টাকা ছাড়া বিচার করেন না ওই গ্রামের অনেক মাতাব্বর, সব কিছু জেনেও কোনো ব্যবস্থা নেন নাই চেয়ারম্যান শওকত...

বক্তবলীর রাধানগরে মারামারির ঘটনায় ভিলেজ পলিটিক্সের শিকার নীরিহরা!

76
বক্তবলীর রাধানগরে মারামারির ঘটনায় ভিলেজ পলিটিক্সের শিকার নীরিহরা!

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

ফতুল্লা থানার বক্তাবলী ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনায় তুমুল ভিলেজ পলিটিক্স শুরু হয়ে গেছে। গ্রামের মাতাব্বররা এখন দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে দুই পক্ষ থেকে টাকাপয়সা খাওয়ার ধান্দাায় লিপ্ত রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কারণ ওই গ্রামে এখন আর টাকা না দিলে সাধারন মানুষ কোনো বিচার পায় না।

ওই মারামারির ঘটনার বাদী ফালান সরদারকে একটি পক্ষ কু পরামর্শ দিচ্ছে। মাতাব্বরদের অপর পক্ষ রয়েছে বিবাদীদের পক্ষে। তবে এলাকার সাধারন মানুষ চাইছে বিচার শালিসের মাধ্যমে আপোষ মিমাংসা করে ফেলতে। কিন্তু সমাজের কিছু ধান্দাবাজ টাউট কোনো মতেই চায় না ঘটনাটির সুষ্ঠু সমাধান হোক। ঘটনাটি বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত আলীকেও জানানো হয়েছে। কিন্তু শওকত আলী কোনো ব্যবস্থাই নেন নাই। চেয়ারম্যানকে বার বার জানানোর পরেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেন নাই বলে জানা গেছে।

এদিকে, এই মারামারির ঘটনায় গত ২০ এপ্রিল ফতুল্লা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। ফালান সরদার বাদী হয়ে মামলায় যাদেরকে আসামী করেন তারা হলেন ১) মৃত শাহ আলমের ছেলে ইসমাইল ২) আলাল হোসেনের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন, ৩) ইসমাইলের ছেলে ঈমন ৪) ফজল হকের ছেলে মামুন এবং ৫) মৃত আনারের ছেলে মেহেদী। এদের কারো বিরুদ্ধেই আগে থেকে কোনো মামলা বা জিডি নেই। এই আসামীদের মধ্যে ইসমাইল হলো ফালান সরদারের ভাতিজা। তারা একই বংশের এবং একই বাড়ির। আর ইসমাইলের ছেলে ঈমন, ফালান সরদারের নাতি।

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফালান সরদারের ছেলে রাশেদের সাথে মারামারি হয়। মূলত এই ঘটনার পর ফালান সরদার ফতুল্লা থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন। পরে অভিযোগটি মামলা হিসাবে গ্রহন করেন ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ রিজাউল হক। এর পর থেকে ফালান সরদার বলে বেড়াচ্ছেন এই মামলা করতে গিয়ে তার অন্তত পঞ্চাশ হাজার টাকা খরচ হয়েছে, তবে ঘটনার পরে আসামীদের পক্ষ থেকে বার বার ফালান সরদারের কাছে ক্ষমা চেয়ে বিচার শালিসের ব্যবস্থা করার জন্য অনুনয় বিনয় করার পরেও কোনো লাভ হয় নাই।

বরং বিচারে বসার আগেই কেউ তিন লাখ আবার কেউ পাঁচ লাখ টাকা মুচলেকা হিসাবে জমা দেয়ার কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। এতে বিবাদীদের মাঝে ইসমাইল ধার দেনা করে এক লাখ টাকা জমা দেয় বলে জানা গেছে। কিন্তু অন্যরা কোনো টাকা জমা দেয়নি। কিন্তু প্রশ্ন হলো বিচারের আগেই কেনো টাকা দিতে হবে? বিচারে যদি জরিমানা হয় তাহলে তখন জরিমানার টাকা দেবে। এক কথায় এই মামলাটি নিয়ে গ্রামের কিছু মুরুব্বী মজা লুটছেন বলে অনেকে অভিযোগ করেন। বিষয়টি আন্তরিক ভাবে মিমাংসা না করে বরং ধান্দাবাজীতে নেমেছে একটি চক্র।

এদিকে, এই মামলার বাদী ফালান সরদার মোট পাঁজনকে আসামী করে মামলা করলেও তিনি পরে ইসমাইল আর ইসমাইলের ছেলে ঈমনকে বাদ দিয়ে বাকী তিনজনের সাথে গোপনে সমঝোতা করে ফেলেন। তাই পুলিশ একবার ইসমাইল এবং তার ছেলে ঈমনকে ধরতে তাদের বাড়িতে গেলেও বাকী তিন আসামীর বাড়িতে যায়নি পুলিশ। তাই অনেকে মনে করেন, পুলিশকে ফালান সরদারই ম্যানেজ করে বলে দিয়েছেন কেবল মাত্র ইসমাইল আর তার ছেলেকে যেনো ধরা হয়। অথচ মামলায় পাঁজনই আসামী হিসাবে রয়েছে।

অপরদিকে, এলাকাবাসী জানিয়েছে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রামে এখনো উত্তেজনা রয়েছে। আবারও যেকোনো সময় অঘটন ঘটতে পারে। কারন বিষয়টি মিমাংসা না করে এক শ্রেনীর ধান্দাবাজ উভয় পক্ষকেই ইন্ধন জোগাচ্ছে। এতে আবার মারামারির ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করেন সাধারন গ্রামবাসীদের অনেকে।