এবার শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে জনগনকে সম্পৃক্ত করতে চায় বিএনপি...

‘সকল অধিকার ফিরে পাবে দেশের ১৭ কোটি মানুষ’

64
‘সকল অধিকার ফিরে পাবে দেশের ১৭ কোটি মানুষ’

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

নারায়ণগঞ্জে বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে ও তাদের উপরে যতোই হামলা-মামলা হোক না কেনো যেকোনো মুহুর্তে বদলে যেতে পারে এই জেলার সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি এমনটাই দাবি দলটির তৃণমূল নেতাকর্মীদের। ভোটের অধিকারের জন্য মাঠে নেমে আসতে পারে বিএনপির নেতাকর্মীরা সহ সাধারন মানুষও। কারন মানুষ তাদের ভোটের অধিকার ফিরে পেতে চায়। গতকাল এ প্রতিনিধির সাথে এমন প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেছেন এই জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেছেন, যদিও এই জুলুমবাজ সরকার এবং সরকারী দলের লোকেরা আমাদের দলের নেতাকর্মীদের উপর নানা ভাবে জুলুম নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে তার পরেও আমি মনে করি এখন আর আগের সেই অবস্থা নেই। আগামী দিনে বিএনপি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ডাক দেবে এবং সেই আন্দোলনে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নারায়ণগঞ্জের সাধারন মানুষও যোগ দেবে। এতে গণমানুষের ব্যাপক উপস্থিতিতে দেশে গণঅভ্যুথ্যান হতে পারে। তাই আমরা আশা করবো সেই ধরনের কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আগেই সরকার একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের রুপরেখা ঘোষনা করবে এবং দেশকে নির্বাচনমুখী করবে। কারন দেশের মানুষ এই সরকারকে আর ছাড় দেবে না বলেই আমরা মনে করি। তাই যেকোনো মুহুর্তে বদলে যেতে পারে দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি।

একই রকম প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক এডভোকেট সাখাওয়াৎ হোসেন খান। তিনি বলেন, আপনারা জানেন বাংলাদেশের মানুষের সাথে গণতন্ত্রকামী বিশ্বও এই দেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চাইছে। তার জন্য এ মাসেই মার্কিন যুক্তরাস্ট্র এবং ইউরোপিয় ইউনিয়ন থেকে উচ্চ পর্যায়ের অন্তত চারটি প্রতিনিধি দল আসছে। আর দেশের মানুষতো তাদের ভোটের অধিকার এবং মানবাধিকার হারিয়ে এই ফ্যাসিষ্ট সরকারকে বিদায় জানানোর জন্য এক পায়ে দাড়িয়ে আছে। তাই আগামী দিনের আন্দোলনে দেশের সাধারন মানুষও যোগ দেবে। আমরা আন্দোলন করবো এবং সেই আন্দোলনে সাধারন মানুষকেও সম্পৃক্ত করবো। দেশের মানুষ এই সরকারকে একটি অবাধ ও সুষ্টু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কালিন তদারকি সরকারের হাতে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

তিনি আরো বলেন, আপনারা জানেন এই সরকারের পররাস্ট্র মন্ত্রী কিছুদিন আগে বলেছিলেন তিনি নাকি পাশর্^বর্তী রাস্ট্র ভারত গিয়ে বলে এসেছেন আবারও আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনতে। কিন্তু সর্বশেষ ভারত কি বলছে? ভারতের পররাস্ট্র মন্ত্রী জয়শংকর বলেছেন তারা প্রতিবেশী দেশের সব দলের সঙ্গে কাজ করত চান। কোনো বিশেষ দলের সঙ্গে নয়। তাই আমরা মনে করি ভারতও পরিস্কার ম্যাসেজ দিয়েছে যে তারাও এ দেশে একটি অবাধ ও সুষ্টু নির্বাচনই দেখতে চায়। তাই আমরা আশা করি এবারের নির্বাচনে দেশের মানুষের আশা আকাংখার সঠিক প্রতিফলন ঘটবে। মানুষ তাদের ভোটের অধিকার ফিরে পাবে। সরকার একগুয়েমী করলে যেকোনো সময় বদলে যাবে দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি। গণআন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন বলেন, আপনারা দেখেছেন এই সরকারের লোকজন ক্ষমতা হারানোর ভয়ে কতোটা উন্মাদের মতো আচরন করছে। আমার বাড়িতে দলের নেতাকর্মীরা ফুল দিতে এলে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে। কিন্তু এসব করে সরকার পার পাবে বলে মনে করি না। আমরাও দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন থেকে এক চুলও নড়বোনা। এবার সর্ব স্থরের জনগনকে সঙ্গে নিয়ে আমরা তুমুল আন্দোলন গড়ে তুলবো ইনশাআল্লাহ।

অপরদিকে এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, আন্দোলনকে সামনে রেখে আমরা নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপিকে ঢেলে সাজিয়েছি। একেবারে ওয়ার্ড থেকে থানা পর্যন্ত সব কয়টি ইউনিট কমিটি গঠন করেছি। এরই মাঝে আমরা আন্দোলনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। তাই আগামী দিনে সরকারের কোনো পাতা ফাঁদে পা না দিয়ে নারায়ণগঞ্জের জণগনকে সঙ্গে নিয়ে একটি তুমুল আন্দোলন গড়ে তুলবো ইনশাআল্লাহ। আমি মনে করি সরকারের পাপের বোঝা এতোটাই ভারি হয়েছে যে তারা নিজেদের পাপের ভার বহন করতে না পেরে ডুবে যাচ্ছে। এবারের আন্দোলনে এ দেশের মানুষ মুক্তি পাবে ইনশাআল্লাহ।

এ বিষয়ে ফতুল্লা থানা বিএনপির সহ-সভাপতি আলহাজ্ব শহীদ উল্লাহ বলেন, একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য চারিদিকে গণমানুষের যে জাগরন ঘটেছে তাতে সরকার সোজা পথে না হাটলে এই সরকারের বিদায় এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। এবার আর ১৭ কোটি মানুষকে এই সরকার অধিকার বঞ্চিত করে রাখতে পারবে না ইনশাআল্লাহ। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে আগামী নির্বাচন হবে অবাধ ও সুষ্ঠু। দেশের মানুষ ফিরে পাবে তাদের ভোটের অধিকার।