গুরুত্বপূর্ণ দুই আসনে নানা চ্যালেঞ্জে বিএনপির মনোনীত দুই প্রার্থী

101

স্টাফ রিপোর্টার :
রাজধানীর পাশের অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি জেলা হলো নারায়ণগঞ্জ জেলা। আর এই জেলার হৃদপিন্ড হলো নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন এবং নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন এলাকা। এই দুটি আসন এলাকাকে দেশের হৃদপিন্ড বললেও বেশি বলা হবেনা বলে মনে করেন নারায়ণগঞ্জের সচেতন মহলের অনেকে। কারন বাংলাদেশের ব্যবসা বানিজ্যের প্রধান কেন্দ্র এই নারায়ণগঞ্জ। তাই নারায়ণগঞ্জের আরেক নাম প্রাচ্যের ডান্ডি। আর এই হৃদপিন্ডে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন এডভোকেট আবুল কালাম এবং মনির হোসাইন কাসেমী। ফলে তাদের সামনে এখন বিরাট চ্যালেঞ্জ। তাদের প্রথম চ্যালেঞ্জ হলো নির্বাচনে বিজয়ী হওয়া এবং দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হলো নিজ নিজ আসনের উন্নয়ন। নারায়ণগঞ্জের পর্যবেক্ষক মহলের মতে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে এডভোকেট আবুল কালাম হয়তো খুব সহজেই জিতে যাবেন। কারন আসনটিতে অতীতে তিনি তিনবার এমপি হয়েছেন এবং অতীতে যে পরিবারগুলো তাকে ভোট দিয়েছে সেই পরিবারগুলোর সদস্যরা এবারও তাকে ভোট দেবে। কিন্তু সমস্যা হলো অতীতে তিনি বার বার এমপি হয়েও উল্লেখ করার মতো কোনো উন্নয়ন করতে পারেননি। সমালোচকরা এখন তাকে একজন ব্যার্থ সাবেক এমপি হিসাবে আখ্যায়িত করছেন। আর এখনতো তিনি বয়সের ভার ন্যূজ এবং শারীরিক ভাবে খুবই অসুস্থ্য। বিগত ফ্যাসিষ্ট সরকারের আমলে তাকে বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করাতে হয়েছে। তাই জীবনের এই পড়ন্ত বেলায় তিনি কতোখানি কি করতে পারবেন সেই প্রশ্ন রয়েছে আসনটির ভোটারদের মনে। তবে তার বিপরিতে তার শক্ত কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় তার জয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন এলাকায় যে পরিমান সমস্যার জঞ্জাল জমে আছে এগুলোর সমাধান তার পক্ষে কতোখানি সম্ভব হবে সেই প্রশ্ন রয়েছে। তাই আসন এলাকাটির উন্নয়ন এবং শান্তিশৃংখলা ফিরানো তার পক্ষে সম্ভব হবে না বলেই অনেকে মনে করেন। তিনি হয়তো সহজে বিজয়ী হবেন কিন্তু সমস্যাগুলো সমাধান করার তার পক্ষে মোটেও সহজ হবে না বলেই সচেতন মহল মনে করেন।
অপরদিকে মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী বিএনপির সমর্থন পাওয়ার পর থেকে তাকে বেশ উচ্ছসিত মনে হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো এবারের এই নির্বাচনে জয়ী হওয়াটাই এখন তার জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে তিনি নির্বাচিত হলে ফতুল্লার স্থানীয় বাসিন্দা হিসাবে হয়তো এলাকার সমস্যাগুলো সমাধানে আন্তরিক ভাবে চেষ্টা করবেন। কিন্তু তার আগেতো তাকে নির্বাচনে জিততে হবে। এই মুহুর্তে গোটা নারায়ণগঞ্জ জেলায় সবচেয়ে হেভীওয়েট তিনজন প্রার্থী এখন তাকে চ্যালেঞ্জ করে নির্বাচনের মাঠে অবতীর্ন হয়েছেন। এরা হলেন সাবেক এমপি আলহাজ¦ মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিন, বিএনপি নেতা ও বিশিষ্ট শিল্পপতি আলহাজ¦ শাহআলম এবং অপর সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী। এই তিন জনই নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন এলাকায় বিশেষ পরিচিত এবং প্রভাবশালী। এদের মাঝে আলহাজ¦ মোহাম্মদ শাহআলম বেশ জোরালো ভাবেই মাঠে নেমেছেন এবং ভোটারদের সারা পাচ্ছেন বলে তার সমর্থকরা জানিয়েছেন। এছাড়া আসনটিতে এবার জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী মাওলানা আবদুল জব্বারও বিরাট ফ্যাক্টর। তাই ফতুল্লার মতো শিল্পসমৃদ্ধ একটি এলাকায় আরো তিন/চার জন হেভীওয়েট প্রার্থীর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে তিনি জিততে পারবেন কিনা সেই প্রশ্ন রয়েছে। তারপর রয়েছে উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ।
তাই দুটি আসনে এডভোকেট আবুল কালাম এবং মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী দুই ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পরেছেন। এডভোকেট আবুল কালাম নির্বাচনে জিতলেও তাকে উন্নয়নের পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ শহরকে যানজট মুক্ত করা, ফুটপাতগুলো হকারমুক্ত করা এবং শহরের সাথে বন্দরের যাতায়ত ব্যবস্থা আরো সহজ করার মতো চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এছাড়া চাঁদাবাজী ও মাদক ব্যবসা বন্ধ করা সহ সন্ত্রাস দমন আরো একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
বিপরিতে মুফতি কাসেমীকে প্রথমে হেভীওয়েট কয়েকজন প্রার্থীকে হারিয়ে জিততে হবে। তারপর জয়ী হলে তাকে এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসন, যানজট নিরসন এবং সন্ত্রাস দমনের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হবে।
তাই তারা এসব চ্যালেঞ্জ কিভাবে মোকাবেলা করেন সেটাই এখন দেখার অপেক্ষায় রয়েছে দুটি আসনের জনগন। ##