সরকারী চাকরিজীবী, পুলিশ, গাড়ি চালকদের ডোপ টেস্ট হলে সাংবাদিকদের কেন নয়?...

না:গঞ্জের সাংবাদিকদের ডোপ টেস্টের দাবি জনসাধারণের

155
সরকারী চাকরিজীবী, পুলিশ, গাড়ি চালকদের ডোপ টেস্ট হলে সাংবাদিকদের কেন নয়?

মো. সাইফুল ইসলাম সায়েম, নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

সভ্য দেশ ও জাতির কাছে সাংবাদিকতা হচ্ছে অন্যতম মহান একটি পেশা। সাধারণ মানুষের কাছে সাংবাদিক মানে সমাজের দর্পণ, সত্য উন্মোচনের মাধ্যম। প্রভাবশালী ও দুর্নীতিবাজদের কাছে এটি মহা বিপদজনক। এক সময় দেশ ও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের অনেকেই সাংবাদিকতাকে মূল পেশা হিসাবে বেছে নিতেন। কিন্তু সে কথা এখন বেশ পুরোনো।

কেননা অত্যন্ত সম্মানজনক এ পেশাটিতে নারায়ণগঞ্জে দিন দিন বাড়ছে টাউট-বাটপারদের সংখ্যা। নিজের নাম লিখতে না জানা সাংবাদিকদের সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। তবে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বিষয় হলো, পেশাটিতে বর্তমানে যোগ হচ্ছে মাদকাসক্তরাও। দিনে সাংবাদিকতার নাম বিক্রি করে বৈধ-অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জন করে রাতে সেই অর্থ ব্যয় করে মাদক সেবনে। সাংবাদিক নামধারী ও কার্ডধারী এ সকল মাদকাসক্তদের চিহ্নিত করে এখনই আইনের আওতায় আনার দাবি জানান সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ।

তাদের মতে, জাতীয়ভাবে সরকারী চাকরিজীবীদের ডোপ টেস্ট নিয়ে কথা হচ্ছে। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্রদেরও ডোপ টেস্ট হবে। গাড়ির চালক ও পুলিশ সদস্যদের ডোপ টেস্ট ইতিমধ্যেই হচ্ছে। তাহলে মহান এ পেশা তথা সাংবাদিকতায় যুক্তদের ডোপ টেস্ট কেন নয়?

সমাজের বিশিষ্টজনদের মতে, সাংবাদিকতার মতো মহান এ পেশা যাতে কলুষিত না হয় সে লক্ষ্যে এবং সাংবাদিকতার গুণগত মান অক্ষুন্ন রাখতে যত দ্রুত সম্ভব সাংবাদিকদের ডোপ টেস্ট চালু করা হোক। পুরো দেশজুড়ে এখনি সম্ভব না হলেও অন্তত নারায়ণগঞ্জে যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে এটি চালু করা হয় সে দাবি জানান তারা। ৬ মাস অন্তর অন্তর বা বছরান্তে যেন তা পুনরাবৃত্তি করা হয় এ দাবিও রাখেন তারা।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম বলেন, আসলে পুলিশের বাইরে গিয়ে কারো ডোপ টেস্ট আমরা করি না। তবে নিজ নিজ সংগঠনের উচিত এ ডোপ টেস্ট করা।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি খন্দকার শাহআলম বলেন, এ বিষয়ে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকে প্রশাসনের কাছে বার বার বলা হয়েছে, যদি সাংবাদিক নামধারী কেউ মাদক বিক্রির সাথে জড়িত থাকে বা মাদকাসক্ত হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেয়া হবে।

একই বিষয়ে কথা হলে নারায়ণগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুস সালাম বলেন, বর্তমানে যে কেউ মহান এ পেশায় ঢুকে যাচ্ছে ফলে সাংবাদিকতার গুণগত মান ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে। সাংবাদিকতাকে ব্যবহার করে অনেকেই মাদক থেকে শুরু করে বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছে। পত্রিকা ও অনলাইনের সম্পাদকদের কাছে দাবি জানাবো, অধিকতর যাচাই-বাছাই করে যাতে সাংবাদিকতায় নিয়োগ দেয়া হয়।

ইতিমধ্যে যারা জড়িত হয়ে পড়েছে তাদের বিষয়ে সালাম বলেন, যারা আসক্ত তাদেরকে এ পেশা থেকে দুরে সরিয়ে রাখার জন্য আমাদেরকে সতর্ক হতে হবে। এবং এ পেশায় তারা যাতে থাকতে না পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।