সামনে কঠিন সময়, কতোটা প্রস্তুত জেলা ও মহানগর আ.লীগ

148

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

দেশের রাজনীতিতে পরিস্থিতি বদলাচ্ছে বলে মনে করে সাধারণ জনগন। দেশের সর্বস্তরের সাধারন মানুষ এবং বিদেশী শক্তি এ দেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চাইছে বলে জানা গেছে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনও একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার প্রত্যয় ব্যাক্ত করেছে।

তবে যেটা নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে সেটা হলো বড় দল বিএনপি সহ অন্য অনেক দল এই সরকারের অধিনে নির্বাচন মানকে রাজী নয় এবং তারা ইভিএমে ভোট চায় না। তাই এই দুটি ইস্যু নিয়ে আগামী নির্বাচনের আগে দেশে তুমুল আন্দোলন গড়ে উঠতে পারে। কিন্তু সরকার যদি আন্দোলন না চায় এবং সকলের দাবি মেনে নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাবস্থা করে তাহলে তাদেরকে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পরতে হতে পারে বলে অনেকে মনে করেন। তাই আগামী দিনের আন্দোলন এবং নির্বাচন মোকাবেলা করার জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আসলে কতোটুকু প্রস্তুত এই প্রশ্ন তুলছে অনেকে।

নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে এখন বিএনপির তুলনায় অনেক বেশি কোন্দলে জর্জরিত আওয়ামী লীগ। এই জেলার পাঁচটি আসনের মাঝে দুটি আসন রয়েছে জাতীয় পার্টির দখলে। আর প্রত্যেকটি আসনে এমপি গ্রুপ বনাম অন্যদের পৃথক গ্রুপ সক্রিয় রয়েছেন। এছাড়া এক মাত্র নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের ফতুল্লা থানা ছাড়া জেলার বাকী সব কয়টি থানায় আওয়ামী লীগের ভেতরে বিভক্তি রয়েছে। তবে এমপিদের দাপটে এখনো এই বিভক্তি চাঁপা পড়ে থাকলেও নির্বাচনে প্রাক্কালে বিভক্তি আবারও মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে।

এছাড়া দীর্ঘ তেরো বছর ধরে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকায় এই দলের সকল নেতাকর্মীই এখন স্বচ্ছল জীবনযাপন করছেন। অনেকেই বাড়ি গাড়ির মালিক হয়েছেন। তাই তারা সহজে কোনো রকম ঝামেলায় জড়াতে চাইবেন না। সেই ক্ষেত্রে বিরোধী দলের আন্দোলন দমাতে কেবলই পুলিশ প্রশাসনের উপর নির্ভর করতে হবে। তবে পুলিশের উর্ধ্বতন অফিসাররা কতোখানি রিস্ক নেবেন সেই প্রশ্নও রয়েছে।

কেননা তারা বিরোধী দলগুলির প্রতি কেমন আচরণ করছেন সেদিকে রয়েছে যুক্তরাস্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহ বিদেশীদের নজর। তাই এবার বিরোধী দলগুলিকে প্রশাসন নিষ্ঠুর কায়দায় দমন নাও করতে পারে। আর সেই ক্ষেত্রে বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা অধিক হারে মাঠে নামতে পারে। তাই নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগরে আওয়ামী লীগ কিভাবে বিএনপিকে মোকাবেলা করবে সেই প্রশ্নের সঠিক উত্তর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বরং অনেকটা আয়েসী ভঙ্গিতে চলছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তারা মনে করেন অনন্তকাল ধরে তারাই ক্ষমতায় থাকবেন এবং কেউ তাদেরকে হঠাতে পারবে না।

এদিকে এরই মাঝে দেশের রাজনীতিতে পরিবর্তনের হাওয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এবার প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪১তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ব্যাপক ভাবে পালন করেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। দিবসটি উপলক্ষ্যে দলটির সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মাঠে নামতে দেখা গেছে। এবার তারা আগে ভাগে কিছু প্রস্তুতিমূলক সভাও করেছেন। আর ৩০মে সারা নারায়ণগঞ্জে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে দিবসটি পালন করতে দেখা গেছে। মিলাদ-মাহফিল ও খিচুরি বিতরনের মধ্য দিয়ে এভাবে অনেক বছর পরেই দিবসটি পালন করলো বিএনপি। এতোদিন বিএনপি যেকোনো অনুষ্ঠানে সরকারী দল বিশেষ করে পুলিশ বাধা দিতো। কিন্তু এবার দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র।