প্রস্ততি নিচ্ছেন নারায়ণগঞ্জের সর্বস্তেরের বিএনপি নেতাকর্মীরা......

রোড মার্চ, লংমার্চ, চলো চলো ঢাকা চলো কর্মসূচি আসছে বিএনপির

55
রোড মার্চ, লংমার্চ, চলো চলো ঢাকা চলো কর্মসূচি আসছে বিএনপির

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

নারায়ণগঞ্জের বিএনপি নেতাকর্মীরা মনে করেন, সরকার মুখে যতো কথাই বলুক বাস্তবে এবার আর বিগত দুই নির্বাচনের মতো যেন তেন নির্বাচন করা সম্ভব হবে না। কারণ এবার মার্কিন যুক্তরাস্ট্র সহ পশ্চিমা শক্তিগুলো বাংলাদেশের উপর তীক্ষ্ম নজরধারী অব্যাহত রেখেছে। আর পশ্চিমাদের উপরই বাংলাদেশের অর্থনীতি পূরো মাত্রায় নির্ভরশীল। অবাধ ও সুষ্ঠু না হলে যুক্তরাস্ট্র সহ তার মিত্ররা যে এবারের নির্বাচন কোনো মতেই মেনে নেবে না এটা জানে সরকার নিজেও।

বিশেষ করে পশ্চিমা জোটের অন্যতম শক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেকোনো মূল্যে বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রচেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই শেষ পর্যন্ত একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে সরকার এগিয়ে যেতে বাধ্য হবে বলে মনে করেন নারায়ণগঞ্জের বিএনপি নেতাদের অনেকে। আর যদি সরকার সুষ্ঠু নির্বাচন না করে আগের মতোই মনগড়া নির্বাচন করে ক্ষমতা আকড়ে থাকতে চায় তাহলে বিএনপি কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে। সেই ক্ষেত্রে এই নেতারা মাঠের আন্দোলনের প্রস্তুতিও নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তারা।

এরই মাঝে সারা দেশে বিএনপি তার সাংগঠনিক শক্তির প্রমান দিয়েছে। আগামী দিনেও সারা দেশে সব জেলায় জনসভা করবে বিএনপি। এরপর তারা রোড মার্চ, লংমার্চ এবং চলোচলো ঢাকা চলো কর্মসূচি ঘোষনা করবে। তাই এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করার জন্য সর্বাত্বক প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা।

এদিকে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই আসনে এবার বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী মূলত দুই জন। এরা হলেন জেলা বিএনপির বর্তমান আহবায়ক মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিন এবং যুগ্ম আহবায়ক মামুন মাহমুদ। তবে জেলা বিএনপির বর্তমান আহবায়ক হিসাবে আগামী নির্বাচনে গিয়াস উদ্দিনের মনোনয়ন চূড়ান্ত বলেই মনে করেন দলটির নেতাকর্মীরা। কারণ এই আসনে সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিন একবার নির্বাচিত হয়েছিলেন। মূলত গিয়াস উদ্দিনের পর এই আসনে বিএনপির আর কেউ জয়ী হতে পারেননি। এবং বিগত নির্বাচনগুলিতে গিয়াস উদ্দিন মনোনয়ন পাননি। তাই এবার বিএনপি নির্বাচনে গেলে তিনিই মনোনয়ন পাবেন বলে অনেকে মনে করেন।

অপরদিকে, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মাঝে এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান এগিয়ে রয়েছেন। কারণ দলের দু:সময়ে তিনি বিগত দেড় যুগ ধরে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে এসেছেন। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তিনি অংশ নিয়ে মেয়র আইভীর সাথে বিপুল পরিমান ভোট পেয়েছিলেন। তাই এবারের নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলে তিনিই পাবেন দলটির মনোনয়ন এটা প্রায় নিশ্চিত করেই বলা যায়। তবে আতাউর রহমান মুকুল এবং সিটি কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদও বিএনপির মনোনয়ন চাইবেন বলে তাদের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলি জানিয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে এবারও কাজী মনির এবং মোস্তাফিজুর রহমান ভুইয়া দীপু দুজনেই বিএনপির মনোনয়ন চাইবেন। তারা দুইজনেই মাঠে রয়েছেন। তাই এই আসনে এবার কে পান দলটির মনোনয়ন সেটা পরিস্কার করে বলা যাচ্ছে না। কারণ দুইজনেই এবার নানা কারনে গুরুত্বপূর্ণ। বিগত দুটি নির্বাচনে কাজী মনির মনোনয়ন পেলেও এবার দুইজনেই সমান সমান। তাই এবার দল কাকে বেছে নেয় সেটা পরিস্কার করে বলা যাচ্ছে না।

নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনে বিএনপির মনোনয়ন চাইবেন তিনজন প্রার্থী। এরা হলেন সাবেক এমপি আতাউর রহমান আঙ্গুর, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ এবং বিএনপি নেতা মাহমুদুর রহমান সুমন। তবে নজরুল ইসলাম আজাদের মনোনয়ন লাভের সম্ভাবনাই বেশি বলে জানা গেছে। কারণ তিনি যেমনই হোক মাঠে রয়েছেন।

এছাড়া নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে জোরালো ভাবে মাঠে রয়েছেন আজহারুল ইসলাম মান্নান। এবারও মান্নানের মনোনয়ন লাভের সম্ভানাই বেশি। যদিও রেজাউল করিমও মনোনয়ন চাইবেন বলে ধারনা করা হচ্ছে।

তবে এবার যারা আন্দোলনের মাঠে থাকবেন শেষ পর্যন্ত তারাই পাবেন বিএনপির মনোনয়ন। কারণ দেশের প্রত্যেকটি আসনে কারা বিএনপির জন্য কি ভুমিকা রাখছেন সেদিকে নজর রাখছেন তারেক রহমান নিজেই। তাই আগামী দিনের আন্দোলনকে সফল করার জন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামতে যাচ্ছেন নারায়ণগঞ্জের সর্বস্তরের বিএনপি নেতাকর্মীরা। বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে এমন তথ্যই জানা গেছে।