বন্দরে বন্ধ হচ্ছে না নাসিকের নামে চাঁদাবাজী, নেপথ্যে ছিচকে সন্ত্রাসী

170

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নামে বন্দর থানা এলাকায় অটো রিকশা, সিএনজি এবং পায়ে চালিত রিকশা থেকে কয়েকটি স্পটে ব্যাপক চাঁদাবাজী করা হচ্ছে। প্রতিবার যাতায়াতেই দিতে হয় বিশ টাকা চাঁদা। এমন কি বিশ টাকার একটি ট্রিপ নিলেও সেই বিশ টাকাই দিতে হচ্ছে চাঁদাবাজদেরকে।

এ সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার আগ পর্যন্ত এই চাঁদাবাজীর কোনো প্রতিকার হয়নি। চাঁদাবাজ চক্র কারো তোয়াক্কা না করে বিনা বাধায় সিটি কর্পোরেশনের নামে চাঁদাবাজী অব্যাহত রেখেছে। রিকশাওয়ালারা জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে স্থানীয় পুলিশও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বরং চাঁদাবাজরা প্রকাশ্যেই বলছেন, সিটি কর্পোরেশন এবং পুলিশ প্রশাসনকে ভাগ দিয়েই এ চাঁদা তুলছেন তারা।

যদিও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডাক্তার সেলিনা হায়াৎ আইভী অনেক আগেই জানিয়েছেন, সিটি কর্পোরেশন রিকশা, অটো রিকশা থেকে চাঁদা তোলার জন্য কাউকে ইজারা দেননি বা কোনো অনুমতি দেননি। তিনি এসব চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

বাস্তবে এসব রিকশাওয়ালারা যে টাকা উপার্জন করেন তার সিংহভাগই চলে যাচ্ছে চাঁদাবাজদের পকেটে। তবে স্থানীয় পুলিশের কিছু অসৎ সদস্য এ টাকার ভাগ নিচ্ছেন বলেও জানা গেছে। নাসিকের নামে ব্যাপক এই চাঁদাবাজী করলেও এখন পর্যন্ত সিটি কর্পোরেশন এদের বিরুদ্ধে কোনো কঠোর ব্যবস্থা নেয়নি বলেও জানা গেছে।

এদিকে গতকালও বন্দর খেয়াঘাটে দাড়িয়ে এসব অভিযোগ করেন, কয়েকজন অটো রিকশা ও সিএনজি চালক। তারা বলেন সিটি কর্পোরেশনের লোকেরাই এই টাকা নিচ্ছেন। তাই তারা বারবার সিটি কর্পোরেশনের ঠিকাদার আবু সুফিয়ানের সাথে কথা বলেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না।

রিকশা চালকরা আরো জানান, তারা যদি ত্রিশ টাকার ট্রিপ নিয়ে যাত্রী নামিয়ে খালি রিকশা নিয়েও ফিরেন তারপরেও তাদের কে বিশ টাকা দিতে হয়। অর্থাৎ যেতে বিশ টাকা আসতে বিশ টাকা। এভাবে যতোবার যান ততোবারই এই পরিমান টাকা দিতে হয়। সিটি কর্পোরেশনের টোকেন দিয়ে তাদের কাছ থেকে টাকা নেয়া হয়। এতে তারা সারা দিনে যতো টাকা উপার্জন করেন তার বেশির ভাগই নিয়ে যায় চাঁদাবাজরা। তাই তারা এখন অসহায় হয়ে পরেছেন এবং যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া নিতে হচ্ছে। তাতেও তাদের সংসার চলেনা।

তবে এ ব্যাপারে সিটি কর্পোরেশনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আসলে সিটি কর্পোরেশন এই ধরনের কোনো চাঁদা আদায় করছে না বা তারা কারো কাছে ইজারাও দেয়নি। বরং বন্দরের কিছু স্থানীয় সন্ত্রাসী রিকশাওয়ালাদের উপর চাঁদাবাজী করছে বলে জানা স্থানীয়রা। যদিও ভয়ে তারা সেই সন্ত্রাসীদের নাম বলতে চান না। তারপরও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, এদের নেতৃত্বে রয়েছে প্রভাবশালী পরিবারের লালিত পালিত এক ছিচকে সন্ত্রাসী। মূলত তার বাহিনীই রিকশা প্রতি এই টাকা আদায় করছে বলে জানা গেছে।

কিন্তু সিটি করপোরেশনের ব্যর্থতা তুলে ধরে তারা বলেন, সিটি কর্পোরেশনের নামে এই টাকা আদায় করা হলেও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে নাসিক বা মেয়র কোনো ব্যবস্থাই নিতে পারছে না। ফলে যা হবার তাই হচ্ছে। বদনাম হচ্ছে সিটি কর্পোরেশন মেয়র আইভীর।