না.গঞ্জে বেড়েই চলেছে কিশোর গ্যাং ও সন্ত্রাসী গ্রুপগুলির দৌরাত্ব

278
না.গঞ্জে বেড়েই চলেছে কিশোর গ্যাং ও সন্ত্রাসী গ্রুপগুলির দৌড়াত্ব

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

নারায়ণগঞ্জে বেড়েই চলেছে কিশোর গ্যাং আর রাজনৈতিক সন্ত্রাসীদের অপতৎপরতা। এসব সন্ত্রাসীদের কেউ শেল্টার দিক বা না দিক, তারা বিভিন্ন পর্যায়ের প্রভাবশালী রাজনীতিবীদদের নাম ভাঙ্গিয়ে নানা রকম সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে বলে জানান বিভিন্ন সময়ে হামলার শিকার ভুক্তভোগী সাধারন মানুষ।

ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ জানান, এসব সন্ত্রাসীরা চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা এবং ঝুট সন্ত্রাস সহ নানা রকম সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে এবং এদের প্রতিটি গ্রুপই কোনো না কোনো ভাইয়ের নাম ব্যবহার করে এসব অপরাধ করে যাচ্ছে। তবে এসব সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে পুলিশ প্রশাসন তেমন কোনো গুরুত্ব দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

ফলে নারায়ণগঞ্জের সাধারন মানুষের মতে, পুলিশের গাফিলতির কারণেই নারায়ণগঞ্জে আজকাল বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কিশোর গ্যাং সহ বিভিন্ন স্তরের সন্ত্রাসীরা। আর এ কারণেই নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মাহবুবুর রহমান মাসুমের বাড়িতে বোমা হামলার পরে দীর্ঘ সময় পার হলেও এখনো গ্রেফতার হয়নি হামলাকারী। গত রবিবার নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক শরীফ উদ্দিন সবুজের পুত্র অনন্তকে হত্যার উদ্দেশ্যে ছুড়িকাহত করেছে কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা। আহত অনন্ত’র পিঠে আঠারোটি সেলাই দিতে হয়েছে।

জানা যায়, দশম শ্রেনীর ছাত্র অনন্ত অত্যন্ত নিরীহ একটি ছেলে। এই ঘটনায় তিনজন গ্রেফতারও হয়েছে। শুধু এসব ঘটনা নয়, নারায়ণগঞ্জে এখন খুনের ঘটনাও বেড়েছে আশংকাজনক ভাবে।

সম্প্রতি বক্তাবলীতে আলমগীর নামক এক যুবককে নির্মম ভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তার হাত পা ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে এবং চোখ উপরে ফেলা হয়েছে বলেও অভিযোগ স্বজনদের। এই ঘটনায় পরে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। এভাবে বিভিন্ন এলাকায় নানা রকম সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ঘটেই চলেছে।

এদিকে এ বিষয়ে কথা হয় ফতুল্লা থানার পশ্চিম ইসদাইর এলাকার সমাজ সেবক জহির উদ্দিনের সাথে। তিনি বলেন, প্রতিটি পাড়া মহল্লায় সন্ত্রাসীরা এখন শক্তিশালী হচ্ছে। এই শহরে রাজনৈতিক শেল্টারে সন্ত্রাসের বিষয়টি বেশ পুরোনো। তারপরও বর্তমানে ইসদাইর, মাসদাইর, জামতলা, চাষাড়া সহ নগরী ও শহরতলীল প্রতিটি পাড়া মহল্লায় যেভাবে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গ্রুপ গজিয়ে উঠেছে তা বেশ উদ্বেগজনক।

তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাসী গ্রুপগুলি অমুক ভাই, তমুক ভাইয়ের নাম বলছে। কিন্তু সেই রাজনীতিবীদ ভাইয়েরা জানেন না যে কারা কিভাবে তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে চলেছে। তবে আমি মনে করি, পুলিশ যদি আন্তরিক ভাবে চেষ্টা চালায় তাহলে কোনো এলাকায়ই সন্ত্রাসীরা থাকতে পারেন না। আগে প্রতিটি থানায় সন্ত্রাসীদের তালিকা করে গ্রেফতার অভিযান পরিচালনা করলেও এখন আর তেমনটি করা হয়না বলেই ধারণা করছি। যদি হতো তাহলে প্রকাশ্যে অপরাধ করার মতো সাহস অপরাধীদের হতো না বলে মনে করেন তিনি।

ভুক্তভোগী অনেকের দাবী, পুলিশ এখন আর আগের মতো করে অভিযান পরিচালনা করে না বরং সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ঘটার পর ভুক্তভোগীরা কখন থানায় গিয়ে অভিযোগ করবে সেই অপেক্ষায় থাকেন তারা। অথচ ঘটনা যাতে না ঘটে সেই চেষ্টা করা উচিৎ পুলিশ প্রশাসনের এমন দাবী নগরবাসীর। কোনো ঘটনা ঘটার পরও ভুক্তভোগী সাধারন মানুষদের অনেকে থানায় যেতেই সাহস পান না। ফলে একটার পর একটা অপরাধ করে পার পেয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। তাই দিনে দিনে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে এ সন্ত্রাসীরা। তাই, প্রতিটি পাড়া মহল্লার সন্ত্রাসীদের তালিকা করে এখনই সাড়াশি অভিযান চালানো দরকার বলেও মনে করেন ভুক্তভোগীরা।

এদিকে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক শরীফ উদ্দিন সবুজের ছেলেকে কিশোর গ্যাং সদস্যরা ছুরিকাঘাত করার পর বিষয়টি সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে পড়েছে। গতকাল সমাজের বিভিন্ন শ্রেনীর মানুষ এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। অপরাধী যেই হোক তাদেরকে আইনের আওতায় এনে কঠোর বিচার করতে হবে এমন দাবী সকলের। অন্যথায় এই সমাজ অচিরেই বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পরবে বলেও মনে করেন তারা।