১১ মাস পরে যেভাবে বাবার কোলে ফিরল দুই বোন

175
১১ মাস পরে যেভাবে বাবার কোলে ফিরল দুই বোন নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ: ইতি (৯) ও মীম (৫) দুই বোন। দিনাজপুর জেলার কাহারোল থানার পাইকপাড়া গ্রামের কৃষক ইদ্রিস আলীর দুই কন্যা। ইদ্রিস আলী শাহনাজ বেগম (২৭) ও কন্যাদের নিয়ে সুখেই দিন কাটছিল। হঠাৎ শাহনাজ বেগমের মাথায় ধনী হবার ভুত চাপে। এরই মধ্যে তিনি পড়েন দালালের খপ্পড়ে। স্বামীকে না জানিয়ে দুই কন্যাকে নিয়ে তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে আসেন। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় শাহনাজ তার মা আকলিমা বেগমের কাছে দুই মেয়েকে রেখে বিদেশে পাড়ি জমান। এদিকে এর কিছুই জানতেন না ইদ্রিস। কন্যাদের হারিয়ে তিনি পাগলপ্রায়।

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ: ইতি (৯) ও মীম (৫) দুই বোন। দিনাজপুর জেলার কাহারোল থানার পাইকপাড়া গ্রামের কৃষক ইদ্রিস আলীর দুই কন্যা। ইদ্রিস আলী শাহনাজ বেগম (২৭) ও কন্যাদের নিয়ে সুখেই দিন কাটছিল। হঠাৎ শাহনাজ বেগমের মাথায় ধনী হবার ভুত চাপে। এরই মধ্যে তিনি পড়েন দালালের খপ্পড়ে।

স্বামীকে না জানিয়ে দুই কন্যাকে নিয়ে তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে আসেন। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় শাহনাজ তার মা আকলিমা বেগমের কাছে দুই মেয়েকে রেখে বিদেশে পাড়ি জমান। এদিকে এর কিছুই জানতেন না ইদ্রিস। কন্যাদের হারিয়ে তিনি পাগলপ্রায়।

কৃষিকাজ ছেড়ে তিনি নারায়ণগঞ্জে চলে আসেন তাদের খোঁজে। নগরীতে রিকশা চালাতে শুরু করেন। এগলি ওগলিতে খুঁজে হয়রান। অবশেষে তিনি গত ১০ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানায় স্বজনদের নিখোঁজ জানিয়ে একটি জিডি করেন।

শুরু হয় পুলিশের তদন্ত। মাত্র ৫ দিনের তদন্তে সন্ধ্যান মিলে দুই কন্যার। শাশুড়ি আকলিমা বেগম তাকে ফোন করে জানান, তোমার স্ত্রী শাহনাজ তোমাদের দুই কন্যাকে আমার কাছে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় রেখে গেছে। এ কথা বলে শাশুড়ি ফোন বন্ধ করে দিলে দুই কন্যাকে পাওয়ার আশায় নারায়ণগঞ্জে ছুটে আসেন ইদ্রিস আলী। কিন্তু শাশুড়ির ঠিকানা তার জানা নেই। পরে পুলিশ প্রযুক্তির ব্যবহার করে তাদের সন্ধান বের করেন।

ফলে ১১ মাস পরে শনিবার (১৬ এপ্রিল) বাবা-মেয়েদের দেখা মিলে। পুলিশ তাদের উদ্ধার করে ইদ্রিস আলীর কোলে ফিরিয়ে দেন।

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক-সার্কেল নাজমুল হাসান জানান, গত ১০ এপ্রিল ফতুল্লা মডেল থানায় এসে ইদ্রিস আলী অভিযোগ করেন, তার পরিবারের তিনজন সদস্য দিনাজপুরের গ্রামের বাড়ি থেকে গত বছরের মে মাস থেকে নিখোঁজ রয়েছে। তার শাশুড়ি ফোন করে ফতুল্লার পঞ্চবটি এলাকার ঠিকানা দিয়েছেন। এ জন্য তিনি দিনাজপুর থেকে ফতুল্লায় এসে একটি গ্যারেজে থেকে রিকশা চালিয়ে স্ত্রী ও দুই কন্যা সন্তানকে খুঁজে বেড়াচ্ছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও জানান, বিষয়টি জানতে পেরে তিনি ইদ্রিস আলীর কাছ থেকে একটি জিডি গ্রহণ করে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুজ্জামানকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। মাত্র পাঁচ দিনের মাথায় একটি ফোন নম্বরের সূত্র ধরে ইদ্রিস আলীর শাশুড়ি আকলিমার অবস্থান শনাক্ত করে থানা পুলিশ। পরে ফতুল্লার মুসলিমনগর এলাকা থেকে তাকে খুঁজে বের করে। এরপর পুলিশ আকলিমার কাছ থেকে জানতে পারে তার মেয়ে শাহনাজ দুই শিশু সন্তান ইতি (৯) ও মীমকে (৫) তার কাছে রেখে বিদেশ চলে গেছেন। তবে কোন দেশে গেছেন তা জানেন না তিনি।

জেলা পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও জানান, উদ্ধার করা দুই শিশুকে বাবা ইদ্রিস আলীর কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি।

এদিকে দীর্ঘ প্রায় এক বছর পর হারানো দুই কন্যাকে ফিরে পেয়ে যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছেন ইদ্রিস আলী। অশ্রুসিক্ত নয়নে পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘আমার হারিয়ে যাওয়া দুই মেয়েকে আমি অনেক খুঁজেছি, কিন্তু পাইনি। পুলিশ আমার সন্তানদের খুঁজে বের করে দিয়েছে। এ জন্য আমি অনেক খুশি এবং স্বস্তি বোধ করছি। পুলিশ বাহিনীকে আমি কৃতজ্ঞতা জানাই।’