“নির্বাচনতো দূরের কথা মাঠে নামার সুযোগই পাবে না আ.লীগ”

208

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

সরকার এবং অন্যরা চাইলেও এবারের নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না আওয়ামী লীগ এমনটাই মনে করেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। গতকাল নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজের সাথে আলাপকালে এ বিষয়ে নিজ নিজ মতামত ব্যক্ত করেন তারা।

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক লুৎফর রহমান খোকা নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজকে বলেন, এটা এখন পরিস্কার যে আগামী নির্বাচনে নৌকা প্রতিক নিয়ে সারা দেশে নির্বাচন করা সম্ভব হবে না আওয়ামী লীগের পক্ষে। নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি আসনেও একই অবস্থা হবে। এখানে আওয়ামী লীগ প্রার্থী দিতে পারবে না। আর প্রার্থী পেলেও মাঠে কাজ করার কোনো কর্মী পাবে না। পরিস্থতি এখন খুবই ভয়াবহ। কারণ বিএনপির মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা কোনো মতেই আওয়ামী লীগকে মেনে নিতে রাজী নয়।

তিনি আর বলেন, আমরা এতো কিছু বুঝিনা। আমরা বুঝি আওয়ামী লীগ এ দেশে রাজনীতি করার অধীকার হারিয়েছে। এছাড়া এ যাবৎ তারা যতো হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে সকল হত্যাকান্ডের বিচার করতে হবে। শেখ হাসিনা সহ তার দোষরদের ফাঁসি দিতে হবে। তারপর আওয়ামী লীগ রাজনীতি করবে কি করবে না সেই হিসাব হবে।

ফতুল্লা থানা বিএনপির সহ-সভাপতি হাজী মোহাম্মদ শহীদ উল্লাহর সাথে নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজকে জানান, আমরা লক্ষ্য করছি দেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি পারবে না এটা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিষয়টি যেহেতু জাতীয় ইস্যু তাই আমাদের দলের জাতীয় পর্যায় থেকেই এই ইস্যুর উপর মতামত দেবে। কিন্তু আমি আমার নারায়ণগঞ্জের পরিস্থিতির কথা বলতে পারি। আর সেটা হলো আওয়ামী লীগকে নির্বাচন করার সুযোগ দিলেও সেই নির্বাচন নারায়ণগঞ্জে করতে পারবে না আওয়ামী লীগ। কারণ,  জেলার কোথাও তাদের নেতাকর্মীরা বাড়িতে নেই। নিজেদের কৃতকর্মের ফল কি হতে পারে এটা বুঝতে পেরেই তারা নারায়ণগঞ্জ ছেড়েছে। বেশির ভাগ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ৫ আগষ্টের আগেই নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে চলে গেছে। বাকীরা পালিয়েছে ৫ আগষ্ট ও তার পরবর্তী সময়ে। তাদের পাঁচজন এমপির মাঝে একজন কারাগারে রয়েছে বাকীরা কোথায় আছে কেউ বলতে পারেন না। এছাড়া তাদের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও বাড়িতে নেই। তাই তাদের হয়ে নির্বাচনটা করবে কারা সেটাই এখন বড় প্রশ্ন?

তিনি বলেন, তারা বিনা অপরাধে আমাদের দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের উপর টানা ষোলটি বছর যে জুলুম নির্যাতন চালিয়েছে তারতো বিচার হতে হবে। বিচার হতে হবে জুলাই আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের। হাজার হাজার মানুষকে পঙ্গু করে দেয়া হয়েছে তাদের বিচার হতে হবে। বিডিআর বিদ্রোহে সেনা হত্যাকান্ড, শাপলা চত্তরের হত্যাকান্ড এসবের বিচার হতে হবে। আওয়ামী লীগ যদি এতো বছর পর শেখ মুজিব হত্যাকান্ডের বিচার করতে পারে, যুদ্ধাপরাধের বিচারের নামে বিএনপি জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি দিয়ে হত্যা করতে পারে তাহলে আওয়ামী লীগের এই হত্যাকান্ডগুলি যা কিনা গোটা জাতির চোখের সামনে ঘটেছে এগুলোর বিচার হবে না কেনো? আমার মনে হয় এসব কিছুর একটা বিহিত না হওয়া পর্যন্ত কাগজে কলমে আওয়ামী লীগ নির্বাচন করার সুযোগ পেলেও বাস্তবে তারা এবারের নির্বাচন করতে পারবেন না।

তিনি আরও বলেন, স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার বিগত ষোল বছর আমাদের উপর যে পরিমাণ জুলুম নির্যাতন চালিয়েছে তাতে তারা মাঠে নামলে সারা দেশে চরম বিশৃংখলার সৃষ্টি হবে। এই দলের যারা মাঠে নামবে তারাই জনগনের রোষানলে পরবে। আর বিএনপির তৃনমূলও তাদেরকে ছাড়বে না। তাই যে যাই মনে করুক না কেনো আমি মনে করি আওয়ামী লীগের এবারের নির্বাচনে অংশ নেয়ার মতো কোনো সুযোগ থাকবে না।

একই বিষয়ে বিএনপি নেতা শহীদুল হক শহীদ বলেন, আওয়ামী লীগের আগে বিচার হতে হবে তারপর তারা নির্বাচন করবে কি করবে না সেটা দেখা হবে। বিগত ষোল বছর এই আওয়ামী লীগ আমাদের উপর যে জুলুম করেছে তাতে তাদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারা মাঠে দাড়াতেই পারবে না। তাদেরকে দাড়াতে দেয়া হবে না। তাই তাদেরকে নির্বাচন করার সুযোগ দেয়া হলে মাঠে চরম বিশৃংখল পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। কারন রক্তের দাগ এখনো শুকায়নি। আর টানা ষোলটি বছর আমাদের দলের নেতাকর্মীদের উপর যে নিমর্ম নির্যাতন চালানো হয়েছে সেটা এতো সহজে বিএনপির নেতাকর্মীরা ভুলে যাবে না। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি এবার আওয়ামী লীগ মাঠেই নামতে পারবে না। নামলেই চরম জনরোষের মুখে পরবে তারা।