শেষ মুহুর্তে অভিমানে কেঁদে ফেললেন কাশিপুর আ:লীগের সাবেক সভাপতি দুলাল

261
শেষ মুহুর্তে অভিমানে কেঁদে ফেললেন কাশিপুর আ:লীগের সাবেক সভাপতি দুলাল

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

কাশিপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের অনেক আগেই নির্ধারিত হয়ে ছিলো সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এমন দাবী তৃণমূল নেতাকর্মীদের। তাদের মতে, ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম সাইফ উল্লাহ বাদলের ঘনিষ্ঠজন হিসাবে পরিচিতি আইয়ুব আলী ও এম এ সাত্তার আসছেন এ কমিটির দায়িত্বে তা জানা সবারই। তাই ইউনিয়নের বর্তমান সভাপতি দুলাল হোসেনকে অনেক আগেই মাইনাস করার পরিকল্পনা ছিলো প্রভাবশালী নেতাদের। তারই ধারাবাহিকতায় ইচ্ছা না থাকার পরও চাপের মুখে পড়ে বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন একসময়ের ত্যাগী নেতা ও সভাপতি দুলাল হোসেন।

শুক্রবার বিকেলে হাজী উজির আলী স্কুল প্রাঙ্গণে ইউনিয়নের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলেন পুরাতন কমিটি বিলুপ্ত করার ঠিক আগ মুহুর্তে বক্তব্য দিতে গিয়ে ক্ষোভ ধরে রাখতে না পেরে অভিমানে কেঁদে ফেলেন দুলাল হোসেন। অভিমানে কাঁদতে কাঁদতে বড় নেতাদের উদ্দেশ্য করে ক্ষোভের সুরে অনেক কথা বলেন দুলাল হোসেন। যার বেশীর ভাগ কথাই ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম সাইফ ‍উল্লাহ বাদলকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন বলে দাবী উপস্থিত প্রবীণ নেতাকর্মীদের। তাদের মতে, বিগত সময়ে তথা দলের দু:সময়ে দুলাল হোসেনের কাছ থেকে বেশ সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন সাইফউল্লাহ বাদলসহ অনেক নেতারা। তবে, আইয়ুব আলী বর্তমানে বাদলের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় দুলালের মতো ত্যাগী, দক্ষ  রাজনীতিবীদ, সংগঠককে সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হলো বলেও দাবী তাদের।

বক্তব্য রাখতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন দুলাল হোসেন। বিশাদের অশ্রু চোখে নিয়ে, কান্নাজড়িত কন্ঠে তিনি বলেন, একটা কথা আছে “যখন তোমার কেউ ছিলো না, তখন ছিলাম আমি। এখন তোমার সব হয়েছে, পর হয়েছি আমি।” এতোদিন আমি কাশিপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি হয়েও না লিখতে পারতাম সভাপতি, না লিখতে পারতাম ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, তবে এখন আমি মুক্ত, আমি স্বাধীন। এখন অন্তত সাবেক সভাপতি লিখতে পারবো। আর যিনি দায়িত্বে আসবেন তিনিও মন খুলে সভাপতি লিখতে পারবেন। 

তিনি বলেন, আমি শুধু একটি কথাই বলবো, আপনারা জানেন কারা ত্যাগী, নির্যাতিত, কারা রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে আপনাদের পাশে ছিলো, কারা রক্ত ঝড়াইছে, কাদের বাড়িতে বাড়িতে হামলা হয়েছে, কারা বাড়ি-ঘর ছাইরা পলাইয়া রইছে, কারা সত্যিকারে নির্যাতিত হইছে, আর কারা এ সুফল ভোগ করতেছে। তাই বলবো ত্যাগীদের মূল্যায়িত করেন, ত্যাগীরা আপনাদের কাছে ভাত-মাছ চায় না, তারা চায় একটু সম্মান। তাদের দেখলে আপনারা যাতে চিনেন, তাদের মাথায় একটু হাত বুলাইয়া দিয়েন তাহলেই তারা খুশী, তাহলেই আমরা খুশী। তাই আগামীতে যারা দায়িত্বে আসবেন তারা ত্যাগীদের মূল্যায়িত করবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি।

ক্রন্দরত অবস্থায় তিনি আরও বলেন, আর আমি সবসময় আন্দোলন সংগ্রামে আপনাদের পাশে ছিলাম, আমার অনেক ব্যর্থতা আছে, সকল ব্যর্থতার ভার কাধে নিয়ে আপনাদের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। আপনাদের সাথে যদি কোনো অন্যায় করে থাকি আমাকে আল্লাহর ওয়াস্তে মাফ করে দিয়েন।

সবশেষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া চেয়ে তিনি বলেন, আপনারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করবেন, আমাদের এমপি শামীম ওসমান সাহেবের জন্য দোয়া করবেন, আল্লাহ যেন তাদের ভালো রাখেন। মনে রাখবেন, শেখ হাসিনা ভালো তো আপনারা ভালো, শেখ হাসিনার যদি কিছু হয় তাহলে আপনারা কেউ রক্ষা পাবেন না। সাইফ উল্লাহ বাদল ভাই অত্যন্ত ভালো একজন সু-সংগঠক। উনি বুঝেন সংগঠন কিভাবে করতে হয়, কিভাবে নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করতে হয় এটা বাদল ভাই জানেন। আমি আশা করি, নেতাকর্মীদের মনে যে ব্যাথা-কষ্ট তা শওকত ভাই, আব্দুল হাই ভাই, বাদল ভাইয়ের মাধ্যমে দুর হবে।