এই লুটেরা সরকারকে বিদায় করতে হবে – মির্জা আব্বাস

31
এই লুটেরা সরকারকে বিদায় করতে হবে - মির্জা আব্বাস

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, আমি আপনাদের অনুরোধ করবো, যদি বিএনপি করেন, যদি দেশকে ভালোবাসেন, দেশের মানুষকে ভালোবাসেন তাহলে আগামীতে আপনাদের নিজেদের মধ্যে ঐক্যটা ঠিক রেখে আগামীতে আমরা শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করবো। নিজেদের বিরুদ্ধে নয়, একথাটা মাথায় রাখতে হবে।

উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অধিনস্থ আদালত এবং সরকারের অবজ্ঞা, গায়েবী মামলায় নির্বিচারে গ্রেফতার, মিথ্যা মামলা ও পুলিশি হয়রানী, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, বিদ্যুতের লোড শেডিং, আওয়ামী সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতির প্রতিবাদে এবং ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবীতে আয়োজিত জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।

গতকাল শুক্রবার (১৯ মে) বিকেলে কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির উদ্যোগের চাষাড়ায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এই জনসমাবেশের আয়োজন করা হয়।

তিনি বলেন, আজকে এই দেশের যে অবস্থা, এই দেশকে রক্ষা করার জন্য একটা মাত্র কাজ আমাদের সামনে আছে। সেটা হলো এই লুটেরা সরকারকে বিদায় করতে হবে, এই লুটেরা সরকারকে রেখে দেশের কোনো উন্নয়ন কোনোদিন সম্ভব না। মানুষের পেটে ক্ষুধা রেখে ২টা ব্রীজ করলেই দেশের উন্নয়ন হয় না। মানুষের পেটে যদি ভাত না থাকে উন্নয়ন দিয়ে কি হবে? আগে পেটে ভাত, পরে উন্নয়ন। তারপরও উন্নয়নের প্রয়োজন আছে, কিন্তু সেই উন্নয়ন করতে গিয়ে যদি আপনার পকেট ভারী করে ফেলেন, দেশের উন্নয়নের চেয়ে নিজের পকেটের বেশী উন্নয়ন হয়, আত্মীয় স্বজনের উন্নয়ন হয়, টাকা সব খেয়ে ফেলেন, তাহলে সেই উন্নয়ন আমাদের প্রয়োজন হয়।

তিনি আরও বলেন, একটা রাস্তা বা ব্রীজ করতে পাশের দেশে লাগে ৯ হাজার ডলার, কিন্তু আমাদের দেশে লাগে ৩০ হাজার ডলার। এটা কি ফাইজলামি নাকি, এটা মগের মুল্লুক, লুটপাট করে খেয়ে ফেলছে সব। আজকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ একে অপরের বিরুদ্ধে লেগে আছে, এ বলে তুই বেশী খাইসোস, ও বলে তুই বেশী খাইসোস।

সরকারী দল ও ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এখনো সময় আছে দেশের মানুষের চোখের ভাষা, মুখের ভাষা, দেহের ভাষা বুঝতে চেষ্টা করেন। তা নাহলে পালানোর পথ খুঁজে পাবেন না। ওবায়দুল কাদের সাহেব যা টাকা কামাইসেন তা নিয়ে কিন্তু পালানোর পথ পাবেন না। শুনেন যদি আপোষে যান তো যাইতে পারেন, কিন্তু জোর করে যদি আমরা নামাই তাহলে পালাতে পারবেন না। আমরা না, এই দেশের জনগন আপনাদের বিচারের কাঠগড়ায় তুলবে। যারা গুম-খুন হয়েছে তাদের বাপ-মা, স্বজনরা আপনাদের ছেড়ে কথা বলবে না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, দেশপ্রেমকে বুকে ধারণ করে ৭১ সালে যেভাবে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম, এই দেশকে বাঁচাতে হলে ঠিক সেরকম মনোভাব নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে, আন্দোলন করতে হবে। যারা মুক্তিযুদ্ধে যেতে পারেন নাই তাদের মধ্যে একটি দু:খ আছে, তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, এই সামনে যে আসছে এই লড়াইয়ে মুক্তিযুদ্ধ করতে হবে। নেত্রী বাঁচানোর মুক্তিযুদ্ধ, দেশকে বাঁচানোর মুক্তিযুদ্ধ, নিজেকে বাঁচানোর মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে হবে।

সবশেষে তিনি হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, জাকির খান, মান্নান, টিটু, খোকা, জিকুসহ সকল নেতাকর্মীকে ইনশাআল্লাহ জেল থেকে আমরা মুক্ত করবো, আমরা আর এই সরকারের কাছে মুক্তি চাই না। আমরা নিজেরাই তাদেরকে মুক্ত করবো।

মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খানের সভাপতিত্বে এ জনসমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির আহবায়ক মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন। আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান, বর্তমান সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকন, যুগ্ম আহবায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজীব, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. টিপু, যুগ্ম আহবায়ক এড. জাকির হোসেন, এড. হুমায়ন কবির, মনির হোসেন খান, রিপন, মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক সাগর প্রধান, মোয়াজ্জেম হোসেন মন্টি, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি প্রমুখ।