খেয়ে না বাঁচলে উন্নয়ন দিয়ে কি হবে?

81

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ :

চাল-ডাল, তেল-চিনি সহ নিত্য পন্যের দামতো বটেই, আজকাল শাকসব্জি কিনতে গিয়েও হিমশিম খাচ্ছে মানুষ। আজ সকালে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন কাঁচা বাজারে গিয়ে দেখা গেছে প্রতি কেজি কচুর লতির দাম আশি টাকা, ধুনদুল আশি টাকা, পটল আশি টাকা, উস্তা ষাট টাকা, এক আটি ডাটার দাম চল্লিশ টাকা, যে কোনো ধরনের শাকের দাম পঞ্চাশ টাকা।

মূলত এভাবেই সব ধরনের শাকসব্জির দাম এখন আকাশ ছোঁয়া। বাজারে পঞ্চাশ টাকার নিচে কোনো তরকারী নেই। তাই এখন সাধারন মানুষ চরম কষ্টের মাঝে জীবনযাপন করছেন। সাধারন মানুষের আয়ের তুলনায় ব্যায় বেড়েছে বহু গুন বেশি। অথচ জমিতে কৃষক সঠিক মূল্য পাচ্ছে না।

এছাড়া চাল, চিনি, তেল-নুনের দামতো আরো অনেক আগেই বেড়েছে। পরিস্থিতি এখন এমন বিরাজ করছে যে আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় প্রায় তিন গুন দামে বিক্রি হচ্ছে নিত্য প্রয়োজনীয় পন্য। যেমন মার্কিন যুক্তরাস্ট্রে একজন নাগরিক প্রতি মাসে গড়ে সাড়ে তিন লাখ টাকা আয় করেন। অথচ সেই দেশে এক ডজন ডিমের দাম মাত্র ১০৩ টাকা, আর বাংলাদেশে একজন নাগিরক মাসে আয় করেন সর্বোচ্চ বারো-পনের হাজার টাকা। কিন্তু এই দেশে এক ডজন ডিমের দাম ১১০ টাকা।

তার মানে সারে তিন লাখ টাকা মাসে আয় করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশে যেখানে সর্বোচ্চ ত্রিশ হাজার টাকায় সব খরচ মিটে যায়। সেখানে বাংলাদেশে বারো-পনের হাজার টাকা আয় করে সেই টাকায় নুন আনতে পান্তা ফুরায়।

শুধু মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্র নয় পৃথিবীর আরো অনেক উন্নত দেশেই বাংলাদেশের তুলনায় পণ্য মূল্য অনেক কম, কিন্তু আয় বহু গুন বেশি। এছাড়া এ দেশে প্রতি কেজি সয়াবিন তেলের দাম ১৬৫ টাকা আর এক কেজি চালের দাম ৬৫ টাকা। যা কিনা ধনী রাষ্ট্র জাপানের তুলনায়ও বেশি। তাই সহজেই অনুমান করা যায় দেশের মানুষ কতোটা কষ্টে আছে।

তাই এ বিষয়ে বন্দর বাজারের হাসান আহম্মেদ বলেন, দেশে লাগামহীন ভাবে জিনিসপত্রের দাম এতোটাই বেড়ে গেছে যে আমাদেরকে এখন অনেকটা অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে। সরকার উন্নয়নের কথা বলছে। কিন্তু আমাদের প্রশ্ন হলে, যদি খেয়ে না বাঁচি তাহলে এসব উন্নয়ন দিয়ে কি করবো। আমরা মনে করি এদেশের লুটেরা ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারণেই এভাবে জিনিস পত্রের দাম বাড়ছে।

পাইকারী ও খুচরা বাজারসহ কোথাও সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রন না থাকায় এমনটা হচ্ছে বলে দাবি তার। দেশে এখন নীরব দূর্ভিক্ষ বিরাজ করছে বলেও মনে করেন তিনি। তাই তিনি বলেন, দেশের গরীব-নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তসহ দেশের আপামর জনসাধারণকে বাচাঁতে হলে সরকারের উচিত অতি শীঘ্রই এ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের লাগাম টেনে ধরা। তা নাহলে সরকারের এ উন্নয়ন জনগনের কোনো কাজেই লাগবে না।