চরম কোন্দলে বিপর্যস্ত না.গঞ্জ জেলা বিএনপি

188

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে সাংগঠনিক ভাবে আরো নাজুক অবস্থার দিকে ধাবিত হচ্ছে বিএনপি। এ মুহুর্তে জেলায় বিএনপিকে নেতৃত্ব দেয়ার মতো কোনো হেভিওয়েট নেতা মাঠে নেই। নাসিক নির্বাচনে অংশ নেয়ায় এরই মাঝে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক এডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।

তাকে বহিস্কার করার পর থেকে সারা জেলায় এই দলের ভেতর তুমুল বিরোধ শুরু হয়েছে। এরই মাঝে রাজধানীতে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদ ছুরিকাহত হয়েছেন। এই হামলাকে ঘিরে এরই মাঝে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিনে পরিবারের দিকে তোলা হয়েছে অভিযোগের আঙ্গুল। পুলিশ গিয়াস উদ্দিনের বাড়িতে অভিযানও চালিয়েছে।

কিন্তু গিয়াস উদ্দিন জানিয়েছেন, কেবল মাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তার ছেলের নাম বলা হচ্ছে। রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীরা তাকে হয়রানী করার জন্য পুলিশকে ব্যবহার করছে বলেনও জানান তিনি।

মামুন মাহমুদের সঙ্গে তার রাজনৈতিক বিরোধ রয়েছে বিধায়, এ বিরোধকে পুজি করে এখন তার ছেলেকে হয়রানী করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এই রমজান মাসে পুলিশ কারো দ্বারা বায়াস্ট বা প্রভাবিত হয়ে যাতে ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত না করেন তার জন্য তিনি পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান।

এদিকে মামুন মাহমুদের উপর হামলার পর সারা নারায়ণগঞ্জ জেলায় বিএনপির একটি বড় অংশের নেতাকর্মীদের মাঝে আতংক বিরাজ করছে বলে জানা গেছে। কেননা জেলার প্রত্যেক থানায়ই কমিটি গঠন করতে গিয়ে পরোক্ষভাবে বিরোধে জড়ান মামুন মাহমুদ। এডভোকেট তৈমুরকে দল থেকে বহিস্কার করার পর প্রায় সব থানায়ই মামুন মাহমুদ একতরফা কমিটি গঠন করেন। তিনি তার পছন্দের লোকদের দিয়ে কমিটি গঠন করার কারনে বহু নেতা কর্মী দল থেকে বাদ পরে যায়।

ফতুল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জ, রূপগঞ্জ, আড়াইহাজার, সোনারগাঁ সব জায়গায় এক তরফা কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে দাবি তৃণমূল নেতাকর্মীদের। এতে মামুন মাহমুদের উপর নাঁখোশ হন বিএনপির বহু নেতাকর্মী। তাই এই ঘটনার পর মামুন বিরোধী সকলের মাঝেই আতংক বিরাজ করছে বলে জানা গেছে। ফলে এই ঘটনার পর বিএনপি আরো শক্তি হারাবে বলেই ধারনা করছে দলটির মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

এদিকে, আগামী বছরই জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সারা দেশে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। তারা কেয়ার টেকার সরকারের দাবিতে এই আন্দোলন শুরু করবে বলে জানা গেছে। অথচ রাজধানীর একেবারে পাশের জেলা হওয়া সত্ত্বেও দিনে দিনে আরো দূর্বল হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি। বর্তমানে যে অবস্থা চলছে তা চলমান থাকলে সরকারী দলের বিরুদ্ধে আন্দোলন করাতো দূরের কথা, নিজেরা নিজেরা লড়াই করেই তারা শেষ হয়ে যাবে। তাই এরই মাঝে নারায়ণগঞ্জ জেলার সর্বত্র বিএনপির ভেতর চরম হতাশা ছড়িয়ে পড়েছে।