বোমা সদৃশ ৩টি বস্তু উদ্ধার...

রূপগঞ্জে জঙ্গি আস্তানায় অভিযান: ভবনের তৃতীয় তলায় বিস্ফোরণ

80
রূপগঞ্জে জঙ্গি আস্তানায় অভিযান: ভবনের তৃতীয় তলায় বিস্ফোরণ

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

রূপগঞ্জ উপজেলায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে সৌদি প্রবাসীর চারতলা ভবনে অভিযানের সময় তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া ভবনটি থেকে ‘বোমা সদৃশ ৩টি বস্তু’ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট-এটিইউ।

গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে উপজেলার বরপাস্থ আড়িয়াবো এলাকার চারতলা ভবনটি ঘিরে রাখে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট সোয়াট ও অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের সদস্যরা। বেলা দেড়টার দিকে ভবনটিতে প্রবেশ করেন তারা। ভবনটির তৃতীয় তলার একটি ফ্ল্যাটে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্যরা আস্তানা গেড়েছে বলে তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছেন অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া এটিইউর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন।

চারতলা এ ভবনটির মালিক সৌদি আরব প্রবাসী জাকির হোসেন। ভবনটির ভেতরে প্রবেশের পর দরজা ভাঙার শব্দ পাওয়া যায়। অভিযানের আগে সারোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের জানান, ৮ ও ৯ জুন নেত্রকোণা সদর উপজেলার কাইলাটি ইউনিয়নের একটি বাড়িতে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে অভিযান চালানো হয়। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার কক্সবাজার থেকে জঙ্গি সন্দেহে এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রূপগঞ্জের বরপার আড়িয়াবো এলাকায় চারতলা এ ভবনটি চিহ্নিত করা হয়; আর সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বাড়িটি ঘিরে অভিযানের পরিকল্পনা করা হয় বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, “ভবনের একটি ফ্ল্যাটে ‘বোমা তৈরিতে এক্সপার্ট’ এক ব্যক্তির অবস্থানের তথ্য পেয়েছি। অভিযান শুরুর আগে বাড়ির সব সদস্যদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছে।” এটিইউ ও সোয়াট টিম ছাড়াও ঘটনাস্থলে রূপগঞ্জ থানা পুলিশের সদস্যরা রয়েছেন।

ভবনের ভাড়াটিয়া শাহ নেওয়াজ বলেন, তিন বছর ধরে বাড়িটিতে ভাড়া থাকেন তিনি। ভবনের মালিক জাকির হোসেনের পরিবারের কেউ এ বাড়িতে থাকেন না। তিন দিন ধরে তৃতীয় তলার একটি ফ্ল্যাট তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখছেন বলে জানান এই ভাড়াটিয়া।

তিনি বলেন, “তিন মাস আগে তৃতীয় তলার ওই ফ্ল্যাটে নতুন ভাড়াটিয়া ওঠেন। তাদের পরিবারে চারজন সদস্য। স্বামী, স্ত্রী ও দুই সন্তান। মধ্যবয়সী গৃহকর্তা সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোড এলাকায় একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তবে তিন মাসে সন্দেহজনক কোনো গতিবিধি নজরে পড়েনি।”

শাহ নেওয়াজ বলেন, “সকালে দেখি পুলিশের লোকজন বাড়ি ঘিরে রেখেছে। দেখে আতঙ্কিত হয়েছি। পরে তারা জঙ্গির কথা জানাইছে এবং আমাদের সবাইকে বাড়ি থেকে নিরাপদে বের করে আনছে।”

স্থানীয়রা জানান, বেলা পৌনে ৩টার দিকে ভবনটি থেকে ‘বোমা সদৃশ বস্তু’ নিয়ে বের হতে দেখা গেছে বোমা ডিসপোজাল ইউনিটকে। এর ৩০ মিনিট পর তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ফ্ল্যাটের জানালার কাচ ভেঙে যায়। তবে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পুলিশের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কিছু জানায়নি।