শহীদ উল্লাহর মামলায় উল্লসিত দালালরা

282

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

এটা ঠিক যে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে শহীদ উল্লাহ এখন মেয়র আইভীপন্থী হিসাবে পরিচিত। এক সময় তিনি সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের অনুসারী ছিলেন। এবং ফেসবুকে তিনি প্রায় সব সময় অসংখ্য পোষ্ট দিয়ে দাবি করে আসছেন যে তিনিই শামীম ওসমানকে প্রথম এমপি বানিয়েছেন।

১৯৯৬ সালের নির্বাচনে মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিনকে দেয়া হয়েছিলো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন। এই শহীদ উল্লাই তখন আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনার পায়ে ধরে শামীম ওসমানকে এনে দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ রাস্ট্র ক্ষমতায় চলে আসে আর শামীম ওসমান এমপি নির্বাচিত হয়ে দোর্দন্ড প্রতাপশালী হয়ে উঠেন। এমপি হয়ে তিনি বেছেঁ নেন সন্ত্রাসের পথ। সারা দেশে সন্ত্রাসের গডফাদার পরিচিতি লাভ করেন। মূলত শামীম ওসমান সন্ত্রাসের পথে পা বাড়ানোর কারনেই শহীদ উল্লাহ ত্যাগ করেন শামীম ওসমানকে।

যদিও শামীম ওসমানের অনুসারীদের মতে শহীদ উল্লাহ শামীম ওসমানকে ত্যাগ করেননি, বরং শামীম ওসমানই একটি বিশেষ কারনে তাকে বের করে দেন। আর সেই থেকে তিনি শামীম ওসমানের একজন কট্টর সমালোচক। শুধু শামীম ওসমান নয়, তিনি শামীম ওসমানের অনুসারীদেরও সন্ত্রাসী হিসাবে আখ্যায়িত করে তীব্র সমালোচনা করে চলেছেন। ফলে এই শহরের রাজনীতিতে এখন শামীম ওসমানের অনুসারী মানেই হলো মেয়র আইভীর সমর্থক। সেই হিসাবে শহীদ উল্লাও এখন আইভীর সমর্থক।

ফলে বিগত কয়েকটি নির্বাচনে শহীদ উল্লাহকে আইভীর পাশে দেখা গেছে। কিন্তু এরই মাঝে গতকাল নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন পত্রিকার খবরে জানা যায় শহীদ উল্লাহ মেয়র আইভীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। তিনি মেয়র আইভী, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক এবং সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহীকে বিবাধী করেছেন। আর এই মামলা নিয়েই উৎফুল্ল হয়ে উঠেন শামীম ওসমানের অনুসারীরা। শুরু হয়ে যায় আইভীকে নিয়ে নানা গালগল্প।

কোনো কোনো পত্রিকায় শিরোনাম হয় মেয়র আইভী নাকি শহীদ উল্লার জায়গা দখল করেছে। কেউ কেউ আবার তাকে এই কথা বলে নসিয়ত করছেন যে মেয়র আইভীর সাথে থেকে তিনি বিরাট ভুল করেছেন। আইভী নাকি এমনই। অনেককে ব্যবহার করে ছুড়ে ফেলেছেন তিনি।

কিন্তু বাস্তবতা হলো মেয়র আইভীর সাথে শহীদ উল্লাহর কোনো ব্যাক্তিগত বিরোধ সৃষ্টি হয়নি। আইভী তার কোনো জায়গা দখল করতে যাননি। তার সাথে যেটা ঘটেছে সেটা হলো সিটি করপোরেশনের সাথে। আইভীর দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের সমুদ্বয় সম্পত্তি রক্ষা করা। এখন সেই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যদি তার আপন ভাইয়ের কাছ থেকেও সিটি করপোরেশনের জায়গা উদ্ধার করতে হয় তাহলেও তিনি ছাড় দেবেন কেনো?

এই ধরনের কোনো ছাড় যে তিনি দেননা এটা সকলেরই জানা। এখন শহীদ উল্লাহ মামলা করেছেন সিটি করপোরেশনের বিরুদ্ধে। ব্যাক্তি আইভীর বিরুদ্ধে নয়। এতে মামলার রায় কি আসে সেটা সময়ই বলে দেবে। কিন্তু যারা শহীদ উল্লাহার এই মামলায় উল্লাস প্রকাশ করছেন তারা আসলে শামীম ওসমানের পূরনো দালাল হিসাবেই পরিচিত। আর দালালরা সব সময় এমনই হয়।