শহরে কম হলেও শাখা সড়কে ব্যাপক যানজট

166

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

রাজধানী ঢাকার পরে নারায়ণগঞ্জ এমনিতেই যানজটের শহর হিসাবে পরিচিতি। তার উপর পবিত্র রমজান মাস এলে ঈদের কেনাকাটাসহ নিত্যপণ্য ক্রয় করতে শহরে ঢুকে হাজার হাজার মানুষ ও যানবাহন। ফলে এ মাসে যানজট বাড়ে বহুগুণ। তবে, এবার এ যানজট নিরসনের উদ্যোগ নিয়েছেন সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান এবং যানজট নিরসনে কাজ করছে পুলিশ প্রশাসন তথা ট্রাফিক বিভাগ।

তাদের সমন্বিত উদ্যোগ ও প্রচেষ্টায় নগরীর মূল সড়ক তথা বঙ্গবন্ধু সড়কে যানজট কিছুটা কম হলেও শাখা সড়কগুলোতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। মূল সড়কের পাশাপাশি শাখা সড়কগুলোতে মনিটরিং না করার কারণে জনসাধারণের ভোগান্তি লাঘবের যে চেষ্টা তা কোনো কাজেই আসছে না বলে দাবী নগরবাসীর। উল্টো কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিড়ম্বনা আরও বাড়ছে বলেও জানায় তারা।

গেলো কিছুদিন ধরে শহরের মূল সড়কে মিশুক-অটোরিক্সা বা ইজিবাইক কম প্রবেশ করায় নগরীর মন্ডলপাড়া, ডিআইটি, ২নং রেল গেইটসহ চাষাড়ায় কোনো যানজট নেই বললেই চলে। ফলে শহরে একবার প্রবেশ করতে পারলে ৮/১০ মিনিটেই মন্ডলপাড়া থেকে চাষাড়ায় বা চাষাড়া থেকে মন্ডলপাড়ায় যাতায়াত করা যাচ্ছে। আগে যেখানে এ সড়কে যাতায়াত করতে সময় লাগতো ৪০/৫০ মিনিট, কখনো কখনো ১ ঘন্টারও বেশী সময় লাগতো বলেও জানা যায়। কিন্তু বর্তমানে মূল সড়কে চলতে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে নগরবাসী।

এদিকে, শহরে প্রবেশ করতে না পারায় এসব অবৈধ যানবাহনের চাপ পড়েছে প্রতিটি পাড়া-মহল্লায়, অলি-গলির রাস্তাগুলোতে। নগরীর পাক্কারোড মোড় থেকে পালপাড়া মোড়, দেওভোগ আখড়ার মোড় থেকে ডায়মন্ড হল মোড়, গলাচিপা-চেয়ারম্যান বাড়ি-গলাচিপা রেললাইন, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের পেছনের সড়কসহ প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় বেড়েছে এ চাপ। ফলে শাখা সড়কগুলোতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এতে ঘন্টার পর ঘন্টা এসব সড়কে বসে থাকতে হয় যাত্রীদের। এ যানজট এতো তীব্র আকার ধারণ করে যে, অনেক সময় এক থেকে দেড় ঘন্টা পর্যন্ত সময় গাড়ির চাকা একটুও চলে না বলে জানায় যাত্রীরা।

সোমবার (১১ এপ্রিল) সকালে নগরীর শেখ রাসেল পার্কের সামনে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় রিক্সা-অটোরিক্সা-মিশুক-ইজিবাইকের দীর্ঘ লাইন। সামনেই মোড় থেকে অবৈধ এসব যানবাহন ঘুরিয়ে দিচ্ছে পুলিশ ও কমিউনিটি পুলিশের সদস্যরা। ফলে এ মোড়টিতে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজটের।

মিশুকে বসে থাকা যাত্রী সোয়েব আহমেদ বলেন, কলেজরোড যাবো তাই বাংলাবাজার থেকে সকাল সাড়ে দশটায় বের হয়েছি। এখন বাজে বেলা সাড়ে এগারোটা। দীর্ঘ ৩০ থেকে ৪০ মিনিট যাবৎ এ মোড়ের মধ্যে রিক্সায় বসে আছি। রিক্সা সামনে যাচ্ছে না, পিছনেও যাচ্ছে না। এ বিড়ম্বনার শেষ কোথায় জানতে চান তিনি।

তিনি আরও বলেন, দেখলাম নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য যানজট নিরসনের লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ পুলিশকে ১০ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। তারপর থেকে অ্যাকশনে নামে পুলিশ, কিন্তু নগরীর মূল সড়কে যানজট কিছুটা কম থাকলেও শাখা সড়কগুলোতে বাড়ছে যানজট। ফলে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না বলে জানান তিনি। যানজটের কারণে আগেও সময় নষ্ট হতো, এখনও নষ্ট হয়। পার্থক্য একটাই আগে মূল সড়কে বসে থাকতাম, এখন শাখা সড়কগুলো। এছাড়া আমাদের তথা জনসাধারনের আর কোনো উপকার হয়েছে বলে অন্তত আমি মনে করি না।