সাখাওয়াতের নেতৃত্বে শক্ত অবস্থানে মহানগর বিএনপি

89
মো. সাইফুল ইসলাম সায়েম:
স্বৈরাচার আওয়ামীলীগের দমন-পীড়ন, হামলা-মামলা-নির্যাতন, পুলিশের ধর-পাকড় ও নিজ দলের বিরোধীতাকারীদের সাথে লড়াই করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপিকে শক্তিশালী অবস্থানে দাড় করাতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, এমনটাই দাবি মহানগর বিএনপির আওতাধীন সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের। তারা বলছেন, সাখাওয়াতকে মহানগর বিএনপির দায়িত্ব দেয়ার পর একটি পক্ষের বিরোধীতা সত্ত্বেও মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে এক ধরনের চাঙ্গাভাব বিরাজমান ছিলো।

নেতাকর্মীরা বলছে, এড. সাখাওয়াত হোসেন খানের মতো একজন দায়িত্বশীল, দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ ও ত্যাগী নেতার কাধে দায়িত্ব তুলে দেয়ার পর যে চাঙ্গাভাব সৃষ্টি হয়েছিলো তাকে যথাযথ কাজে লাগিয়ে দলের দু:সময়ের কান্ডারী হিসেবে প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে সর্বোচ্চ ভুমিকা রাখে মহানগর বিএনপি।

তৃণমূল নেতাকর্মীরা জানায়, নারায়ণগঞ্জ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের কাছে সজ্জ্বন ব্যক্তি হিসাবে পরিচিত এড. সাখাওয়াত হোসেন খান বিগত সকল আন্দোলন-সংগ্রামে, দলীয় কর্মসূচীতে নিবেদিত প্রাণ হিসেবে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে রাজপথে ছিলেন। কখনো কোনো ভয়, বাধা-বিপত্তি তাকে রাজপথের আন্দোলন সংগ্রাম থেকে দুরে রাখতে পারে নি। এছাড়াও দীর্ঘ ১৬ বছর যাবৎ বিএনপি ক্ষমতায় বাইরে থাকলেও দীর্ঘ এ সময়ে যখন যে দায়িত্বে আছেন তখন সেই স্থান থেকে নেতাকর্মীদের পাশে থাকেন, খোঁজ-খবর রেখেছেন তিনি।

শুধু খোঁজ-খবরই নয়, একজন আইনজীবী হিসাবে রাজনৈতিক মামলা-মোকদ্দমায়ও নারায়ণগঞ্জের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের পাশে থেকেছেন তিনি। দীর্ঘ ও বর্ণাঢ্য রাজণৈতিক জীবনের শুরু থেকে এখনো পর্যন্ত লবিং-গ্রুপিং, দ্বন্দ্ব-বলয়ের উর্ধ্বে থেকে জেলা-মহানগরসহ প্রতিটি উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন বিএনপি এমনকি তৃণমূল নেতাকর্মীদের সর্বোচ্চ আইনী সহায়তা দিয়ে সকলের পাশে ছিলেন তিনি।

এড. সাখাওয়াত হোসেন খানের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন সম্পর্কে জানা যায়, ১৯৯৬ সালে তৎকালীণ মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন তিনি। ছিলেন জেলা বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদকও। দীর্ঘদিন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়ে প্রথমে আইনজীবী সমিতি সাধারণ সম্পাদক  এবং পরে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন।

আলোচিত সেভেন মার্ডার তথা সাত খুন মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী হয়ে দেশব্যাপী হয়েছেন প্রশংসিত। ২০১৬ সালের নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়ে ধানের শীষ প্রতীকে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে লড়াই করে প্রায় এক লাখ ভোট পান তুমুল জনপ্রিয় এই নেতা। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে কেন্দ্র ঘোষিত মহানগর বিএনপির কমিটিতে সিনিয়র সহ-সভাপতির দায়িত্ব পান।

তবে, সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নিস্ক্রিয়তা ও রাজপথে আন্দোলন কর্মসূচী পালন করার অনীহার কারণে নেতাকর্মীদের নিয়ে আলাদাভাবে কর্মসূচী পালনে বাধ্য হন এড. সাখাওয়াত। যেখানে কতিপয় নেতাকর্মীদের নিয়ে সভাপতি-সম্পাদক একটি কক্ষে মিটিং-মিছিল করতেন, সেখানে রাজপথে থেকে বীরদর্পে দলীয় সকল কর্মসূচী পালন করেছেন এই সাখাওয়াত। সকল আন্দোলনে ফ্রন্ট লাইনে থেকে নেতাকর্মীদের দিয়েছেন নেতৃত্ব।

