দ্রব্যমূল্যের যাতাকলে পিষ্ট জনজীবন

182
দ্রব্যমূল্যের যাতাকলে পিষ্ট জনজীবন

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

দ্রব্যমূল্যের যাতাকলে পিষ্ট হয়ে নারায়ণগঞ্জের সাধারন মানুষ এখন অনেকটাই কম খাচ্ছেন, কম কিনছেন বলে জানা গেছে। প্রতিটি পরিবারেই এখন খাদ্য পণ্যের বাজেটে কাটছাট করা হয়েছে। মাছ মাংসের দর আকাশ ছোঁয়া হওয়ায় অনেক পরিবারই খাদ্যপন্যের বাজেটে পরিবর্তন এনেছে। ফলে নারায়ণগঞ্জসহ সারাদেশে সীমাহীন ভাবে দ্রব্যমূল্য বাড়ার কারনে একেবারে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন সাধারন মানুষ।

গত কয়েকদিন ধরে সীমাহীন ভাবে দ্রব্যমূল্য বেড়েই চলেছে। পরিস্থিতি এখন এমন দাড়িয়েছে যে অনেক পরিবার না খেয়ে থাকার উপক্রম হয়েছে। গতকাল নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ডিমের দাম বেড়ে এক লাফে সেই যে ৫০/৫৫ টাকায় উঠেছে, গতকালও সেই দামেই বিক্রী হয়েছে। গতকাল প্রতি কেজি মিনিক্যাট চাল বিক্রী হয়েছে ৭৫ টাকা কেজি দরে।

সয়াবিন তেলের দাম উঠেছে প্রতি লিটার ২০৫ টাকা। দোকান মালিকরা জানিয়েছেন সয়াবিন তেলের দাম লিটার প্রতি আরো বিশ টাকা করে বাড়তে পারে। প্রতি কেজি পিয়াজ বিক্রী হয়েছে ৫৫ টাকা দরে। চিনি বিক্রী হয়েছে ৯০ টাকা কেজি। মশুর ডাল বিক্রী হয়েছে প্রতি কেজি ১৫০ টাকা। প্রতিটি পন্যের দাম এখন আকাশ ছোঁয়া।

এছাড়া বাস, ট্রাক সহ পরিবহন ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় সব কিছুর দাম আকাশ ছুয়েছে। তাই সাধারন মানুষের মাঝে এখন আতংক বিরাজ করছে। বেড়েছে মাছ, মুরগির মাংস এবং শাকসব্জির দাম। ফলে বিভিন্ন দোকানপাটে বেঁচাকেনায় ভাটা পরেছে। বাধ্য হয়ে মানুষ এখন কম কিনছে, কম খাচ্ছে। সাধারন মানুষের মাঝে চরম আতংক বিরাজ করছে।

এদিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফতুল্লার উত্তর মাসদাইরের মুদি দোকানদার আবদুর রহিম রিপন বলেন, হঠাৎ করেই সব কিছুর দাম বেড়ে গেছে। আজ সকালে ডিম রেখেছি প্রতি হালি ৪৫ টাকা করে। তাই এখন বিক্রি করতে হবে পঞ্চাশ টাকা করে। তাছাড়া প্রতি দিন যে পরিমান ডিম দিয়ে যায় আজ দিয়েছে তার চেয়ে অনেক কম। তাই দাম আরো বাড়বে বলে আমি মনে করি।

তিনি আরো বলেন, প্রতি লিটার সয়াবিন তেল এখন আমরা ২০০ টাকা করে বিক্রী করছি। কিন্তু জানেত পেরেছি তেলের দাম লিটারে আরো বিশ টাকা করে বাড়বে। তিনি আরো বলেন, এভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়ার কারনে অনেকটাই কমে গেছে বেঁচাকেনা। মানুষ কম খেতে শুরু করেছে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের এখন বড় একটি সমস্যা হলো এভাবে দাম বাড়ার কারনে ব্যবসায় পুঁজি খাটাতে হচ্ছে অনেক বেশি। ফলে দোকান চালানোই এখন মুশকিল হয়ে পরেছে।

অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ শহরের বাবুরাইল এলাকার বাসিন্দা কাজী জসিম উদ্দিন মনা বলেন, আমরা মনে করি কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে গোটা জাতি। পরিস্থিতি এখন অনেকটাই শ্রীলংকার মতো হয়ে গেছে। দেশে এখন ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাজারে সব কিছুর দাম বেড়ে গেছে। এরই মধ্যে সরকার নজিরবিহীন ভাবে জ্বালানী তেলের দাম বাড়িয়েছে। ফলে সরকারের ব্যার্থতায় দেশে দ্রব্যমূল্য আরো বাড়বে বলে আমরা মনে করি। ফলে আরো কঠিন পরিনতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি। এই পরিস্থিতি সামাল দেয়াই এখন সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে আমরা মনে করি।