স্টাফ রিপোর্টার :
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপির প্রাথী ঠিক করার জন্য দফায় দফায় স্থায়ী কমিটির সদস্য আলোচনা করছেন। বৃহস্পতিবার রাতে স্থায়ী কমিটির যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে সেই বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনায় পরিস্কার করে উঠে এসেছে এই আসনে মনির হোসাইন কাসেমীকে মনোনয়ন দিলে তিনি জয়ী হতে পারবেন না। তিন কারনে বিএনপির ঘাটি হিসাবে পরিচিত এই আসনটি মনির হোসাইন কাসেমীকে দেয়া মোটেও ঠিক হবে না। কারনগুলি হলো, ১) একজন প্রার্থী হিসাবে তার কোনো ব্যাক্তিগত জনপ্রিয়তা নেই। ২) নয়া নির্বাচনী বিধি মোতাবেক তিনি ধানের শীষ প্রতিক পাচ্ছেন না। ৩) বিএনপির তৃনমূল নেতাকর্মীরা তাকে চাইছেন না।
এই তিনটি কারন বিশ্লেষন করতে গিয়ে জানা যায় মনির হোসাইন কাসেমীর ব্যাক্তিগত জনপ্রিয়তা প্রায় শুন্যের কোঠায়। কারন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের রাজনীতিতে তিনি কখনো মাঠে ছিলেন না। বরং এর আগে তিনি ধানের শীষ প্রতিক পাওয়ার পরেও গত ছয় বছর তাকে আর ফতুল্লায় দেখা যায়নি। যার ফলে তার কোনো জনপ্রিয়তা গড়ে উঠেনি। তাই একজন নেতা বা ব্যাক্তি হিসাবে এখানে তার তেমন কোনো অনুসারী নেই। তাছাড়া তিনি ইসলামী ভোটেও তেমন কোনো সারা ফেলতে পারছেন না। কারন বড় ইসলামী দল জামায়াত এবং চরমোনাই রয়েছেন তার বিপক্ষে। ইসলামী ভোটগুলি তাদের বাক্সেই যাবে। কাসেমীর বাক্সে পড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। জনসমর্থন শুন্য কাসেমীকে বিএনপির সমর্থন দিলেও কোনো লাভ হবে না। এখানে মোহাম্মদ আলী অথবা শাহআলম স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেই তিনি হেরে যাবেন। কারন কাসেমীর তুলনায় অনেক বেশি জনপ্রিয়তা রয়েছে এই দুই নেতার। বিশেষ করে শাহআলম এখন জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছেন বলে পরিস্কার আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
তাকে নিয়ে দ্বিতীয় কারনটি বিশ্লেষন করলে দেখা যায় তিনি জোটের মনোনয়ন পেলেও ধানের শীষ প্রতিক পাচ্ছেন না। তাকে ধানের শীষ প্রতিক পেতে হলে বিএনপিতে যোগ দিতে হবে। কিন্তু সেটা সম্ভব নয়, কারন বিএনপি তাকে একজন ইসলামী দলের নেতা হিসাবেই জনগনের সামনে উপস্থাপন করতে চায়। বিএনপি দেখাতে চায় তাদের সাথেও ইসলামী দল আছে। তাই তার দলের সাথে জোট করতে চায় বিএনপি। কিন্তু তিনি যদি বিজয়ী হতে না পারেন তাহলে তাকে জোটে নিয়ে কি লাভ হবে সেটা নিয়ে এখন বেশ জোরালো ভাবেই ভাবছে বিএনপির শীর্ষ মহল। এই আসনে এখন নিজ দল বিএনপি থেকেই প্রার্থী দিতে চায় তারা। ফলে এরই মাঝে ধানের শীষের প্রার্থী হিসাবে আলহাজ¦ মোহাম্মদ শাহআলম এবং মশিউর রহমান রনি রয়েছেন আলোচনায়। কারন খেজুর গাছ প্রতিক নিয়ে যে কাসেমীর মতো ব্যাক্তিগত জনপ্রিয়তাশুন্য একজন প্রার্থী জিততে পারবেন না সেটা এখন দিবালোকের মতো পরিস্কার।
তিনি মনোনয়ন না পাওয়ার তৃতীয় কারনটি বিশ্লেষন করে জানা যায় বিএনপির তৃনমূল নেতাকর্মীরা অন্য দলের প্রার্থী চায় না। তারা চায় নিজ দলের প্রার্থী। এরই মাঝে তারা নানা ভাবে সোস্যাল মিডিয়ায় পোষ্ট দিয়ে তাদের এই মনোনভাব প্রকাশ করেছেন যা কিনা দলটির শীর্ষ নেতৃত্বের নজরে এসেছে। বিএনপির তৃনমূল নেতাকর্মীদের পরিস্কার বক্তব্য হলো বহুদিন পর এবার ভোট দেয়া সুযোগ এসেছে আর এই আসনটি হলো বিএনপির ঘাটি। তাই এই আসনে বিএনপির কাউকে মনোনয়ন দিলে তিনি ধানের শীষ প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করবেন। তখন তারা নিজেদের প্রিয় দলের প্রিয় মার্কা ধানের শীষের জন্য মন খুলে ঝাপিয়ে পরবেন। আর এটা বলতে তারা কোনো রাকঢাক রাখছেন না। যার ফলে মনির হোসাইন কাসেমীকে মনোনয়ন দিলে বিএনপির নেতাকর্মীরা তার পক্ষ্যে জোরালো ভাবে মাঠে নামবেন না। বরং তখন এই আসনে জামায়াত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী জিতে যাবার সম্ভাবনা প্রকট হবে।
ফলে এই তিন কারনে এখন তাকে বাদ দিয়ে বিএনপি নিজ দলের প্রার্থী দেয়ার কথা ভাবছেন বলে দলটির কেন্দ্রীয় সূত্রে জানা গেছে। আর এই ক্ষেত্রে বেশ জোরালো ভাবেই আলোচনায় রয়েছেন আলহাজ¦ মোহাম্মদ শাহআলম এবং মশিউর রহমান রনি।




