আলোচিত ব্যবসায়ী নেতা সাব্বির আলম খন্দকার হত্যা মামলায় নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খানসহ সব আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোমিনুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।
সকাল ১১টায় জাকির খানকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় ঘোষণার সময় আদালত প্রাঙ্গণে বিএনপি নেতাকর্মী এবং জাকির খানের হাজারো সমর্থক ভিড় করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রায়ে খালাসের ঘোষণার পর আদালত প্রাঙ্গণে উল্লাসে ফেটে পড়েন বিএনপি নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।
রায় ঘোষণার সময় মামলার বাদী অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।
২০০৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জের মাসদাইর এলাকায় গার্মেন্টস সেক্টরে সন্ত্রাস এবং চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন ব্যবসায়ী নেতা সাব্বির আলম খন্দকার।
ঘটনার পর নিহতের বড় ভাই এবং তৎকালীন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার বাদী হয়ে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনকে প্রধান আসামি এবং জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খানসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে ফতুল্লা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত চলাকালে মোট ৯ জন তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হয়। সিআইডি’র এএসপি মসিহউদ্দিন দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০০৬ সালের ৮ জানুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটে প্রধান আসামি গিয়াস উদ্দিনসহ কয়েকজনকে অব্যাহতি দিয়ে জাকির খান এবং তার দুই ভাইসহ মোট আটজনকে আসামি করা হয়।
চার্জশিট দাখিলের পর মামলার বাদী তৈমূর আলম খন্দকার চার্জশিটের বিরুদ্ধে নারাজি পিটিশন দাখিল করেন। তিনি দাবি করেন, ‘গিয়াস উদ্দিনই হত্যাকাণ্ডের মূল নায়ক এবং তদন্ত কর্মকর্তা একটি গোঁজামিলের চার্জশিট দাখিল করেছেন।
তবে, ২০১১ সালে তৈমূর আলম খন্দকার তার নারাজি পিটিশন প্রত্যাহার করে নেন। এরপর মামলার বিচার কার্যক্রম মূল চার্জশিট অনুযায়ী চলতে থাকে।
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট খন্দকার আজিজুল হক হান্টু জানান, মামলায় দাখিলকৃত প্রমাণ এবং সাক্ষ্য-প্রমাণ যথেষ্ট ছিল না। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত সব আসামিকে খালাস দেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবীরা দাবি করেন, মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল। তারা অভিযোগ করেন, তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতা এবং সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের নাম এ মামলায় রাজনৈতিকভাবে জড়িয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হয়েছিল।
জাকির খানের বিরুদ্ধে সর্বমোট ৩৩টি মামলা ছিল। এর মধ্যে ৩০টি মামলায় তিনি ইতোমধ্যে খালাস পেয়েছেন। বাকি তিনটি মামলার মধ্যে দুইটিতে তিনি জামিনে আছেন। এই রায়ের মাধ্যমে তার মুক্তিতে আর কোনো আইনি বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা, এদিকে জাকির খান মুক্তি পাওয়ায় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়ার নেতৃত্বে শহরে আনন্দ মিছিল হয়েছে




