয়ে এসব অন্যায় অত্যাচার করে যাচ্ছেন তারা এবং তাদের পরিবার কঠিন বিচারের মুখোমুখি হবেন।

তিনি বলেন, এমন একটা সময় আসবে যখন মহান আল্লাহপাক এই পৃথিবীটাকে তাদের বসবাসের জন্য দূর্বিসহ করে তুলবে। এসব মিথ্যা মামলা দায়ের করার কঠোর বিচার হবে। আমাদেরকে যেভাবে বিনা অপরাধে ভোগাচ্ছে তেমনি পরিবার পরিজন সহ তাদের উপরও অমানিশার অন্ধকার নেমে আসবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

এদিকে, এই মামলার অপর আসামী ফতুল্লা থানা বিএনপির সহ-সভাপতি হাজী মোহাম্মদ শহীদ উল্লাহ বলেন, আমাদেরকে টার্গেট করে একের পর এক মামলা দেওয়া হচ্ছে। মামলায় আমাদের বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ আনা হয়েছে এমন ডাহা মিথ্যা অভিযোগ একজন মানুষ হয়ে অন্য একজন মানুষের বিরুদ্ধে কিভাবে করে বুঝে আসেনা। গতকাল সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় এবং এর আগে ফতুল্লা থানায় যে সকল মামলা দেওয়া হয়েছে আপনারা খোঁজ নিয়ে দেখুন কোথাও এমন কোনো ঘটনা ঘটেছে কিনা? তবে আমার মনে হয় পুলিশ কর্মকর্তারা ইচ্ছাকৃতভাবে নিজেদের বিপদ ডেকে আনছেন। কারণ, ন্যাচারাল পানিশম্যান্ট বা আল্লাহর বিচার বলে একটা কথা আছে। যে যেমন কাজ করছে তার তেমন বিচার কিন্তু হচ্ছে।

তিনি বলেন, টার্গেট করে আমাদের বিরুদ্ধে একটার পর একট মামলা দেওয়া হচ্ছে। একটি মামলায় জামিন না পেতেই আরো একটি মামলা দেওয়া হচ্ছে। একটি অবৈধ সরকার দেশে চরম লুটপাটের রাজত্ব জারি করেছে। লাখ লাখ কোটি টাকা বিদেশ থেকে ঋন করে সেই টাকা উন্নয়নের নামে লুটপাট করেছে এবং বিদেশে পাচার করেছে। এসব খবর এখন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার করা হচ্ছে। ব্যবসার নামে একটি ‘অলিগার্ক’ শ্রেনী সৃষ্টি করে এ দেশের গরীব দু:খী মানুষের পেটে লাথি মারছে। সেই সরকারকে বাঁচাতে যে সকল পুলিশ কর্মকর্তা আমাদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দিয়ে চরম ভাবে হয়রানী করছে তাদের বিচার খুব শিগগিরই এ দেশের মাটিতেই হবে ইনশাআল্লাহ। তারা বুঝতে পারছে না মহান আল্লাহপাক তাদের এমন ভাবে পাকরাও করার ব্যাবস্থা করেছেন যে তারা পালানোরও কোনো পথ পাবে না। কারন এরই মাঝে মার্কিন যুক্তরাস্ট্র সহ গণতান্ত্রিক বিশ্ব তাদেরকে নজরধারীতে রেখেছে। আর এটাই যে আল্লাহর বিচার সেটা তারা উপলব্দি করতে পারছে না।

হাজী মোহাম্মদ শহীদ উল্লাহ আরো বলেন, আমরা কোনো রকম নাশকতাতো দূরের কথা জীবনে কাউকে একটি গালি দিয়েও কথা বলিনি। কাউকে অযথা কখনো ধমক দেইনি। অথচ আমাদের নামে একটার পর একটা নাশকতার মামলা দেওয়া হচ্ছে। তবে, আমরা বিশ্বাস করি খুব শিগগগিরই এইসব জুলুমের শেষ হবে ইনশাআল্লাহ। আমাদের বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা মামলা দিয়ে তারা যে অপরাধ করছে তাদের বিচার খুবই নিকটে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

প্রসঙ্গত, গতকাল সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় যে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে সেই মামলায় সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লার উল্লেখযোগ্য আরো যাদেরকে আসামী করা হয়েছে তারা হলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নেতা মাসুকুল ইসলাম রাজিব, লুৎফর রহমান খোকা, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি, বিএনপি নেতা মোস্তফা কামাল এবং মোহাম্মদ আলী প্রমুখ। নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, এভাবে কোনো কারন ছাড়াই তাদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দায়েরের বিষয়টি তারা বিএনপির কেন্দ্রে জানিয়েছেন এবং কেন্দ্র থেকে বিশ্বের বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এবং দূতাবাসগুলিকে জানানো হচ্ছে।