নতুন করে পথ দেখালো কাশীপুর

83

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

অত্যন্ত জাকজমকপূর্ণ আয়োজনের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটলো ভিন্ন মাত্রার নতুন আয়োজন তথা দূরত্ব ঘুচিয়ে পারস্পরিক বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার নতুন এক সংস্করণ, কাশীপুর সার্বজনিন মিলন উৎসবের। দিনব্যাপী দেশবরেণ্য ব্যক্তিদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে রাত্রিতে মন মাতানো শিল্পীদের গানের আনন্দে ইতি ঘটলো অভিনব এ আয়োজনের। এরইসাথে নারায়ণগঞ্জবাসী তথা সমগ্র দেশবাসীকে নতুন করে পথ দেখালো কাশীপুরবাসী।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) বিকেলে সরকারি বিধি-নিষেধ মেনে কাশীপুর ইউনিয়নের সর্বসাধারণের উপস্থিতিতে ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী হাটখোলা স্কুলমাঠে শুরু হয় এ সার্বজনিন মিলন উৎসবের।

ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আয়োজিত এ উৎসব অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)’র সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ ইকবালের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান। ‘উৎসব ব্যক্তিত্ব’ হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার। আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মাহফুজা বেগম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. এস এম জাবেদ।

আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি চন্দন শীল, নারায়ণগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফজলুল হক রুমন রেজা, কাশীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম সাইফ উল্লাহ বাদল, জশনে জুলুস ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শ্যামল প্রমুখ।. .

এছাড়া ‘উৎসব বক্তা (প্রি-রেকর্ডেড ভিডিও)’ হিসেবে যুক্ত হয়ে বিশেষ সামাজিকবার্তা প্রদান করেন, উৎসবের শুভ কামনা করেন এবং আহবায়ক কমিটিসহ সমগ্র কাশিপুরবাসীকে শুভেচ্ছা জানান, দেশের বিশিষ্ট পরিবেশ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত, বরেণ্য লেখক, নাট্যকার ও সাংবাদিক আনিসুল হক, এবং খ্যাতিমান শিশু সাহিত্যিক সুজন বড়ুয়া।

উৎসব বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন, দেশের অনেক স্থানে অতিথি বিভিন্ন ধরনের আয়োজনে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে আমার। তবে আজকের আয়োজনটি সত্যি মনোমুগ্ধকর, নতুন একটি সংস্করণ। এক কথায় বলতে গেলে, নারায়ণগঞ্জবাসী তথা সমগ্র দেশবাসীকে নতুন করে পথ দেখালো কাশীপুরবাসী।

তিনি আরও বলেন, আজকে আমার এখানে আসার কথা ছিলো না, অন্য একটি প্রোগ্রাম ছিলো আমার। কিন্তু আমি যখন ড. ইকবালকে না করলাম তখন আমারই একজন সহযোগী বললো ড. ইকবাল যখন আপনাকে বলেছে তাহলে স্যার আপনাকে অবশ্যই যেতে হবে। আমিও তখন আর না এসে থাকতে পারলাম না। তবে, স্বাধীণতা দিবসের আগে এমন একটি মহৎ অনুষ্ঠান যেখানে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান তথা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা দেয়া হচ্ছে, সেখানে আসতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি। একসাথে এতো মুক্তিযোদ্ধাদের দেখে ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন, সত্যিই আমি অবিভুত যে একসাথে এতো মুক্তিযোদ্ধাদের তথা জাতির বীর সন্তানদের সম্মাননা দেয়ার সুযোগ আমার হলো।

এর আগে, প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। পরে অন্যান্য অতিথিবৃন্দও পর্যায়ক্রমে বক্তব্য রাখেন এবং নতুন ও ভিন্ন মাত্রার এ অনুষ্ঠানের ভুয়সী প্রশংসা করেন। একইসাথে তারা আগামীতেও এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য ড. মো. ইকবালকে দায়িত্ব নেয়ার আহবান জানান।

দিনব্যাপী চলমান এ মিলন উৎসবে শিশুদের জন্য খেলাধুলা, শিশু বিনোদন, তথ্যচিত্র প্রদর্শনী, মিলনমেলা, ফটোগ্রাফি, গুণীজন সম্মাননা (মুক্তিযুদ্ধ, সমাজসেবা ও শিক্ষা-মানবসম্পদ উন্নয়ন), নবনির্বাচিত জনপ্রতিনিধি পরিচিতি, স্মৃতিচারণ, অভিজ্ঞতা বিনিময়, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নৈশভোজসহ ব্যাপক আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়।