দেশের সবচেয়ে ধনী জেলা নারায়ণগঞ্জ বি গ্রেডে কেন প্রশ্ন নারায়ণগঞ্জবাসীর

421
দেশের সবচেয়ে ধনী জেলা বি গ্রেডে, প্রশ্নবিদ্ধ প্রভাবশালীরা

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের জন্মস্থান, বাংলাদেশের রাজনীতির সূতিকাগার, দেশের সবচেয়ে ধনী জেলা, বাংলাদেশের বৈদেশীর মুদ্রা অর্জনের দিক থেকে প্রথম স্থান অধিকারী জেলা, রাজধানীর সবচেয়ে নিকটবর্তী জেলাসহ ব্যাপক সুনাম রয়েছে ঐহিত্যবাহী নারায়ণগঞ্জের। দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের ধারক-বাহক হওয়ার পরও কেন এ জেলাটি এখনো পর্যন্ত জাতীয় পর্যায়ে বি গ্রেডের জেলা হিসাবে পরিগণিত হয় তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে নারায়ণগঞ্জবাসীর মাঝে।

নারায়ণগঞ্জবাসীর মতে, আমাদের রয়েছে বিসিক শিল্প নগরী, খাতুনগঞ্জের পর দেশের বৃহত্তম পাইকারী বাজার নিতাইগঞ্জ, এক সময়ে দেশের রাজধানী ছিলো যে সোনারগাঁ তাও অবস্থিত এ নারায়ণগঞ্জেই। এখানে দশ বছর আগে তিনটি পৌরসভাকে ভেঙ্গে গঠিত হয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন, আছে দেশের অন্যতম প্রাচীন বিদ্যাপীঠ সরকারি তোলারাম বিশ^বিদ্যালয় কলেজ, নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল সবই আমাদের আছে। রাজনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা-ঐতিহ্য সকল সেক্টরেই এতো সুনাম থাকার পরও নারায়ণগঞ্জকে কেন এ গ্রেডের জেলায় উন্নীত করা যাচ্ছেনা এমন প্রশ্ন জেলাবাসীর।

তারা আরও বলেন, আমাদের রয়েছে দেশের অন্যতম প্রভাবশালী রাজনীতিবীদ পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীর বীর প্রতিক, বিশ্বের প্রভাবশালী ১০০ নারী রাজনীতিবীদদের মধ্যে অন্যতম নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, আরেক প্রভাবশালী রাজনীতিবীদ ওসমান পরিবারের বর্তমান হাল যিনি ধরে রেখেছেন সেই নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান। আছেন দেশের সকল গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিকেএমইএ’র সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান, এক সময়ের বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করা নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু। এছাড়াও আছেন বঙ্গবন্ধুর সানিধ্যে রাজনীতি করার সুযোগ পাওয়া বর্ষিয়ান রাজনীতিবীদ, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবদুল হাই, বঙ্গবন্ধু কণ্যার জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে হলুদ পাখি উপাধি পাওয়া আরেক বর্ষিয়ান ও ক্লিন ইমেজের রাজনীতিবীদ, মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সদ্য সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন।

দেশের সবচেয়ে গরীব জেলা হিসাবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত কুড়িগ্রাম জেলা এ গ্রেডে উন্নীত হয়েছে অনেক আগেই। এতো এতো প্রভাবশালী রাজনীতিবীদ থাকা সত্ত্বেও এবং এবং সকল আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকার পরও এ নারায়ণগঞ্জ বারবার অবহেলিত, নারায়ণগঞ্জবাসী বারবার অবহেলিত। অবহেলার কারণ হিসাবে জেলা প্রশাসকসহ সরকারী দলের নেতাকর্মীদেরকেই দুষছেন সাধারণ মানুষ।

সাধারণ মানুষের মতে, জেলা প্রশাসকরা এখানে আসেন ২/১ বছর থাকেন এবং রুটিন অনুসারে যে কাজ আছে তা করেন কিন্তু এখানকার মানুষের জন্য তেমন কিছুই করেন না। যদি করতেন তাহলে স্বাধীণতার পর থেকে এখনো পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের অবদানসমূহ জাতীয় পর্যায়ে তুলে ধরে এ জেলা ও জেলাবাসীর সম্মান বাড়াতে ভুমিকা রাখতেন। পাশাপাশি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে নারায়ণগঞ্জের যথাযথ অবস্থান তুলে ধরে এই জেলাকে এ গ্রেডে উন্নীত করতে বড় ভুমিকা রাখতে পারতেন।

তাই, অনতিবিলম্বে নারায়ণগঞ্জ জেলাকে এ গ্রেডে উন্নীত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করার দাবি জানান নারায়ণগঞ্জে আপামর জনসাধারণ। তাদের মতে, বর্তমান ক্ষমতাসীণ দল আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদেরকেই এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে, কেননা দীর্ঘ সময় ধরেই দলটি ক্ষমতায় আছেন। এছাড়াও দলটির প্রধান, প্রধানমন্ত্রী দেশের প্রতিটি জেলার দিকে নজর দিচ্ছেন উল্লেখ করে তারা বলেন, জেলা প্রশাসকসহ সরকারী দলের নেতাকর্মীরা যদি চায় তাহলে শীঘ্রই নারায়ণগঞ্জকে এ গ্রেডের জেলায় উন্নীত করা সম্ভব।