বারো ঘন্টায় ১৪৬ রোগী, না.গঞ্জে ডায়রিয়া পরিস্থিতি ভয়াবহ

76

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ :

নারায়ণগঞ্জ শহর এবং আশপাশের এলাকায় ডায়রিয়া পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারন করেছে। নারায়ণগঞ্জের হাসপাতালগুলিতে প্রতি মিনিটে মিনিটে ডায়রিয়া রোগী আসছে বলে জানা গেছে। ফলে গুরুতর অসুস্থ্য বেশির ভাগ রোগীকেই রাজধানীর মহাখালী হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।

গতকাল নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে কোনো সিট খালি নেই। একেবারে এক মাসের দুধের শিশু থেকে শুরু করে আশি বছরের বৃদ্ধ পর্যন্ত সকল বয়সের মানুষ হাসপাতালে এসে ভর্তি হচ্ছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের জরুরী বিভাগে এবং ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টা থেকে গতকাল ভোর ছয়টা পর্যন্ত মাত্র বারো ঘন্টায় ১৪৬ জন ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। তবে ডায়রিয়া ওয়ার্ডের সিট সংখ্যা একেবারেই সীমিত হওয়ায় এবং মাত্র ষোলটি সিট থাকায় এসব রোগীকে দ্রুত চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বেশির ভাগ রোগীকেই এক ঘন্টা সিটে রেখে স্যালাইনসহ প্রায়োজনীয় ইনজেকশান পুশ করে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। আর এভাবে অধিক সংখ্যক রোগীকে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হচ্ছে বলে কর্তব্যরত ডাক্তার জানান।

এছাড়া যে সকল রোগীর অবস্থা বেশ খারাপ বলে মনে করা হয়ে তাদেরকে মহাখালিতে রেফার্ড করা হয়। গতকাল সরেজমিন ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের এই ডায়রিয়া ওয়ার্ড পরিদর্শন করে দেখা গেছে কর্তব্যরত নার্সরা বেশ ব্যস্ততার সাথে রোগীদের সেবা দিচ্ছেন। জরুরী বিভাগের ডাক্তার রোগী দেখে ব্যবস্থা পত্র দেয়ার পর ডায়রিয়া ওয়ার্ডের নার্সরাই বাকি সব কিছু সামাল দিচ্ছেন। তাই বর্তমানে এই হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীদের জন্য আরো কিছু সুবিধা বাড়ানো জরুরী বলে মনে করেন সেখানে আসা রোগীদের অভিভাবকরা।

এদিকে গত প্রায় এক মাস ধরেই নারায়ণগঞ্জের সর্বত্র ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা আশংকাজনকভাবে বেড়ে গেছে বলে জানা গেছে। অনেক রোগীই হাসপাতালে না গিয়ে পাড়া মহল্লার ফার্মেসীতে ফার্মাসিস্টদের দেখাচ্ছেন। ফলে অনেকেই স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য হয়ে উঠছেন। তবে ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের ডাক্তাররা জানিয়েছেন এখন সারা নারায়ণগঞ্জেই ডায়রিয়ার প্রার্দূভাব চলছে। তাই বাড়িতে কেউ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে ভয় না পেয়ে ওরস্যালাইন ও তরল খাবার বেশি বেশি খেতে হবে। পানি ফুটিয়ে পান করতে হবে। এ সময় স্যালাইনের পাশাপাশি ডাবের পানি পান করা যেতে পারে। সঙ্গে বিশুদ্ধ খাবার বেশি বেশি খেতে হবে। রুটি, কলা ও চিড়া ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদেরকে সুস্থ্য হয়ে উঠতে সহায়তা করে বলেও তারা জানান।

তবে রোগী যাতে পানি শুন্যতায় না ভুগেন সেদিকেই সবচেয়ে বেশি খেয়াল রাখতে হবে। পাতলা পায়খানার সাথে বমি থাকলে নিকটস্থ হাসপাতালে অথবা মহাখালি ডায়রিয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া একান্ত কর্তব্য বলে তারা মনে করেন। এ সময় প্রতিটি মানুষকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকা এবং ফুটানো পানি বা মিনারেল ওয়াটার পান করা জরুরী বলে তারা মনে করেন।