# মিথ্যা মামলা ও গ্রেফতার না করে জনগনের পাশে দাড়ানোর আহবান...

“মার্কিন ভিসা নীতির তোয়াক্কা করছে না পুলিশ”

181

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

মার্কিন ভিসা নীতিকে তোয়াক্কা করছে না নারায়ণগঞ্জ পুলিশ। এরই মাঝে প্রায় বিনা কারনে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিন এবং তার দুই ছেলে সহ মোট ৪২৩ জনকে আসামী করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব মুহম্মদ গিয়স উদ্দিন বলেন, ওই দিন আমাদের দলের নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণ ভাবে চিটাগাং রোডে অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে চাইলে অযথাই পুলিশ এসে বাধা দেয়। নেতাকর্মীদের উপর পুলিশ লাটিচার্জ করে এবং আমাদের দলের বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে। আমি সহ আমার দলের চারশ তেইশ জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা গায়েবী মামলা দিয়েছে। তাই আমরা পরিস্কার ভাবে বলতে চাই সরকার যে বার বার সভাসমবেশে বাধা না দেওয়ার কথা বলছে মোটেও তা সত্য নয়। সরকার আমাদের নামে আবারও গায়েবী মামলা দিয়েছে এবং আমাদেরকে গ্রেফতার হয়রানী অব্যাহত রেখেছে। পুলিশ আওয়ামী লীগের দলীয় ক্যাডারদের মতো আচরন করছে। তারা কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করছে না।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সভাপতি এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান তাকে কিভাবে লাঠিপেটা করার পর গ্রেফতার নিয়ে গিয়ে পরে আবার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে জামাই আদর করা হয় তার বর্ণনা দেন এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। তিনি বলেন এই মুহুুর্তে সরকারের নির্দেশে পুলিশ প্রশাসন যা করছে তাকে নতুন নাটক বলা ছাড়া আর কিছু বলা যায় না। তারা একদিকে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছে এবং গ্রেফতার করছে। অথচ আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন থেকে এক চুলও নড়িনি। কিন্তু পুলিশ বিনা কারনে আমাদের উপর দমনপিড়ন চালাচ্ছে। তাই আমরা মনে করি সরকার এবার অতি নিন্ম মানের চালাকির আশ্রয় নিয়েছে যা কিনা এরই মাঝে দেশের জনগনের কাছ ধরা পরে গেছে। কিন্তু আমরা সরকারের প্রতি আহবান জানাবো যতো দ্রুত সম্ভব তত্বাবদায়ক সরকারের দাবি মেনে নিয়ে যাতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয়। অন্যথায় এই সরকারকে করুন পরিনতি ভোগ করতে হবে। আর সরকারের অন্যায় নির্দেশ পালন করতে গিয়ে বিপাকে পরবে পুলিশ প্রশাসনের লোকেরাও। তাই পুলিশের প্রতি আমাদের অুনরোধ আপনারা মিথ্যা মামলা দেবেন না। সরকারের অন্যায় আদেশ মেনে আমাদেরকে গ্রেফতার করবেন না। আপনারা জনগনের পাশে দাড়ান।

এদিকে এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন পর্যায়ের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন, সরকার এবং পুলিশ বাস্তবে মার্কিন ভিসা নীতির কোনো রকম তোয়াক্কা করছে না। বিরোধী দলগুলির শান্তিপূর্ণ সভাসমাবেশে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী নেতাকর্মীদের লাঠিপেটা করছে। অযথা বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে গ্রেফতার নির্যাতন চালাচ্ছে। এতে পরিস্থিতি দিনে দিনে আরো জটিল হচ্ছে। দেশে একটি অবাধ ও সুষ্টু নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। সরকারের এবং পুলিশের আচরন দেখে মনে হচ্ছে আবারও একতরফা একটি নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সরকার। তারা মুখে অবাধ ও সুষ্টু নির্বাচন করার কথা বললেও বাস্তবে যেকোনো মূল্যে ক্ষমতায় আসতে চায় আওয়ামী লীগ। তাই তারা এবারও পুলিশ প্রশাসনকে ব্যাবহার করছে। মূলত পুলিশের উপর ভর করেই আবারও রাস্ট্র ক্ষমতায় আসতে চাইছে আওয়ামী লীগ। এটা এখন দিবা লোকের মতো পরিস্কার। সরকার মার্কিন যুক্তরাস্ট্র সহ পশ্চিমা গণতান্ত্রিক বিশে^র সাথে মুখে যা বলছে বাস্তবে সেটা পালন করছে না।

এদিকে শনিবার রাজধানী ঢাকায় এবং নারায়ণগঞ্জে বিএনপির তিনজন নেতাকে গ্রেফতার করার পর পুলিশ নাটক করেছে বলে সারা দেশেই এখন সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। ওই দিন পুলিশ ঢাকায় বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমান উল্লাহ আমান এবং নারায়ণগঞ্জের এডভোকেট সাখাওয়াৎ হোসেন খানকে আটক করে। পরে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে খাইয়ে দাইয়ে ভিডিও করে টিভি চ্যানেলগুলিতে নিউজ করার ব্যবস্থা করে। আমান উল্লাহ আমানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে ফল পাঠানো হয়। নারায়ণগঞ্জের সাখাওয়াৎ হোসেন খানকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে আপ্যাায়ন করা হয়। কিন্তু এক দিকে পুলিশ বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানী করছে, তাদেরকে লাঠিপেটা এবং গ্রেফতার করছে আবার অপরদিকে নেতাদের জামাই আদর করে ছেড়ে দিচ্ছে। তাই দেশের রাজনীতিতে এখন নানা নাটক চলছে বলে পর্যবেক্ষক মহল মনে করছেন। সব চেয়ে বড় কথা হলো পুলিশ এখন আর মার্কিন ভিসা নীতিকে মোটেও তোয়াক্কা করছে না। সরকারও বিএনপিকে বাদ দিয়ে একটি একতরফা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।