শেখ হাসিনা আবার প্রধানমন্ত্রী হলে নবীগঞ্জে সেতু হবে – সেলিম ওসমান

134
নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান বলেছেন, আমরা পিছিয়ে গেছি, অনেক পিছিয়ে গেছি। পিছিয়ে যদি না যেতাম তাহলে বন্দরে কিন্তু একটা ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক থাকতো । যেটাকে আমরা শান্তির চর বলি। আমরা পিছিয়ে গেছি লাঙ্গলবন্দে, ওটা শুধু একটা তীর্থস্থান হতো না, ওটা কিন্তু একটা পর্যটন এলাকা হতো। কোটি কোটি টাকা স্যাংশান করা হয়েছে। কিন্তু করোনা-ইউক্রেন যুদ্ধ, যার কারণে আমরা কিন্তু অনেকটা পিছিয়ে গেছি। অনেক জায়গায় কাজ সম্পন্ন হলেও বন্দরে আমরা অনেক পিছিয়ে গেছি। এর জন্য যদি দোষী করেন, তাহলে এর দোষ আমার। আমি এই দোষ মাথা পেতে নিচ্ছি। তারপরও আমরা নাসিম ওসমান সেতু করতে পেরেছি। নবীগঞ্জে ফেরী চালু করেছি। ইনশ্আাল্লাহ আগামীতে যদি শেখ হাসিনা আবারও প্রধানমন্ত্রী হন এবং আমি যদি বেঁচে থাকি তাহলে আগামীতে নবীগঞ্জে আর ফেরী চলবে না, এখানে সেতু হবে।
নবীগঞ্জ গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের নব-নির্মিত ৬ তলা ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আতাউর রহমান মুকলের সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার দুপুরে স্কুল প্রাঙ্গণে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তার সহধর্মিনী নাসরিন ওসমান।
অসুস্থ অবস্থায় তার জন্য দোয়া করায় কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সেলিম ওসমান বলেন, যখন আমি থাইল্যান্ডে অসুস্থ ছিলাম, তখন আমি ভেবেছিলাম, এবার হয়তো আমি আর বাঁচবো না। তাই আমি সকলকে বলে দিয়েছিলাম, আমি যদি মারা যাই, তোমরা আমার লাশ নিয়ে টানাটানি করো না, থাইল্যান্ডেই কোনো এক মসজিদের চিপায় আমার লাশটাকে কবর দিয়ে দিও। কিন্তু আমি যখন ২দিন পর আমার মোবাইলটা খুললাম, তখন আমি দেখলাম আমার বন্দরের এমন কোনো মসজিদ-মন্দির-মাদ্রাসা নাই যেখানে আমার জন্য দোয়া করা হয় নাই। লক্ষ লক্ষ মানুষ আমার জন্য হাত তুলে দোয়া করেছে। এটা নিয়ে আমি গর্ব করবো না। এটা দেখার পর আমি আমার মেয়েকে বলেছিলাম, ্ইনশ্আাল্লাহ আমি এ যাত্রায় বাঁচবো এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই আমি সুস্থ হয়ে আমি তোমাদের কাছে ফিরে আসবো। এবং সুস্থ হয়েই আমি নারায়ণগঞ্জে গিয়ে বন্দরে যাবো।
নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে আপাতত কোন মাথা ব্যাথা নেই। আগামিতে এমপি হই বা না হই সেই চিন্তা করি না। অতীতে আমার বড় ভাই প্রয়াত সংসদ সদস্য নাসিম ওসমানের পেছনে থেকে যেভাবে জনগণের জন্য কাজ করেছি, ভবিষ্যতে কোন ভালো মানুষ এম পি হলে ঠিক সেইভাবে তার পেছনে থেকে জনগণের সেবা করবো। এমপি হওয়ার আগে ও পরে আজ পর্যন্ত যা  করেছি, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে করেছি। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ অনুযায়ী বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আপনারা দোয়া করবেন আমার জন্য।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে সেলিম ওসমান বলেন, মায়ের জাত কত কষ্ট করে এই স্বাধীনতা এনে দিয়েছে জানো তোমরা। দেশনেত্রী শেখ হাসিনা তোমাদের মাধ্যমেই জন্ম নিবেন। তোমাদের সে ভাবেই তৈরি হতে হবে। আমি কয়দিন আছি কয়দিন নাই জানি না। বন্দর গার্লস স্কুলে একটি ক্লিনিক নির্মান এবং স্কুলটিকে সরকারি করার কথা উল্লেখ করে সেলিম ওসমান বলেন, আমাদের চলার পথে দু-চারটা ভুল হতেই পারে। আমাদের সাবধান হতে হবে যতে আমি ভুল না করতে পারি। এই স্কুলে একটি চিকিৎসালয় তৈরি করেন। যাতে আমার নাতনীরা কোন সময় অসুস্থ হলে, যাতে মহিলা চিকিৎসকদের দ্বারা চিকিৎসা নিতে পারে। আল্লাহ যদি আমাকে বাঁচিয়ে রাখে, তাহলে এই স্কুলকে একদিন সরকারি ঘোষণা করা হবে। আমি যাই বলি, তাই করি।
নবীগঞ্জ ঘাটে ২টা ফেরী চলাচলের নির্দেশ দিয়ে সেলিম ওসমান বলেন, আমরা নবীগঞ্জ ফেরি চালু করতে পেরেছি, কিন্তু সেখানেও কিছু সমস্যা আছে। পয়সা বেশি কামাই করার জন্য একটা ফেরি চালায় আরেকটা রেখে দেয়। ফেরি যদি খালিও চলে তারপরেও দুটি ফেরি চালাতে হবে। আমি এখান থেকে নির্দেশনা দিলাম, ফেরির জন্য যাতে একটি রিকশা ওয়ালারও অপেক্ষা করতে না হয়।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেলন বন্দর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ রশিদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কুদরত এ খুদা, বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজিম উদ্দিন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২৩ নং ওয়াডের কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশা। আরও উপস্থিত ছিলেন বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন আহমেদ, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারমান দেলোয়ার প্রধান, ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারমান কামাল হোসেন, মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারমান মাকসুদ হোসেন, মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারমান এম এ সালাম, গোগনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারমান ফজর আলী, আলীরটেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারমান জাকির হোসেন, ২৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আফজাল হোসেন, ১৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্না প্রমুখ।