শিগগিরই পর্তুগালে খেলতে যাবেন রাত্রি মনি, প্রধানমন্ত্রীর পর নাসিক মেয়র আইভী এবং না.গঞ্জের জেলা প্রশাসকও তাকে দিয়েছিলেন বিশেষ সন্মাননা...

প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার পাওয়া নারী ফুটবলারের পরিবারকে বসত ভিটা থেকে উচ্ছেদের অপচেষ্টা

114

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

নারায়ণগঞ্জের প্রমিলা ফুটবলার রাত্রি মনি খুব শিগগিরই ইউরোপের দেশ পর্তুগালে খেলতে যাবেন বাংলাদেশের হয়ে। তিনি এবং তার ফুটবল টিম এরই মাঝে বিদেশের মাটিতে খেলে দেশের জন্য বয়ে এনেছেন বিরল সম্মান। তিনি নারায়ণগঞ্জের সন্তান হওয়ায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডাক্তার সেলিনা হায়াৎ আইভী, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা ক্রিড়া সংস্থা তাকে দিয়েছে বিরল সম্মাননা। কিছুদিন আগেও তাকে নিয়ে আনন্দে ভেসেছে নারায়ণগঞ্জ। জাতীয় টেলিভিশন চ্যানেলগুলিতে প্রচার হয়েছে তাকে নিয়ে বিশেষ সংবাদ। জাতীয় পত্রিকাগুলিও করেছে বিশেষ প্রতিবেদন।

কিন্তু সেই রাত্রি মনিই এখন তার পরিবার পরিবার পরিজন নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। বেঈমানী করে তাকে এবং তার অসুস্থ্য পিতা মাতা ভাইবোনকে ভিটেমাটি ছাড়া করার পায়তারায় লিপ্ত রয়েছে তারই আপন ফুপু রিনা বেগম। আর নারী হয়ে ফুটবল খেলার কারনে এলাকার মৌলবাদী চক্র এবং মাদক ব্যবসায়ী ভূমি দস্যু চক্রের রোষানলে পরেছে তার পরিবার। তারা রিনা বেগমকে সহায়তা করছে। স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী ও ভূমি দস্যু বিটু চক্রের নজর পরেছে তাদের মাত্র ২.৬ শতাংশ ভিটার উপর। এখন চলছে তার পিতার ক্রয়কৃত এই ভিটা থেকে তাদেরকে জোর করে উচ্ছেদ করার অপচেষ্টা।

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ১৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা তিনি। তার ঠিকানা ৭৪নং গোপচর রোড। তার পিতার নাম আবুল কালাম। মূলত ফুটবল খেলার কারনেই তাকে এবং তার পরিবারকে নিজেদের ভিটেমাটি ছাড়ার জন্য পায়তারা চালিয়ে যাচ্ছে ওই চক্র। আর এরই সুযোগ নিতে চেষ্টা করছে তার আপন স্বজনরাও। ফুটবলার রাত্রি মনি নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে এসে এই প্রতিনিধির কাছে অভিযোগ করেছেন তার আপন ফুপি (পিতার বোন) এবং তার সহযোগীরা এখন তাদের পরিবারকে ভিটেমাটি ছাড়া করার পায়তারা চালিয়ে যাচ্ছে। আর তাদেরকে সহায়তা করছে ওই মৌলবাদী চক্র এবং এলাকার মাদক ব্যবসায়ী এবং ভূমি দস্যু চক্র।

নারী ফুটবলার রাত্রি জানান, তার বাবা আবুল কালাম ২০১৭ সালে একটি সাফ কবলা দলিলের মাধ্যমে ২.৬০ শতাংশ জায়গা ক্রয় করে সেখানে ঘর তুলে বসবাস করে আসছেন। তার ফুপু রিনা বেগম এই জমির মালিক ছিলেন। তিনি সমুদ্বয় টাকা বুঝে পাওয়ার পরেই ভাইয়ের নামে সাফ কবলা দলিল করে দেন। কিন্তু তখন দলিলটি রেজিস্ট্রি করা সম্ভব হয়নি কারন তখন ফুপু রিনার নামে মিউটেশান করা ছিলো না। তাই কথা ছিলো মিউটেশন করার পর রেজিস্ট্রি করে দেয়া হবে। তাই মিউটেশন করার খরচও দেন আবুল কালাম। কিন্তু মিউটেশন করার পর সম্প্রতি এসে বেঈমানী শুরু করেছে রিনা বেগম। আর তাকে সহায়তা করছে এলাকার মৌলবাদী চক্র, মাদক ব্যবসায়ী এবং ভূমিদস্যুরা। এই চক্র আবুল কালামের কন্যা ফুটবলার রাত্রিকে টার্গেট করে নানা কথা বলে বেড়াচ্ছে। একজন মেয়ে হয়ে কেনো ফুটবল খেলছে এসব প্রশ্ন তুলে এখন এই পরিবারটিকে একেবারে এক ঘরে করে ফেলেছে। তারা এখন এক জোট হয়ে এই নীরিহ পরিবারটিকে ভিটেমাটি ছাড়া করতে চাইছে।

এদিকে, কবির হোসাইন ১৮নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর থাকাকালে তিনি এ বিষয়টি মিমাংসা করার চেষ্টা করেছিলেন বলে জানান ফুটবলার রাত্রি। তাই এ বিষয়টি জানতে গতকাল সাবেক কাউন্সিলর কবির হোসাইনকে টেলিফোন করা হলে তিনি বলেন, জ্বী আমি বিষয়টি মিমাংসা করার চেষ্টা করেছি। রিনা বেগম তার ভাই আবুল কালামের কাছ থেকে ন্যায্য মূল্য নিয়েই সাফ কবলা দলিল করে দিয়েছিলো। সেই দলিলও আছে। কিন্তু তখন মিউটেশন করা না থাকায় বলা হয়েছিলো মিউটেশন করার পর রেজিস্ট্রেশান করে দেবে। কিন্তু মিউটেশন করার পর আর রেজিস্ট্রেশন করে দেয়নি। রিনা তার ভাইয়ের সাথে বেঈমানী করেছে।

এদিকে, এ বিষয়ে প্রমিলা ফুটবলার রাত্রি মনি নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিষয়টি পুলিশ যথাযথ ভাবে আমলে নিয়ে কার্যকর আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহন করবে বলে আশা করেন প্রমিলা ফুটবলার রাত্রি ও তার পরিবার। তাদেরকে যেনো কোনো মতেই তাদের ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করতে না পারে এবং অবিলম্বে তাদের এই জমিটুকু রেজিস্ট্রি করে দেয় সেই ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন নীরিহ পরিবারটি।