এই মুহুর্তে দ্রব্যমূল্যই বিএনপির মূল ইস্যু

160
এই মুহুর্তে দ্রব্যমূল্যই বিএনপির মূল ইস্যু

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

নারায়ণগঞ্জ জেলা-মহাগনর বিএনপির এবং অঙ্গ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা মনে করেন, লাগামহীন দ্রব্যমূল্য নিয়ে শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান। কিন্তু নিত্যপন্য এখন সাধারন মানুষের নাগালের বাইরে। মাছ-মাংসের বাজারে যেনো আগুন লেগেছে।
গতকাল বিভিন্ন বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রী হচ্ছে ৭০০ টাকা করে। শাকসবজি আর ফলের দোকানগুলিতেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। একটি মাঝারী মাপের তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। একদিন আগের তুলনায় গতকাল বেগুন আর শশার দাম বেড়েছে তিনগুন। এছাড়া চাল, তেল, চিনি সহ প্রায় সকল পণ্যের দাম আরো অনেক আগে থেকেই বেড়ে গেছে।

তাই দ্রব্যমূল্য এভাবে লাগামহীন ভাবে বাড়ার কারনে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেছেন নারায়ণগঞ্জের বিএনপি নেতারা। তাদের মতে, দেশে উন্নয়নের নামে লুটপাট আর বিরোধী দলগুলিকে দমন করার কাজে ব্যাস্ত থাকার কারনেই সারা দেশে এখন দূর্ভিক্ষের মতো আবস্থা বিরাজ করছে। সারা দেশের মানুষের মাঝে বিরাজ করছে হাহাকার। খাদ্যপণ্য সহ নিত্য প্রয়োজনীয় সকল প্রকারের পণ্যের দাম আরো আগেই সাধারন মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। আর এই সময়ে এসে পরিস্থিতি চরম আকার ধারন করেছে। ফলে বিএনপি দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলন করতে বাধ্য হচ্ছে।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী বলেন, রাতের ভোটের এই সরকার এবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসে উন্নয়নের নামে লুটপাটে ব্যস্ত রয়েছে। খাদ্যের জন্য দেশে হাহাকার বিরাজ করছে। এক কেজি চাল কিনতে মানুষকে ৬০/৬৫ টাকা গুনতে হচ্ছে, এক লিটার সয়াবিন তেল কিনতে হচ্ছে ১৭০/১৮০ টাকা দিয়ে যা কিনা বিএনপির আমলে ছিলো যথাক্রমে ২০ টাকা এবং ৪০/৫০ টাকা। বিএনপির শাসনামলে মাত্র দুইশ থেকে আড়াইশ টাকায় পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল পাওয়া যেতো। এভাবে প্রতিটি পণ্যের মূল্য লাগামহীন ভাবে বেড়েছে। যার ফলে দেশের মধ্যবিত্ত ও নিন্ম আয়ের মানুষের বেঁচে থাকাই দায় হয়ে পরেছে।

আর এসব বিষয়ে সরকারেরও কোনো জবাবদিহিতা নেই। তারা দেশের মানুষের কোনো তোয়াক্কা করে না। কারণ তাদের তো আর জনগনের ভোটের কোনো দরকার পরে না। তাই বিএনপির মতো একটি বড় দল চুপ করে বসে থাকতে পারে না। দ্রব্যমূল্য কমানোর দাবিতে বিএনপি আন্দোলন করছে। আগামী দিনে এই ইস্যুটিই হবে বড় রাজনৈতিক ইস্যু। এই ইস্যুতে আন্দোলন আরো জোরদার হবে বলে আমি মনে করি।

এদিকে এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্র দলের সভাপতি মশিউর রহমান রনি বলেন, টিসিবির ট্রাকের পেছনে সামান্য কম দামে কিছু খাদ্য পণ্য কেনার আমাদের মা বোনদের দৌড়ের দৃশ্যটি নিশ্চয়ই সোস্যাল মিডিয়ায় দেখেছেন। এ সময়ে এসে এর চেয়ে মর্মান্তিক দৃশ্য আর কিইবা হতে পারে। মানুষ কতোটা অসহায় হয়ে পড়লে ক্ষুধার জ্বালায় এভাবে দু মুঠো চাল-ডাল কেনার জন্য ট্রাকের পেছনে দৌড়ায়? এই দৃশ্যটিই কি পরিস্কার বলে দেয় না যে, দেশে এখন কি অবস্থা বিরাজ করছে?

তিনি আরও বলেন, বর্তমান এই ফ্যাসিস্ট সরকারের দূর্ণীতি লুটপাটের কারনে দেশের জনগনের অর্থনৈতিক অবস্থা এখন একেবারে তলানীতে গিয়ে ঠেকেছে। কিছু লোক হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হচ্ছে। আর বিপরীতে দেশের সর্বস্তরের সাধারন মানুষ খাদ্যের অভাবে হাহাকার করছে। তাই আমরা মনে করি দেশকে এই লুটেরাদের হাত থেকে বাঁচাতে কঠোর আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। দেশের সর্বস্তরের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এই ফ্যাসিস্ট ও লুটেরা সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। বিএনপি এখন সেই পথেই হাটছে বলে আমরা মনে করি। আগামী দিনে তীব্র আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে বিদায় করাই হতে পারে দেশের মানুষের মুক্তির একমাত্র পথ।