নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান বলেছেন, আমার জন্য দোয়া করবেন, আল্লাহ যদি আমার কপালে রাখেন, আমার নেত্রী যদি আমাকে আদেশ করেন তাহলে অবশ্যই আমি নির্বাচন করতে আসবো। তখন আমি আপনাদের কাছে ভোটের কথা বলবো। কিন্তু আল্লাহর হুকুম হতে হবে। আর কয়েকটা দিনের ব্যাপার, ধৈর্য্য ধারণ করেন। আমার কাছে কোনো আওয়ামীলীগ-বিএনপি-জাতীয় পার্টি ছিলো না। আমি সবাইকে একত্রিত করে কাজ করতে পেরেছি, যার জন্য আপনারা আমাকে ভালোবাসতে পেরেছেন। আমি নির্বাচিত হই বা না হই যতক্ষণ বেচেঁ থাকবো, ততক্ষণ আমি আপনাদের পাশে থাকবো।
গোগনগর ইউনিয়নের নির্বাচিত পরিষদ ও বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষের সাথে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি। ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফজর আলীর সভাপতিত্বে গতকাল রবিবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে সৈয়দপুর বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সেলিম ওসমান বলেন, আসেন আমরা সবাই দোয়া করি পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালার কাছে, আমরা যেন ভালো থাকতে পারি। আর ভালো থাকার একটাই উপায়, তা হলো শেখ হাসিনার সরকার। শেখ হাসিনার সরকার যদি আগামী ৫ বছরের জন্য আবারও ক্ষমতায় আসে, তাহলে করোনার সময়ে ৩ বছরের গ্যাপ এবং গত ১৫ বছরের উন্নয়ন যদি একসাথে করেন তাহলে দেখতে পাবেন আমরা কোথায় গিয়ে পৌছেছি। ইতিমধ্যেই দেশ ডিজিটাল হয়েছে, এখন আমরা ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, রাস্তা-ঘাট বন্ধ করবেন, আগুন জ¦ালিয়ে দিবেন, বাস পুড়িয়ে দিবেন, মানুষের ক্ষতি করবেন, বাচ্চাদের স্কুল বন্ধ করবেন, পরীক্ষার সময় সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করবেন এটা তো হতে পারে না। এটা থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য আপনারা সবাই একত্রিত হোন। আপনাদের গ্রামে, মহল্লায়-ইউনিয়নে একটা বাচ্চারও যেন লেখাপড়া ক্ষতিগ্রস্থ না হয় তার বন্দোবস্ত আপনাদের করতে হবে।
এর আগে তিনি বলেন, আমি যে ভালোবাসা পেয়েছি তা কতজন তা অর্জন করতে পেরেছে সেটা আমি জানি না। আমি যখন কাজ শুরু করেছি, তখন আমি বলেছি আমি জনগনের গোলাম হিসেবে কাজ করবো। আমার সাড়ে ৯টা বছর, আমি গোলাম হিসেবেই কাজ করেছি। কোথায় বাসা, কোথায় ঘর আমি সেটা দেখি নি, যেখানে ডেকেছে সেখানেই গিয়েছি। ডাকতে শুধু সময় লেগেছে, আমার আসতে সময় লাগেনি। গোগনগরে অনেক কাজ করার সুযোগ ছিলো, কিন্তু আমি সেই কাজ করতে পারি নাই। আমি লজ্জা রেখে কথা বলতে চাই না, গোগনগনের মানুষের প্রতি আমার অনুরোধ রইলো, আপনারা দলাদলি কইরেন না। আমি যতবারই আসছি, ততবারই দেখি আপনাদের মধ্যে দলাদলি আছে। এ দলাদলি থাকলে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম কিন্তু ভালো করতে পারবে না। দলাদলি, ঝগড়া-ঝাটির কারণে আমাদের ছেলে-মেয়েরা শান্তিতে বসবাস করতে পারবে না এই এলাকাতে। একটা কথা মনে রাখবেন, একজন মানুষ হয়ে আপনি যদি আরেকজন মানুষকে ভালোবাসতে না পারেন তাহলে আপনি কেমন মানুষ। এটা সংসার করার ভালোবাসা নয়, মানুষ হয়ে মানুষের প্রতি ভালোবাসা। আমি আগেও আপনাদের বলেছি, আপনাদের এলাকার মধ্যে কেউ যেন দ্বিধা-দ্বন্দ্বে না থাকে। আসেন, আমরা যদি সবাই এক থাকতে পারি, একত্রিত হয়ে কাজ করতে পারি তাহলে আমাদের ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনি ভবিষ্যত প্রজন্ম সুখে থাকতে পারবে।
বর্তমান চেয়ারম্যান ফজর আলী সম্পর্কে সেলিম ওসমান বলেন, অত্যন্ত ভালো মানুষ আমার চেয়ারম্যান ফজর আলী। ফজর আলীর পিছনে কিছু কিছু মানুষ খালি তার দোষ খুঁজে বেড়ায়। একটা মানুষের সব গুন থাকতে পারে না। যদি ওর কোনো দোষ থেকে থাকে, তাহলে আপনাদের কাছে অনুরোধ রইলো, সরাসরি আমাকে বলবেন আমি তাকে শাসন করবো। অনেকে আমাকে চিঠি পাঠিয়েছে, ফোন করেছে এই স্কুলের অডিটরিয়ামে ছুটির দিনে যাতে বিয়ের অনুষ্ঠানের অনুমতি দেই। এটা আমার বিষয় না, স্কুলটা হলো সরকারের, আর সরকার হলো জনগনের। তাই জনগনের যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে স্কুল কমিটি সামান্য কিছু অর্থের বিনিময়ে এখানে বিয়ের অনুষ্ঠানের অনুমতির জন্য ডিসি সাহেবের সাথে যাতে কথা বলে। আর পিছনে একটা জায়গা আছে, যেটার জন্য অনেক মুসল্লী আমাকে ফোন করেছে। কেউ বলে এটা স্কুলের জায়গা, কেউ বলে এটা অন্য জায়গা। এই জায়গার বিষয়ে আপনারা যারা মুরুব্বী আছেন, সবাই একসাথে বসেন। জায়গাটা যদি স্কুলের বাইরের জায়গা হয় তাহলে অবশ্যই সেখানে মসজিদ নির্মাণের ব্যবস্থা করা হোক। এগুলি কিন্তু চেয়ারম্যান বা মেম্বারদের রিকোয়েস্ট না, আমার গোগনগরের মানুষ আমাকে টেলিফোন করে বলেছে।