অসুস্থ কালাম, তৈমুর বহিস্কার...

সাখাওয়াতের চেয়ে যোগ্য কে ছিলো?

121
সাখাওয়াতের চেয়ে যোগ্য কে ছিলো?

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ্য নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক এমপি এডভোকেট আবুল কালাম, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বহিস্কৃত এড. তৈমুর আলম খন্দকার। এমতাবস্থায় এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের চেয়ে যোগ্য আর কে আছেন মহানগর বিএনপির দায়িত্ব নেয়ার মতো এ প্রশ্ন এখন বিএনপির মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের।

তবে, এটা সত্য যে বিএনপির জন্মলগ্ন থেকে কালাম পরিবারের হাতে ছিলো নগর বিএনপির দায়িত্ব। এবারই প্রথম সেই প্রথা ভেঙ্গে রাজপথের লড়াকু সৈনিক এড. সাখাওয়াতের হাতে মহানগর বিএনপির দায়িত্বভার তুলে দেয়ায় কেন্দ্রকে সাধুবাদ জানিয়েছে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।

তাদের মতে, দল ক্ষমতায় নেই ১৪ বছর। দীর্ঘ এ সময়ে অনেকেই চার দেয়ালের ভেতরে থেকে নামকা ওয়াস্তে দলীয় কর্মসূচী পালন করেছেন। রাজপথে শক্ত অবস্থানে দাড়াতে পারেন নি। তবে, ব্যতিক্রম ছিলো শুধু এড. সাখাওয়াতই। যিনি গত ১৪টি বছর ধরে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির অতন্ত্র প্রহরীর দায়িত্ব পালন করছিলেন।

এদিকে, নয়া কমিটির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু তথা সর্বজন স্বীকৃতি পাকনা টিপু এতোদিন কালামপন্থী নেতা হিসাবেই পরিচিত ছিলেন এবং তিনি এক সময় এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের তীব্র সমালোচকও ছিলেন। এখন সেই সাখাওয়াতের সাথেই জুটি বেধে দলকে এগিয়ে নিতে হবে পাকনা টিপুকে। এটা নিয়ে অবশ্য স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোতে এখন তীব্র সমালোচনাও চলছে।

তবে এটাও সত্য যে, রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। সেই টিপুকে সঙ্গে নিয়েই এবার কমিটি এনেছেন সাখাওয়াত। এটা সাখাওয়াতের আরো একটি সফলতা। এছাড়া আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে সব সময়ই মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয় দেখা গেছে। তবে তার বিরুদ্ধে নাকি একটি মাত্র মামলা রয়েছে তাই এটা নিয়েও এখন সমলোচনা চলছে।

এতো কিছুর পরেও বিএনপির অধিকাংশ নেতাকর্মী মনে করেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগরের রাজনীতিতে একটি পরিবর্তন দরকার ছিলো। এই মুহুর্তে সাখাওয়াতের কোনো বিকল্পও ছিলো না। এছাড়া অনেকে মনে করেন এডভোকেট তৈমুর পরিবার থেকে কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের একটি গ্রহনযোগ্যতা ছিলো।

কিন্তু তিন কারনে বাদ পড়েছেন তিনি। ১) বিগত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে তিনি তার ভাই এডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারের পক্ষে প্রচার চালিয়েছেন। সেই প্রচারের ভিডিও ক্লিপিং রয়েছে। সেই হিসাবে ভাইয়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও বাদ পরেছেন।

২) এক সময় তিনি বলেছিলেন কেন্দ্রীয় নেতারা নাকি পদ দেয়ার দোকান খুলে বসেছেন। অথচ তাকে ও তার ভাই এডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারকে দল বার বার বড় বড় পদ দিয়েছে। কিন্তু তারা কয় টাকা দিয়ে পদ এনেছেন সেই প্রশ্ন উঠেছে। তার এই বক্তব্য কেন্দ্রের নজরে আনা হয়েছে।

৩) তার বিরুদ্ধে একটি বিতর্কিত মামলা রয়েছে যে মামলায় তিনি সর্বশেষ কারাবরণও করেছেন। মূলত এই তিন কারনেই মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বাদ পরেছেন বলে দাবী বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের।

অপরদিকে কালাম পরিবার থেকে আতাউর রহমান মুকুল এবং আবুল কাউসার আশার পদত্যাগের বিষয়টি নিয়েও বিভিন্ন মহলে নানা আলোচনা চলছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো এডভোকেট আবুল কালাম এবং তার পিতা জালাল হাজীর যে গ্রহনযোগ্যতা নারায়ণগঞ্জের সাধারন মানুষের মাঝে ছিলো সেই গ্রহনযোগ্যতা মুকুল আর আশার আছে কিনা?

সাবেক এমপি কালাম যে, শারীরিক কারনে আর রাজনীতি করতে পারছেন না সেটাতো পরিস্কার। আর কালামের পর মহানগর বিএনপিতে বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় সাখাওয়াৎ হোসেন খান এটা বিশ^াস করেন সকলেই। তাই তারা পদত্যাগ করার পরেও সাখাওয়াত আর টিপু যদি দৃঢ়তার সহিত দল পরিচালনা এবং ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটিগুলি করতে পারেন তাহলে পরিস্থিতি তারা নিয়ন্ত্রনে নিতে সক্ষম হবেন বলে মনে করেন অনেকে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি এখন কোন দিকে মোড় নেয় সেটাই দেখার বিষয়।