সরকারকে বিদায় করে গণমানুষের দাবি প্রতিষ্ঠা করবো – গিয়াস উদ্দিন

32
সরকারকে বিদায় করে গণমানুষের দাবি প্রতিষ্ঠা করবো - গিয়াস উদ্দিন

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেছেন,একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে বলতে চাই, মুক্তিযুদ্ধ করে এই দেশ স্বাধীণ করেছি। এই দেশ কারো ব্যক্তিগত নয়, এই দেশ জনগনের। কাজেই জনগনের যে দাবি দাওয়া বিএনপি প্রণয়ন করেছে তা বাস্তবায়ন করে ইনশ্আাল্লাহ নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করে এই সরকারকে বিদায় করে গণমানুষের দাবি ইনশ্আাল্লাহ বিএনপি প্রতিষ্ঠা করবো।

উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অধিনস্থ আদালত এবং সরকারের অবজ্ঞা, গায়েবী মামলায় নির্বিচারে গ্রেফতার, মিথ্যা মামলা ও পুলিশি হয়রানী, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, বিদ্যুতের লোড শেডিং, আওয়ামী সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতির প্রতিবাদে এবং ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবীতে আয়োজিত জনসমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।

গত শুক্রবার (১৯ মে) বিকেলে কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির উদ্যোগের চাষাড়ায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এই জনসমাবেশের আয়োজন করা হয়।

গিয়াস উদ্দিন বলেন, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ আজ দিশেহারা, তাই মানুষকে মুক্ত করার জন্য, তাদেরকে স্বস্তি দেয়ার জন্য আমরা আন্দোলর করছি। সাড়ে ১৪ বছর যাবৎ এই সরকার ক্ষমতায়, তারা ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন দুর্ণীতির মাধ্যমে দেশের মানুষের অর্থ-সম্পদ লুটপাট করে আজকে জনগনের জীবনকে দুর্বিষহ করে ফেলেছে। অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অর্থ-সম্পদ নিয়ে তাদেরকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিয়ে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে জনগনের দুর্ভোগ-কষ্ট বৃদ্ধি করেছে।

তিনি বলেন, এই সরকারের এক মন্ত্রী আজকে প্রকাশ্যে বলছে, বাজারে গেলে মানুষ পণ্য কিনবে তো দুরের কথা উল্টো চোখের পানি ফেলে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে মানুষ আজকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে পারেনা। এই সরকারের এই মন্ত্রীসহ এমন ব্যক্তিরা মন খুলে বলতে শুরু করেছে, যে বিগত নির্বাচনগুলো যেভাবে হয়েছে সেখানে জনগন তাদের ভোটের অধিকার প্রয়োগ করতে পারে নাই। এই সরকার আবারও ঐরকম একটা নীল নকশার নির্বাচন করতে চায়। আজকে এই দাবি শুধু আমরাই করছি, সরকারের ভেতরে যারা আছে তারাও সরকারের দুর্নীতিকে স্বীকার করে আজকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলছে।

তিনি আরও বলেন, গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে জনগনের ভোগান্তি আরও বাড়াচ্ছে এই সরকার। গ্যাসের দাম কেন বৃদ্ধি পেয়েছে? কারণ বিদ্যুৎ ক্ষেত্রকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছে এই সরকার। দুর্নীতিবাজরা কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি করে, যার কারণে বিদ্যুতের দাম কিছুদিন পরপরই বৃদ্ধি করে এই সরকার। এই দুর্নীতির কারণে আজকে ক্ষতিগ্রস্থ দেশের জনগন। ক্ষমতায় যারা আছে তাদের দুর্নীতির কারণে কমমূল্যে আমদানী করে বেশীমূল্যে বাজারে বিক্রি করতে হয়। আর দুর্ভোগ পোহাতে হয় দেশের জনগনকে। এই কারণে বিএনপি আজকে আন্দোলন-সংগ্রামের ডাক দিয়েছে।

সাবেক এ সাংসদ বলেন, মিথ্যা-গায়েবী মামলা দিয়ে বিএনপির লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীকে আজকে বাড়িহারা করে ফেলেছে। এমতাবস্থায় হাইকোর্ট থেকে জামিনের নির্দেশ নিয়ে যখন আমরা নিম্ন আদালতে আসি, তখন নিম্ন আদালত জামিন না মঞ্জুর করে আমাদের নেতাকর্মীদের কারাগারে প্রেরণ করে। কিন্তু আগে এমনটা হতো না, উচ্চ আদালতের প্রতি সম্মান দেখিয়ে নিম্ন আদালত জামিন দিয়ে দিতো। এর কারণ হচ্ছে, সরকার এতো অন্যায়-অপরাধ করেছে যে জনগন তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তাই তারা বুঝতে পেরেছে যে, নির্বাচন যদি হয়, জনগন যদি ভোট দিতে পারে তাহলে কোনোদিন তারা ক্ষমতায় থাকতে পারবেনা। তারা জনগনকে ভয় পায়, তাই এই ভয়ে ভীত হয়ে তারা আবার ২০১৪ সালের মতো ভোটারবিহীন বা ২০১৮ সালের মতো দিনের ভোট রাতে করে আবার জনগনের অধিকার খর্ব করে তারা আবার ক্ষমতায় থাকতে চায়। সেই কারণে তারা ষড়যন্ত্র করছে, আরেকটা প্রহসনের নির্বাচন করার।

মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খানের সভাপতিত্বে এ জনসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান, বর্তমান সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকন, যুগ্ম আহবায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজীব, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. টিপু, যুগ্ম আহবায়ক এড. জাকির হোসেন, এড. হুমায়ন কবির, মনির হোসেন খান, রিপন, মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক সাগর প্রধান, মোয়াজ্জেম হোসেন মন্টি, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি প্রমুখ।