নাসিকের সীমানা বর্ধনে আবারও শামীমের বাধা

305
নাসিকের সীমানা বর্ধনে আবারও শামীমের বাধা

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

নারায়ণগঞ্জ সদর থানাধীন গোগনগর ও ফতুল্লা থানাধীন কাশীপুর, এনায়েতনগর, ফতুল্লা, কুতুবপুর ইউনিয়নকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত করার ক্ষেত্রে আবারও বাধা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে।

সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রচেষ্টায় এ পাঁচ ইউনিয়ন এলাকাকে সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত করার বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত হচ্ছিলো ঠিক তখনই শামীম ওসমান বিষয়টি জানতে পারে। পরবর্তীতে গত ২৪ এপ্রিল স্থানীয় সরকার মন্ত্রীকে একটি বিভ্রান্তিকর চিঠির মাধ্যমে এসব ইউনিয়নকে সিটি করপোরেশনের আওতায় না নেয়ার জন্য অনুরোধ করেন তিনি।

শুধু তাই নয় শামীম ওসমান দাবি করেন, এসব ইউনিয়নকে সিটি করপোরেশনের আওতায় নিলে নাকি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৪ এবং নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি ঘটবে। শামীম ওসমান তার চিঠিতে আরো দাবি করেন, তিনি নাকি ফতুল্লার ইউনিয়নগুলিতে সিটি করপোরেশনের তুলনায় বেশি উন্নয়ন করেছেন। এমনকি তার নির্বাচনী এলাকার সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকাকে সিটি কর্পোরেশনের আওতায় নেয়ার কারনে সেখানে তেমন কোনো উন্নয়ন হয় নাই। তাই সিদ্ধিরগঞ্জের মানুষ ক্ষুব্দ।

তবে, কার্যত সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন হওয়ায় বিগত তিনটি নির্বাচনে সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় মেয়র আইভী বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন। শুধু তাই নয়, দিনে দিনে সিদ্ধিরগঞ্জে আওয়ামী লীগের মেয়র আইভীর জনপ্রিয়তা আরো বাড়ছে। তাই শামীম ওসমান যে দাবি করেছেন তা বাস্তবতার সাথে কোনোই মিল নেই সেটা নিশ্চয়ই জানেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ সকারের প্রধানমন্ত্রী নিজেও।

বাস্তবতা হলো শামীম ওসমানের এই চিঠি পুরোটাই নিরেট মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয়। এসব ইউনিয়নগুলো ও সিটি কপোরেশনর উন্নয়নের যে কি পার্থক্য হয়েছে সেটা খোদ স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সরেজমিন পরিদর্শন করলেই দেখতে পাবেন। সিদ্ধিরগঞ্জের তুলনায় ফতুল্লায় আসলে কোনো উন্নয়নই হয়নি বলে দাবি স্থানীয়দের।

আইভী মেয়র হওয়ার পর সিদ্ধিরগঞ্জে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জে ড্রেনেজ ব্যবস্থা আগের চেয়ে ঢের উন্নয়ন হয়েছে বলে জানায় সিদ্ধিরগঞ্জবাসী। তাদের দাবি, আগে বৃষ্টি হলেই আমরা পানিবন্দী জীবন কাটাতাম। কিন্তু আইভী মেয়র হওয়ার পর তার দক্ষ নেতৃত্বের কারণে এবং সুনিপুন উন্নয়নের কারণে মূষলধারে বৃষ্টি হলেও এখানো কখনো জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় না।

অপরদিকে, ফতুল্লায় আরসিসি ড্রেন করাতো দূরের কথা ড্রেনেজ ব্যবস্থায় আধুনিকায়ন করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন শামীম ওসমান। তাই বছরে প্রায় ছয় মাস গোটা ফতুল্লা থানা এলাকা বৃষ্টির পানিতে ডুবে থাকে। ফতুল্লার এনায়েতনগর, ফতুল্লা এবং কুতুবপুর ইউনিয়নের অনেক এলাকায় প্রায় সারা বছরই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। যা কিনা নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কোনো এলাকায় দেখা যায় না।

এছাড়া নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন তার তিন থানা এলাকায় অন্তত দশটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন। এমন একটি মেগা প্রকল্পও ফতুল্লায় দেখা যাবে না। বরং ফতুল্লার মানুষ মনে করে, উন্নয়নের নামে তাদের এলাকায় লুটপাট হয়েছে। কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ফতুল্লার রাস্তাঘাটগুলির পরিকল্পিত কোনো উন্নয়ন এবং প্রশস্ত করা হয়নি।

ফতুল্লায় কোনো বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নেই এবং নেই কোনো মশক নিধন কর্মসূচি। যার ফলে বিপুল জনবসতিপূর্ণ ফতুল্লা থানা এলাকার মানুষ চরম দূর্ভোগের মাঝে বসবাস করছেন। তাই ফতুল্লাবাসী আশা করে, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন এবং সমবায় মন্ত্রী যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব শামীম ওসমানের এই মিথ্যা চিঠিকে আমলে না নিয়ে ফতুল্লার চারটি ইউনিয়ন এবং গোগনগরকে সিটি কর্পোরেশনের আওতায় নেবেন বলে আশা করছেন ফতুল্লার অধিকাংশ মানুষ।