দলের প্রতি আস্থা, ভালোবাসা, ত্যাগ ও সাহসের প্রতিদান হিসাবে নিস্ক্রিয়দের সাইডলাইনে রেখে এড. সাখাওয়াত হোসেন খানের নেতৃত্বে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ৪১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্র। ঐ কমিটি ঘোষণার পরই মূলত উজ্জীবিত হয়ে উঠে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। যার প্রমাণ মেলে ঐ কমিটি গঠনের ৬দিনের মাথায়ই। আওয়ামী দু:শাসনে নেতাকর্মীদের হত্যার প্রতিবাদে সেদিন (১৯ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসাবে হাজার হাজার নেতাকর্মী নিয়ে চাষাড়ায় শহীদ মিনারে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির প্রথম প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। যাতে মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের স্বত:স্ফূর্তভাবে অংশ নিতে দেখা গিয়েছিলো।

তবে, ঐ কমিটি গঠনের পর কমিটির বিরোধীতা করে বিগত কমিটি নেতৃত্ব দেয়া একটি পক্ষ। এমনকি ঐ কমিটিতে বিভিন্ন পদ-পদবী প্রাপ্ত ১৫ সদস্য একযোগে পদত্যাগও করে। ৪১ সদস্যের মধ্যে ১৫ সদস্যের পদত্যাগে কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যায় মহানগর বিএনপির বর্তমান কমিটি। তবে, সেই দুরাবস্থা কাটিয়ে মহানগর বিএনপির ও অঙ্গসংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করতে সক্ষম হন সাখাওয়াত। যার ফলশ্রুতিতে জুলাই আগস্ট আন্দোলন সহ প্রতিটি সংগ্রামে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন তিনি। বারবার হামলা-মামলায় জর্জরিত হয়ে, কারাবরণ করার পরও পিছপা হন নি কখনো। সর্বশেষ জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের সময় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের অভিযোগ এনে অর্ধশতাধিক মামলার আসামী করা হয় তাকে।

এই বিপ্লবে আওয়ামীলীগের পতন ও ছাত্র-জনতার বিজয় না হলে সেই সব মামলায় কঠিন শাস্তির মুখোমুখি এমনকি ফাসি বা যাবজ্জীপন সাজা দেয়া হতো বলেও মনে করে বিএনপি নেতাকর্মীরা।

তৃণমূল নেতাকর্মীরা জানান, না.গঞ্জ মহানগর বিএনপির রাজনীতিতে দু:সময়ের কান্ডারী হয়ে নেতাকর্মীদের পাশে ঠায় দাড়িয়ে ছিলেন এবং আছেন এড. সাখাওয়াত হোসেন খান। নেতাকর্মীদের মতে, বিএনপি সরকারের সময়ের অনেক বাঘা বাঘা নেতারা বিগত সময়ের কঠিন পরিস্থিতি নিজেদের বাচাঁতে আড়ালে আবডালে থেকেছেন। কেউবা আবার সরকারী দলের সাথে আতাত করে চলেছেন, অনেকে আবার ঘরের কোণায় কিছু সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে দু-চারটা প্রোগ্রাম করে নিজেদের পিঠ বাচাঁনোর চেষ্টা করেছেন। এড. সাখাওয়াত হোসেন খান সেখানে সময়ের সাহসী সৈনিক হয়ে নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন এবং বর্তমানেও রয়েছেন।

এড. সাখাওয়াত হোসেন খান এখন নগর বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের কাছে ভরসার অন্যতম আশ্রয়স্থল বলে জানায় তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। তারা বলেন, মহানগর বিএনপির রাজনীতি টিকিয়ে রেখেছেন সাখাওয়াতই। মহানগর বিএনপি ও এর অঙ্গ-সংগঠগুলোর হাল শক্ত হাতে ধরতে নিরলসভাবে কাজ করেছেন তিনি। দীর্ঘ সময় ধরে দলের নেতাকর্মীদের পাশে থাকা, আন্দোলন সংগ্রাম, দু:স্থ ও অসহায় মানুষের সেবা, ধর্মীয় ও সামাজিক কর্মকান্ড, কেন্দ্রীয় কর্মসূচি বাস্তবায়ন, রাজপথে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। তাই মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে দু:সময়ের কান্ডারী হিসাবেই পরিচিত এড. সাখাওয়াত।