স্টাফ রিপোর্টার :
নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় দলীয় কার্যক্রম চালাতে গিয়ে জমায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা হামলার শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন জেলা ও মহানগর জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা। তারা জানিয়েছেন গত কয়েক মাস ধরে জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় দলীয় কর্মসূচি পালন কালে বিএনপির নেতাকর্মীরা তাদের উপর হামলা করছে। এরই মাঝে রুপগঞ্জ, আড়াইহাজার, সোনারগাঁ এবং বন্দর থানা এলাকায়ও দলটির নেতাকর্মীরা হামলার শিকার হয়েছেন। এসব ঘটনা তাৎক্ষনিক ভাবে অভিযোগ আকারে পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে পুলিশ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সমঝোতার ঘটনাও ঘটেছে। তবে উদ্বেগজনক ভাবে এই জেলায় দলটির নেতাকর্মীদের উপর হামলার ঘটনা বাড়ছে বলে জানিয়েছে জামায়াতের নেতারা কর্মীরা।
জামায়াতের দলীয় সূত্র জানিয়েছে, রুপগঞ্জের মুরাপাড়া এবং তারৈল হিন্দুপাড়া মন্দিরে পৃথক দিনে পৃথক দুটি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। সেপ্টেম্বর মাসের ১৪ ও ২৭ তারিখে এই দুটি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই দুটি ঘটনায় বেলাল, মুজাহিদ, মোহাম্মদ বাদশা এবং আবদুস সালাম সহ আরো অনেকে আহত হয়েছেন। এই দুটি ঘটনায় স্থানীয় থানায় অভিযোগ এবং সাধারন ডায়েরী করা হয়েছে।
এছাড়া গত জুন মাস থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত আড়াইহাজার থানায় তিনটি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব হামলার ঘটনায় জামায়াতে ইসলামীর ২০/২৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন এবং প্রতিটি ঘটনা তাৎক্ষনিক ভাবে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আড়াইহাজারে খোদ দলটির সংসদ সদস্য প্রার্থী ইলিয়াস মোল্লার গণসংযোগে আক্রমন করা হয়েছে। বিগত ১৩ জুন মাহমুদপুর ইউনিয়নের গহরদি এলাকায় এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাসুম শিকারির নেতৃত্বে এই হামলা করা হয়েছে। হামলার ঘটনার পর স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ করা হলে থানা কর্তৃপক্ষ অভিযোগ গ্রহন না করে এডিশনাল এসপি মেহেদী হাসান উভয় পক্ষকে থানায় ঢেকে আপোষ মিমাংসা করে দেন। এ সময় জামায়াতের কোনো কর্মসূচিতে বিএনপির নেতাকর্মীরা কোনো রকম বাধা প্রদান করবে না বলে লিখিত দেন।
ফতেপুর ইউনিয়নে বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে জামায়াত প্রার্থী অধ্যাপক ইলিয়াস মোল্লার উঠকে হামলা করে চেয়ার ভাংচুর করা হয় এবং চেয়ার লুটপাট করা হয়। এই ঘটনায় থানায় অভিযোগ করা হলে আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ৫০টি চেয়ার উদ্ধার করে সেগুলো ফেরৎ দেন।
এছাড়া গত ৩১ অক্টোবর খাককান্দা ইউনিয়নের মোহনপুর গ্রামে যুবদল নেতা আবদুল কাদের জিলানির নেতৃত্বে হামলা করা হয়। এতে জামায়াতের দুইজন কর্মী রক্তাক্ত জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। আরো ৭/৮ জন গুরুত্বর আহত হয়। এই ঘটনায়ও আড়াইহাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।
অপরদিকে গত ২৩ অক্টোবর একই দিনে সোনারগাঁ থানায় পৃথক দুটি হামলার ঘটনা ঘটেছে। ওই দিন সকালে নোয়াগাঁও ইউনিয়নের চরকামালদি গ্রামে এবং সন্ধ্যায় বিএনপি নেতা মুশফিকুর রহমান, জহিরুল ইসলাম এবং রুপচান মিয়ার নেতৃত্বে সনমানতি ইউনিয়নের দড়িকান্দি বাসস্ট্যান্ডে জামায়াত নেতাকর্মীদের উপর হামলা, দোকান ভাংচুর এবং অপহরনের চেষ্ঠার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় জামায়াত নেতাকর্মীরা রক্তাক্ত জখম হয় এবং স্থানীয় থানায় অভিযোগ করা হয়। তবে অধিকাংশ ঘটনায় জামায়াত নেতাকর্মীরা বেশ সহনশীলতার পরিচয় দেন বলে দলটির নেতারা দাবি করেন।
এদিকে এসব বিষয়ে জানতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমির ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে জামায়াতের মনোনিত প্রার্থী ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা আবদুল জব্বারের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় আমাদের দলের নেতাকর্মীদের উপর বিএনপির নেতাকর্মীরা হামলা করছেন। আমরা দলীয় ভাবে সকল প্রকারে বিরোধ ও সংঘাত এড়িয়ে চলার চেষ্ঠা করছি। আমরা আমাদের দলের নেতার্কীদেরকে ধৈর্য্য ধরার নির্দেশ দিয়েছি। তাই হামলাগুলি হচ্ছে একতরফা। তবে আমরা আশা করবো বিএনপির নেতাকর্মীরা গণতান্ত্রিক এবং সহনশীল আচরন করবেন। জনগনের সামনে গিয়ে আমরা আমাদের কথা বলবো তারা তাদের কথা বলবেন। জনগন যাকে খুশী তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন। তাই ভোট চাইতে গিয়ে আমাদের মাঝে সংঘাত সংঘর্ষ করার কিছু নেই বলেই আমরা মনে করি। ##




