বর্তমান সরকারকে টেনে হিচরে নামানো হবে – সাখাওয়াত

120

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি এড. সাখাওয়াত হোসেন খান বলেছেন, বর্তমান সরকার রাষ্ট্রীয় সকল প্রকার যন্ত্রকে ব্যবহার করে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করছে, তাকে ছোট করার চেষ্টা করছে। প্রথমে তারা জিয়া আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের নাম পরিবর্তন করে। এভাবে সারা বাংলাদেশে তার নাম মুছে ফেলার জন্য বিভিন্নভাবে নোংরা খেলায় মেতে উঠে সরকার।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪১ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষ্যে মহানগর যুবদলের ৬দিন ব্যাপী কর্মসূচীর শেষ দিনের আলোচনা সভা, দোয়া ও মিলাদ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শনিবার (৪ জুন) বিকালে নগরীর সিদ্ধিরগঞ্জস্থ ০৮নং ওয়ার্ডে এ সভা, মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া শেষে নেওয়াজ বিতরণ করা হয়। মহানগর যুবদল নেতা বাদশাহ, মামুন প্রধান ও আশফাক রহমত উল্লাহর সার্বিক তত্ত্বাবধানে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর যুবদলের আহবায়ক মমতাজ উদ্দিন মন্তু।

সাখাওয়াত বলেন, যখন সরকার দেখলো শহীদ রাষ্ট্রপতির নাম জনগনের অন্তর থেকে মুছে ফেলা সম্ভব হচ্ছে না। তখন জিয়াউর রহমানকে নিয়ে বর্তমান সরকারের প্রধানসহ সরকারের বিভিন্ন এমপি-মন্ত্রীরা অশালীন, অসত্য বক্তব্য প্রদান করেছে। এসকল বক্তব্যের দাত ভাঙ্গা জবাব হিসাবে ৩০ তারিখ থেকে আজ পর্যন্ত সারা বাংলাদেশে শহীদ এ রাষ্ট্রপতির মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। মানুষ যেভাবে স্বত:স্ফূর্তভাবে জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী পালন করছে, আমি মনে করি এটাই সরকারের সকল অপকৌশলের জবাব।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান এমন একটি নাম যার সাথে স্বাধীণতা যুদ্ধ জড়িত। স্বাধীণতা যুদ্ধের পূর্বে এদেশে আন্দোলন-সংগ্রাম কে করেছে? জিয়াউর রহমানের সময়ে বড় কোনো নেতাও ছিলো না, বড় আর্মি অফিসারও ছিলো না। সে সময়ে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন হচ্ছিলো সেই আন্দোলনে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা পালিয়ে যায়, অনেকে আবার পাকিস্তানের সাথে হাত মিলায়। কিন্তু ঐ সময়ে জিয়াউর রহমান মধ্য র‌্যাঙ্কের একজন সামরিক কর্মকর্তা ছিলেন, সে সময়ে তার জীবনও হুমকির মুখে ছিলো। যে কোনো সময় তাকে পশ্চিমারা হত্যা করতে পারতো, সেই জীবনের ঝুকি নিয়ে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে স্বাধীণতার ঘোষণা করেছিলেন। একইসাথে উনি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসাবে নিজেকে ঘোষণা দেয়।

তিনি আরও বলেন, স্বাধীণতার পরে আওয়ামীলীগ সরকারের যিনি নেতৃত্বে ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান, উনিই কিন্তু জিয়াউর রহমানকে তার বীরত্বের জন্য বীর উত্তম উপাধি দিয়েছিলেন। বীর উত্তম উপাধি পাওয়া সহজ কথা নয়। উনি যে ফোর্স গঠন করে বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীণতার জন্য সেদিন প্রকাশ্য যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন। ৯মাস যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীণ করেছিলো।

মন্ত্রী-এমপিদের লুটপাটের কারণে দেশ আবারো দুর্ভিক্ষের কবলে পড়ছে উল্লেখ করে সাখাওয়াত বলেন, ১৯৭১ সনে কিন্তু স্বাধীণতার পরে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসে এ স্বাধীণ রাষ্ট্রকে, স্বাধীণ বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করে, গনতন্ত্রকে হরণ করে, মানুষের অধিকার হরণ করে এদেশে দুর্ভিক্ষ উপহার দিয়েছিলো। যা ৭৪’এর দুর্ভিক্ষ নামে পরিচিত, যাতে বহু মানুষ মারা গিয়েছিলো। সেই অবস্থা মানুষ ভুলে নাই, আবার বাংলাদেশে সেই দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি। মন্ত্রী-এমপিদের লুটপাটের কারণে আবার বাংলাদেশকে দুর্ভিক্ষের কবলে পড়তে হচ্ছে। হাজার হাজার কোটি টাকা, লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে এদেশকে উজার করে দিয়েছে। এদেশ হাজার বিদেশীদের কাছে ঋণের বোঝায় জর্জরিত।

তিনি বলেন, দুর্নীতির দায়ে, মানুষের ভোটের অধিকার হরনের দায়, গুম-খুন করার দায়ে, রাজনৈতিক অধিকার হরন করার দায়ে মসনদ থেকে এ সরকারকে টেনে হিচরে নামানো হবে। একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করা হবে এবং একটি নির্বাচন হবে। নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সেই নির্বাচন হবে।

এতে বিশেষ অতিথি উপস্থিত ছিলেন মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক সাগর প্রধান, সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক রানা, মহানগর স্বেচ্ছাসেবকদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জিয়া প্রমুখ।