দল ক্ষমতা থাকলে তিনি সিংহ, না থাকলে পলাতক বিড়াল...

শামীম ওসমানকে গোনায় ধরতে রাজী নন বিএনপির নেতাকর্মীরা

75
শামীম ওসমানকে গোনায় ধরতে রাজী নন বিএনপির নেতাকর্মীরা

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

আজকাল তার নিজ দলের নেত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য বিএনপির বিরুদ্ধে নানা কথা বলছেন সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। তিনি চট্টগ্রামে বিএনপির কয়েক লাখ লোকের জমায়েতকে বলেছেন ১০/১৫ হাজার লোকের লোকের জমায়েত। এছাড়াও তিনি ডয়চে ভেলের এক টকশোতে গিয়ে বিএনপিকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে কথা বলেছেন।

নারায়ণগঞ্জে বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেছেন, বিএনপি নেতারা নাকি দিনে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে বড় বড় কথা বলে আর রাতে শামীম ওসমানকে ফোন করে বলেন আমাদের দিকে একটু খেয়াল রাইখেন। তার এই কথার তীব্র প্রতিবাদ করেছেন বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

শামীম ওসমানকে গোনায় ধরতে রাজী নন বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক এডভোকেট সাখাওয়াৎ হোসেন খান এবং সদস্য সচিব এডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক মনিরুল ইসলাম রবি এবং সদস্য সচিব মামুন মাহমুদ।

এছাড়া বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ সোস্যাল মিডিয়ায় শামীম ওসমানের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তারা পরিস্কার করে বলছেন শামীম ওসমান তার দল দল ক্ষমতায় থাকলেই বাঘ আর ক্ষমতা চলে গেলে বিলাইও না। তারা স্মরন করিয়ে দিচ্ছেন ২০০১ সালের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দেশ থেকে না পালালেও এই শামীম ওসমান বোরখা পরে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন। সেই থেকে তার নাম হয়ে গেছে “বোরখা শামীম”।

তাই আজকাল বিএনপির দুষ্ট প্রকৃতির কর্মীরা শামীম ওসমানের বোরখা পড়া একটি এডিট করা ছবিও ফেসবুকে পোষ্ট দিচ্ছেন। তাই তাদের বক্তব্য হলো জোর করে যখন তার দল ক্ষমতায় আর বিনা ভোটে তিনিও যখন এমপি তখন তার মুখে এসব কথা মানায় না। রাতের ভোটের এমপি হয়ে তিনি বড় বড় কথা বলছেন যা কিনা হাস্যকর।

এছাড়া বিএনপির নেতাকর্মীরা শামীম ওসমানের জনপ্রিয়তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন। তারা বলছেন এই মুহুর্তে নারায়ণগঞ্জের আশি শতাংশের বেশি মানুষ শামীম ওসমান এবং তার দল আওয়ামী লীগকে পছন্দ করেন না। তাই তারা একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলছেন।

বিএনপির নেতাকর্মীরা শামীম ওসমানের বক্তব্যকে নির্লজ্জ বেহায়ার বক্তব্য হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন এবং তারা দৃঢ়তার সাথে বলছেন এবারও সংসদ সদস্য শামীম ওসমান পালাবেন। কারন তার দল আওয়ামী লীগই আর রাস্ট্র ক্ষমতায় থাকতে পারছে না।

তাদের মতে, আওয়ামী লীগ দূর্ণীতি লুটপাট চালিয়ে এরই মাঝে গোটা দেশকে একেবারে ফোঁকলা করে ছেড়েছে। খোদ সুইস ব্যাংক কর্তৃপক্ষই বলছে ওই ব্যাংকের বাংলাদেশের লুটেরারা হাজার হাজার কোটি টাকা রেখেছে। যা ফলে দেশে এখন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে গেছে। ডলালের মূল্য সাীমাহীন ভাবে বেড়ে গেছে। ফলে দেশের ব্যাবসা বানিজ্যে ধস নেমেছে। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স প্রবাহ কমে গেছে। যার ফলে দেশে জ¦ালানী তেলের মূল্য বেড়েছে। সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে সব ধরনের দ্রব্যমূল্য।

বিশেষ করে খাদ্যপন্যের মূল্য দ্বিগুন বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে তিনগুন হওয়ায় দেশের প্রায় তিন ভাগের দুই ভাগ মানুষ না খেয়ে থাকার অবস্থা হয়েছে। ফলে এই সরকারকে বিদায় জানাতে সর্বাত্মক আন্দোলন শুরু করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে দেশের আপামর জনসাধারন। তার প্রমানও পাওয়া যাচ্ছে বিএনপি জনসভাগুলিতে।

তাই বিএনপির নেতাকর্মীরা মনে করেন, শামীম ওসমান মুখে যাই বলেন না কেনো তিনি নিজেও ভয়ের মাঝে রয়েছে। কারন এরই মাঝে এই সরকারের বিদায় ঘন্টা বেজে গেছে। বিদায় এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। তাই শামীম ওসমানকে আরো সতর্কতার সহিত কথা বলার জন্য তারা পরামর্শ দিচ্ছেন।