আওয়ামী লীগ দেশকে পারিবারিক সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেছে বলে তার মন্তব্য...

সরকারের বিরুদ্ধে, জনগনের পক্ষে অনড় অবস্থানে জিএম কাদের

174
সরকারের বিরুদ্ধে, জনগনের পক্ষে অনড় অবস্থানে জিএম কাদের

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

এবার এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে না যাওয়ার ব্যাপারে একেবারে অনড় অবস্থান নিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। এরই মাঝে বিভিন্ন মিডিয়ায় তিনি সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর বক্তব্য দিয়ে অনেকেরই নজর কেড়েছেন। তিনি চ্যানেল আই সহ বিভিন্ন টিভি চ্যানেল এবং প্রিন্ট মিডিয়ায় এই সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না বলে জোরালো বক্তব্য দিয়ে এসেছেন। তাই সরকার বিরোধীরা মনে করেন তিনি এবার বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন এবং তিনি তার অবস্থানে অনড় রয়েছেন।

সর্বশেষ তিনি মার্কিন রাষ্ট্রদুতের সাথে বৈঠক করে জানিয়ে দিয়েছেন যে, এই সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন দিলে এবারও দেশের জনগন ভোট দিতে পারবে না। তাই জাতীয় পার্টি এবার আর জনগনের ভোটের অধিকার হরন করার দায় নিতে চাইছে না। এছাড়া জিএম কাদের আরো মনে করেন, বর্তমান সরকারের দালালী করার কারনে সারা দেশে জাতীয় পার্টি আস্তিত্ব সংকটে পরেছে। আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে প্রায় ধ্বংস করে ফেলেছে সরকার। তাই তিনি আর আওয়ামী লীগের সাথে কোনো মতেই থাকতে চাইছেন না। আর এসব কথা তিনি প্রকাশ্যে জনসভায়ই বলছেন।

জিএম কাদেরের এমন অনড় অবস্থানের কারনে বেশ টেনশানে পরে গেছে সরকার। তাই সরকার এখন তাকে চাঁপের মাঝে রেখেছে বলেই বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। অনেকের মতে সরকার টাকা পয়সা দিয়ে রওশন এরশাদকে ম্যানেজ করে রেখেছে এবং জাতীয় পার্টির এমপিদেরকেও নানা সুযোগ সুবিধা দিয়ে সরকারের পক্ষে রেখেছে। জাতীয় পার্টির এমপিরা এই সরকারের অধীনেই নির্বাচনে যেতে চায়। কারন তারা মনে করেন এবারও আওয়ামী লীগ জোর করেই রাস্ট্র ক্ষমতায় চলে আসবে। তাই তারা এবারও হালুয়া রুটির ভাগ বসাতে চান। জনগন ভোট দিতে পারলো কি পারলোনা এতে তাদের কিছু যায় আসে না। তারা চান যেকোনো মূল্যে এমপি হতে।

তবে, জিএম কাদেরের সঙ্গে অল্প কয়েকজন হলেও রয়েছেন যারা মনে করেন তারা এমপি হতে পারেন বা না পারেন তাদেরকে জনগনের পাশে দাড়াতে হবে। তাই এই অল্প কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়েই লড়াই করে চলেছেন জিএম কাদের।

এদিকে, জিএম কাদেরের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানিয়েছে, জিএম কাদের মনে করেন এবার সরকার কোনো মতেই আর একতরফা নির্বাচন করতে পারবে না। কারন পশ্চিমা শক্তিগুলো এবার সরকারের স্বৈরতান্ত্রিক নীতির বিরুদ্ধে একাট্টা হয়েছে। বিগত দুটি নির্বাচন যেভাবে করে সরকার পার পেয়ে গেছে এবার আর তেমনটি হবে না। সরকারকে এবার অবশ্যই জনগনের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। যার ফলে মার্কিন যুক্তরাস্ট্র এরই মাঝে বাংলাদেশের উপর ভিসা নীতি প্রয়োগ করেছে এবং বাংলাদেশের অনেককে এখন আর ভিসা দিচ্ছে না। বিশেষ করে সরকারী কর্মকর্তারা যুক্তরাস্ট্রের দূতাবাসে ভিসা নিতে গিয়ে অনেকেই নানা জেরার মুখে পরছেন বলে এরই মাঝে মিডিয়ায় খবর ছড়িয়ে পরেছে। তাই আগামী দিনগুলিতে মাঠের রাজনীতিতে এর একটি বড় প্রভাব পড়বে বলে রাজনৈতিক বোদ্ধারা মনে করেন।

এক কথায় যুক্তরাস্ট্র সহ পশ্চিমা শক্তিগুলো বাংলাদেশে আর কোনো স্বৈরশাসন সহ্য করবেনা বলেই পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছে। তাই জিএম কাদের এখন বেশ কৌশলী অবস্থান নিয়েছেন। তিনি তার দলের লোভী এমপিদের বলছেন আপনারা একটু অপেক্ষা করুন, দেখুন দেশে কি ঘটে, তারপর স্বিদ্ধান্ত নিন। জিএম কাদের যেকোনো মূল্যে দেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চাইছেন এবং তিনি যুক্তরাস্ট্র সহ পশ্চিমা শক্তিগুলোর পদক্ষেপকে স্বাগত জানাচ্ছেন। তাই সরকার যদি কোনো মতেই পশ্চিমাদের কথা না শোনে তখন বিএনপি সহ বিরোধী দলগুলি যদি একটি বড় আন্দোলন গড়ে তুলতে সক্ষম হয় তাহলে তখন জিএম কাদেরের নেৃতত্বে জাতীয় পার্টিও সেই আন্দোলনে যোগ দেবে বলে আলোচনা চলছে। ফলে বুঝাই যায় শত চাঁপের মাঝেও তিনি সরকারের বিরুদ্ধে বেশ শক্ত অবস্থান নিয়েছেন এবং এই অবস্থান থেকে কোনো মতেই নড়তে চান না। জনগনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন জিএম কাদের।