মামুন মাহমুদের উপর হামলা : নেপথ্যে কারিগর কারা?

151
মামুন মাহমুদের উপর হামলা : নেপথ্যে কারিগর কারা?

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে হত্যার উদ্দেশে যে হামলা করা হয়েছে এর নেপথ্য কারিগর কারা? কাদের নিদের্শে তার উপর এই হামলা করা হয়েছে? এ নিয়ে এরই মাঝে জেলার বিভিন্ন থানার বেশ কয়েকজনের দিকে উঠেছে অভিযোগের তীর।

কেননা এডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারকে দল থেকে বহিস্কার করার পর মামুন মাহমুদ অল্প সময়ে নারায়ণগঞ্জে বিভিন্ন থানার আহবায়ক কমিটি গঠন করেছেন। এ নিয়ে প্রায় প্রত্যেকটি থানায়ই দলের ভেতর চলছে চরম বিরোধ। তাই কারা তাকে এমন নির্মম ভাবে হত্যা করতে চাইলো সেটা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে খুঁজে বের করা জরুরী বলে মনে করেন বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।

তবে যেহেতু মামুন মাহমুদকে ছুরিকাঘাত করার সময় চার জনের একজনকে হাতেনাতে ধরে পুলিশে সোপর্ধ করা হয় তাই এই হত্যা প্রচেষ্টার সঙ্গে কারা জড়িত এটা বের করা কঠিন কিছু হবে না বলেও মনে করেন নারায়ণগঞ্জের সচেতন মহল।

এদিকে এরই মাঝে ফতুল্লার ছাত্রদল নেতা সাগর সিদ্দিকীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বলা হচ্ছে হামলাকারীদের যে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে সে সাগর সিদ্দিকীর নাম বলেছে। সে সাগর সিদ্দিকী ছাড়া আর কাউকে চিনে না। আর সাগর সিদ্দিকী গ্রেফতার হওয়ার পর তিনটি নাম বেরিয়ে এসেছে।

এরা হলেন জেলা বিএনপি থেকে বহিস্কৃত এক শীর্ষ নেতা, ফতুল্লা এবং রূপগঞ্জের দুই স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা। এ বিষয়ে আরো নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক জেষ্ঠ্য নেতা বলেন, কিছুদিন আগে জেলা বিএনপি থেকে বহিস্কার হয়েছেন একমাত্র এডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার, আর ফতুল্লা ও রূপগঞ্জের দুই স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা হতে পারেন রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী এবং আনোয়ার সাদাৎ সায়েম।

তবে এ বিষয়ে রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার জানা মতে সাগর সিদ্দিকী ঢাকায় ছাত্রদলের একটি মিছিল করার পর সে মামুন মাহমুদকে দেখতে যায়। সেখান থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এখানে একটি অনলাইন পত্রিকায় আমাকে ও আমার সাথে আরো দুইজনকে ইঙ্গিত করে লিখা হচ্ছে। যা কিনা খুবই দু:খজনক। আমরা এই ঘটনার সুষ্টু তদন্ত চাই এবং অবিলম্বে অপরাধীদের গ্রেফতারের দাবি জানাই।

অপরদিকে কয়েকদিন আগে সিদ্ধিরগঞ্জে মামুন মাহমুদের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত থানা বিএনপির একটি সম্মেলন পন্ড হয়ে যায়। ওই সম্মেলন পন্ড হওয়ার পেছনে সাবেক এমপি আলহাজ¦ মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন এবং নাসিক ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইকবালের হাত ছিলো বলে তখন প্রচার হয়েছিলো। তাই এবার এ ঘটনায় এই দুইজনের দিকেও অভিযোগের আঙ্গুল তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

ঘটনার পর পরই এই দুই নেতার দিকে উঠে অভিযোগের আঙ্গুল। কিন্তু হামলাকারীদের একজন গ্রেফতার হওয়ায় পরিস্থিতি পাল্টে যায়। তাই হামলায় আরো যে তিনজন জড়িত তাদেরকে চিহ্নিত করা গেছে এবং তাদেরকে গ্রেফতার করার পর এর নেপথ্যে কারা রয়েছে সেটা পরিস্কার হয়ে যাবে বলে দাবি বিএনপি নেতাকর্মীদের। মামুন মাহমুদের উপর হামলার সময় আড়াইহাজার থানা বিএনপির সভাপতি ইউসুফ আলী মেম্বার, সোনারগাঁ থানা বিএনপির নেতা মোশারফ হোসেন তার সঙ্গে ছিলেন।

এ বিষয়ে সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ¦ মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, খুবই নিন্দনীয় কাজ হয়েছে। আমি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং অবিলম্বে সুষ্টু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার করে দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।

এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলায় বিএনপির ভেতরে যে কোন্দল চলছে সেটা নিরসনে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন না বিএনপির মহাসচিব সহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। যার ফলে জেলার প্রত্যেকটি থানায় এখন নেতায় নেতায় তীব্র কোন্দল চলছে। আড়াইহাজারে যে কমিটি গঠন করা হয়েছে সেই কমিটি থেকে দলের পুরোনো অধিকাংশ নেতাকেই মাইনাস করা হয়েছে। ফলে আরো অগেই এই থানার সিনিয়র নেতারা অনেকে বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেছেন।

একই অবস্থা বিরাজ করছে সোনারগাঁ, রূপগঞ্জ, ফতুল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জেও। তাই এই ঘটনার পেছনে আসলে কারা জড়িত এটা সুষ্ঠু তদন্ত করে বের করতে হবে। সবার একটাই প্রত্যাশা উদোর পিন্ডি বুদোর ঘারে যেনো চাঁপানো না হয়। প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি চান নারায়ণগঞ্জের সর্বস্তরের সাধারন মানুষ।