২১ সেরা করদাতাকে সম্মাননা দিলো কর অঞ্চল নারায়ণগঞ্জ

37

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ: 

৪টি ক্যাটাগরীতে নারায়ণগঞ্জ জেলা, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ও মুন্সীগঞ্জ জেলার ২১ সেরা কদতাকে সম্মাননা প্রদান করেছে নারায়ণগঞ্জ কর অঞ্চল। এ উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় নারায়ণগঞ্জ কর অঞ্চলের উদ্যোগে নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সে করদাতা সম্মাননা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

নারায়ণগঞ্জ কর অঞ্চলের কর কমিশনার মিজ শারমিন ফেরদৌসী’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য এবং কর আপীলাত ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট মো. নাজমুল করিম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোর্শেদ সারোয়ার সোহেল। আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য হোসনে আরা বেগম বাবলী, এফবিসিসিআই’র সাবেক পরিচালক প্রবীর কুমার সাহা, অতিরিক্ত কর কমিশনার ছগীর আহমেদ প্রমুখ।

প্রধান অতিথি বলেন, আমি অত্যন্ত আদন্দিত যে, কর অঞ্চল নারায়ণগঞ্জ বিগত বৎসরগুলোতে অনেক বেশী প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। বিশেষ করে করদাতার সংখ্যা এবং রাজস্ব আহরণ দুটিতেই তারা বিশেষ সফলতা অর্জন করেছে। যে জন্য আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। করদাতারাও স্বত:স্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসার কারণেই রাজস্ব আহরণ বিগত কয়েক বছরগুলোতে অনেক বেড়েছে। প্রায় প্রতি ৫ বছরে রাজস্ব আহরণ দ্বিগুন হয়ে যাচ্ছে। স্বাধীণতা পরবর্তী সময়ে ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন এনবিআর প্রতিষ্ঠা করেন, সে বছর আমরা ১০ হাজার কোটি টাকা আহরণ করেছি। সেখান থেকে এখন আমরা ৩ লক্ষ ২০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ করছি। অর্থাৎ এই বায়ান্ন বছরে আমাদের অর্জন কতগুন সেটা দেখতে হবে। তবে, এটিও যথেষ্ট নয়। এখনো অনেকে কর দিচ্ছেন না। একেবারে আয়কর দেয়া থেকে দুরে থাকাটা, আমার মনে হয় সমীচীন হবে না। কারণ, এখন কিন্তু সরকারের ৪৩টি সেবা গ্রহন করতে আপনাকে আয়কর রিটার্নের প্রাপ্তি স্বীকার পত্র দাখিল করতে হবে। তাছাড়া, এখন ঘরে বসে অনলাইনে আপনারা রিটার্ন সাবমিট করতে পারেন। এই সহজীকরণ হচ্ছে, কারণ, আপনাকে যেন সরাসরি অফিসে যেতে না হয়, আপনি ঘরে বসেই যাতে রিটার্ন সাবমিট করতে পারেন।

স্বাগত বক্তব্যে অতিরিক্ত কর কমিশনার ছগির আহমেদ বলেন, যারা কর দেয় তারা দেশের উন্নয়নে অবদান রাখে। এর মাধ্যমে সুবিধা বঞ্চিত মানুষদের বিভিন্ন ভাতার ব্যবস্থা করা হয়। যারা নিয়মিত কর দিচ্ছেন তাদেরকে আজ সম্মাননা দেয়ার দিন। পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০১১ সালে যখন নারায়ণগঞ্জে প্রথম কর অঞ্চলের যাত্রা শুরু হয় সে বছর রাজস্ব আদায় হয়েছিলো ১০২ কোটি, যা বর্তমানে বেড়ে দাড়িয়েছে ১ হাজার ৪৩ কোটি টাকায়। ২০১৩ সালে নারায়ণগঞ্জ কর অঞ্চলের করদাতার সংখ্যা ছিলো মাত্র ২৩ হাজার, এ সংখ্যা কয়েকগুন বেড়ে গতকাল পর্যন্ত ৩ লক্ষ ৩৩ হাজার করদাতা কর দিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, দেশে মোট ৫২৫ জন সেরা করদাতার মধ্যে ৪ ক্যাটাগরিতে ২১ জন সেরা করদাতা আমাদের কর অঞ্চলের।

করদাতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ জেলার সেরা করদাতা শাহাদাৎ হোসেন ভুইয়া সাজনু। তিনি বলেন, প্রতি বছর সময় মতো কর দিতে পেরে আমি অত্যন্ত আত্মতৃপ্তি ভোগ করি। যখন সার চার্জটা দেই, তখন খুব লাগে, যে এতগুলো টাকা চলে যাচ্ছে। কিন্তু দেয়ার পরেই খুব ভালো লাগে একারণে, আজকে এতো কঠিন সময় চলে এসেছে যে, ট্যাক্স ছাড়া বা টিন সার্টিফিকেট ছাড়া অনেক কাজই করা যায় না।

আলোচনা পর্বের আগে সেরা করদাতাদের নাম ঘোষণা এবং তাদের সম্মাননা প্রদান করা হয়। ২১ সেরা করদাতার মধ্যে না.গঞ্জ জেলায় দীর্ঘ সময় কর প্রদানকারী ২জন করদাতা হলেন, শহিদুজ্জামান শহীদ ও ফকির চান মীর। সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী ৩ জন করদাতা হলেন, মোল্লা মোহাম্মদ মজনু, শাহাদাত হোসেন ভুইয়া, মিজানুর রহমান মোল্লা। সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী মহিলা করদাতা হলেন, মোশারা মেহজাবিন। সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী তরুন পুরুষ করদাতা হলেন আতিক মোর্শেদ।

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় দীর্ঘ সময় কর প্রদানকারী ২জন করদাতা হলেন মিস রত্না সাহা, মো. গোফরান মিয়া। সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী ৩ জন করদাতা হলেন সোয়াইবুল হোসেন আদেল, সোহেল হোসেন এবং সাইদুর রহমান। সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী মহিলা করদাতা হলেন রাজিয়া জামান, সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী তরুন পুরুষ করদাতা হলেন অপু কুমার সাহা।

মুন্সীগঞ্জ জেলায় দীর্ঘ সময় কর প্রদানকারী ২জন করদাতা হলেন, সুবাস চন্দ্র সাহা ও দেবব্রত দাস। সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী ৩ জন করদাতা হলেন, মাহবুব হোসেন, শাহাদাত ইসলাম সিয়াম, আয়নাল হোসেন স্বপন। সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী মহিলা করদাতা হলেন, রিটা রহমান। সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী তরুন পুরুষ করদাতা হলেন আল আমিন।