দেশের বর্তমান রাজনীতিতে এই দলটি এখন আর কোনো ফ্যক্টর নয়...

না.গঞ্জ সহ সারা দেশেই আগের সেই সাংগঠনিক শক্তি নেই জামাতের

113

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

দেশের রাজনীতিতে আবারও জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে যে প্রচার চলছে তা পরিকল্পিত বলেই জানা গেছে। বিগত দুই দশক ধরে এই দলটিকে নিয়ে যে প্রচার চালানো হয়েছে এবং দেড় দশক এই দলের উপর দিয়ে যে পরিমান ঝড় বয়ে গেছে তাতে দলটির এখন রীতিমতো অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে বলেই অনেকে মনে করেন।

এক পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, সারা দেশে এই মুহুর্তে জামায়াতে ইসলামীর সমর্থন আছে সর্বোচ্চ ছয়/সাত ভাগ। এক সময় দলটির সমর্থন ছিলো প্রায় সাত/আট ভাগ। বিশেষ বিশেষ কিছু জেলায় দলটির জনপ্রিয়তা ছিলো। কিন্তু এখন তাও নেই। বরং এই মুহুর্তে জামায়াতের চেয়ে জনপ্রিয় ইসলামী দল হলো চরমোনাই পীরের ইসলামী আন্দোলন। অথচ জামায়াত নাকি রাস্ট্র ক্ষমতায় চলে আসবে এমন প্রচার চালাচ্ছে ভারতীয় পত্রিকা সহ কোনো কোনো মহল।

এছাড়া জামায়াতের একটি মাত্র অঙ্গসহযোগী সংগঠন রয়েছে। এটি হলো ইসলামী ছাত্র শিবির। এক সময় শিবিরের বেশ ভালোই সাংগঠনিক ক্ষমতা ছিলো। কিন্তু এখন তা নেই। এছাড়া দলটি এখন নেতৃত্ব সংকটেও ভুগছে। যুদ্ধাপরাধের দায়ে এই দলের মূল নেতাদের আরো অনেক আগেই ফাঁসি হয়ে গেছে। তারা তাদের যোগ্য উত্তরসূরীও রেখে যেতে পারেননি।

দেশে এক সময় জামায়াতের বেশ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিলো। যেমন ইসলামী ব্যাংক, ইবনেসিনা ওষুধ কোম্পানী, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল ইত্যাদি। এর মাঝে অন্যতম হলো ইসলামী ব্যাংক। তবে অনেক আগেই এই ইসলামী ব্যাংকের মালিকানা থেকে জামায়াতকে বাদ দেয়া হয়েছে। তাই পরিস্কার ভাবেই বলা চলে এই দেশের রাজনীতিতে জামায়াত এখন আর কোনো ফ্যাক্টরই নয়।

অথচ আসন্ন নির্বাচনের আগ মুহুর্তে আবারও জামায়াতে ইসলামীকে আলোচনায় নিয়ে আসা হয়েছে। বলা হচ্ছে বর্তমান সরকার ক্ষমতা থেকে চলে গেলে নাকি জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় চলে আসবে। তারা এসে চীনের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলবে। এতে ভারত এবং যুক্তরাস্ট্র উভয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সম্প্রতি ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকায় এমন রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে। তাই আনন্দবাজারের এমন হাস্যকর রিপোর্ট নিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে জোর সমালোচনা চলছে।

কেননা. জামায়াতে ইসলামীর বর্তমান বাস্তবতা হলো এই দলটি এই সময়ে রাস্ট্র ক্ষমতায় আসতে পারাতো দূরের কথা আগামী একশ বছরেও বাংলাদেশের রাস্ট্র ক্ষমতায় তারা আসতে পারবে না। কেনোনা সাংগঠনিকভাবে জামায়াত আর বেশি দূর এগুতে পারবে না।

এদিকে. এ দেশের মাটিতে কেবল জামায়াতে ইসলামীই নয় বরং অন্য কোনো ইসলামী দলই ক্ষমতায় আসতে পারবে না। নির্বাচন যদি অবাধ ও সুষ্ঠু হয় তাহলে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ এই দুই দলের যেকোনো একটি ক্ষমতায় আসবে। কারন দেশের আশি শতাংশ মানুষ এই দুই দলকেই সমর্থন করে।

সাম্প্রতিক বছর গুলিতে ইসলামী আন্দোলন কিছুটা জনপ্রিয়তা অর্জন করলেও রাস্ট্র ক্ষমতার ধারে কাছে যাওয়ার মতো ভোট তাদের নেই। এছাড়া আগামী দিনগুলি ইসলামী আন্দোলনের জনপ্রিয়তাও আর বাড়বে কিনা এ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কেনোনা তারাও দেশের জনগনের জন্য তেমন কিছু ত্যাগ শিকার করেনি। বরং আওয়ামী লীগের সঙ্গে এক ধরনের আতাত করে চলার চেষ্টা করেছে। সর্বশেষ বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই চরমোনাই পীরের একজন মার খাওয়ার কারনে তাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের দূরত্ব কিছুটা বেড়েছে। তারা তাদের মুরিদ নির্ভর রাজনীতি করছেন। তাই পরিস্কার ভাবে বলা যায় এ দেশে ইসলামী কোনো দল একক ভাবে সহসা রাস্ট্র ক্ষমতায় আসতে পারবে না। তাই আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে জামায়াতকে নিয়ে যে কথা বলা হচ্ছে সেটা যে কেবলই প্রোপাগান্ডা এতে কারোই কোনো সন্দেহ নেই। বরং পরিস্কার করে এটাই বলা যায় আর যাই হোক জাময়াত রাস্ট্র ক্ষমতায় আসবে এমন কোনো সম্ভাবনা একেবারেই নেই।