দুই কোর্ট একসাথে রাখার পক্ষে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারহানা ফেরদৌস

233

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

বাংলাদেশের ৬৪টি জেলায় চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণ (১ম পর্যায়) (৩য় সংশোধিত) শীর্ষক চলমান প্রকল্পের নিবিড় পরিবীক্ষণের উপর স্থানীয় অংশগ্রহনকারীদের সাথে এক মতবিনিময় কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (০৬ এপ্রিল) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ চীফ জুয়িসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের সম্মেলন কক্ষে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

নারায়ণগঞ্জ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারহানা ফেরদৌসের সভাপতিত্বে এতে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. আমিনুর রহমান, প্রজেক্ট প্রমোশন এন্ড ম্যানেজমেন্ট কনসালটেশন এর টিম লিডার ড. ইঞ্জিনিয়ার আবু তাহের খন্দকার, প্রজেক্ট প্রমোশন এন্ড ম্যানেজমেন্ট কনসালটেশন এর সিএও শরিফুল ইসলাম মোল্লা, সিনিয়র সাংবাদিক, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম জীবন, নারায়ণগঞ্জ বার এসোসিয়েশনের সভাপতি এড. হাসান ফেরদৌস জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক এড. রবিউল আমিন রনি, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রত্মা এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার জাকির হোসেন প্রমুখ।

পুরাতন কোর্ট তথা কালিরবাজারে নির্মিত ভবনটি কেন নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট হিসাবে ব্যবহারা করা হচ্ছে না এ বিষয়ে আলোচনা হয় কর্মশালায়। এতে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. আমিনুর রহমান স্বাগত বক্তব্য রাখেন এবং কেন এ ভবনে আদালতের কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না সে বিষয়ে জানতে চান।

এর প্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জ বার এসোসিয়েশনের সভাপতি এড. হাসান ফেরদৌস জুয়েল বলেন, সিজিএম কোর্ট যদি স্থানান্তরিত হয়ে কালিরবাজারের ঐ ভবনে যায় তাহলে দুই কোর্টের মাঝে প্রায় ২ কিলোমিটার দুরত্ব থাকে যা বিচার কার্যে বিঘ্ন ঘটাতে পারে। কেননা বড় বড় এবং রাষ্ট্রবিরোধী মামলার অনেক আসামী আছে যাদেরকে সিজিএম কোর্ট এবং জর্জ কোর্টে তুলতে হয়। তখন নিরাপত্তাজনিত সমস্যাসহ, ঐ ভবনে আইনজীবীদের বসার কোনো ব্যবস্থা করা হয় নি।

তিনি আরও বলেন, এমনিতেই নারায়ণগঞ্জ শহরে ব্যাপক যানজট তার উপর শহরের মধ্যে সিজিএম কোর্ট হলে যানবাহনের যাতায়াতের পরিমাণ আরও বাড়বে ফলে যানজট আরও ব্যাপক আকার ধারণ করতে পারে যা নারায়ণগঞ্জবাসীর জন্য মরার উপর খাড়ার ঘা হতে পারে। তাই দুটি কোর্টকে একত্রে রাখার আহবান জানান তিনি।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রত্মা এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার জাকির হোসেন বলেন, ২০১৮ সালে ভবনটির কাজ শেষ হলেও কাজদাতা প্রতিষ্ঠান আমার কাছ থেকে ভবনটি বুঝে না নেয়ায় প্রতি মাসে চারজন পাহাড়াদার, দুই শিফটে ০৪ জন সাইট ইঞ্জিনিয়ার, সাইট ম্যানেজার এর বিতন, বিদ্যুৎ বিলসহ প্রায় দেড় লক্ষ টাকা অতিরিক্ত ব্যায় হচ্ছে। এছাড়াও বৈদ্যুতিক ও স্যানিটারি ফিটিংস ও মালামাল দীর্ঘদিন অব্যবহৃত থাকার কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তির বক্তব্যের পরে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. আমিনুর রহমান ও প্রজেক্ট প্রমোশন এন্ড ম্যানেজমেন্ট কনসালটেশন এর টিম লিডার ড. ইঞ্জিনিয়ার আবু তাহের খন্দকার শীঘ্রই এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার লক্ষ্যে সুপারিশ করা হবে বলে জানান।

সভাপতির বক্তব্যে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারহানা ফেরদৌস বলেন, ঐ ভবনে সিজিএম কোর্ট স্থানান্তর করতে আমার কোনো সমস্যা নেই। তবে পুলিশ প্রশাসন, জেলা প্রশাসন ও বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জর্জ স্যার সকলকে একসাথে রেখে আদালতে কার্যক্রম পরিচালনা করা সহজ হবে। তাছাড়া অনেক মামলার রায় দিতে গেলে জেলা ও দায়রা জর্জ স্যারকে দেখাতে হয় তখন, তার পরামর্শ নিতে হয় তখন উনি এক কোর্টে আর আমরা আরেক কোর্টে থাকলে তা বেশ কষ্টসাধ্য। একইসাথে এখানে আইনজীবীদের বসার কোনো ব্যবস্থা নেই, বিচারপ্রার্থী বাদি ও বিবাদীদের স্বজনরা যখন প্রবেশ করবে তখন শহরে প্রচুর গাড়ি ঢুকবে এবং যানজট সৃষ্টি হতে পারে। তাছাড়া প্রতিদিন ৭টি থানার আসামীদের নিয়ে প্রিজন ভ্যান কোর্টে আসবে, এসব যানবাহনের পার্কিংয়েরও কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি কালিরবাজারে নির্মিত ঐ ভবনে।

সবশেষে তিনি বলেন, যেহেতু আমি সরকারের প্রতিনিধি সেহেতু ঐ ভবন আমার। ঐ ভবনে গিয়ে কাজ শুরু করতে আমার কোনো সমস্যা নেই তবে সকলকে সাথে রাখলে কাজ করা সহজ হতো। তাই আমি বলবো ওখানে আশেপাশে যদি জেলা ও দায়রা জর্জ কোর্ট এবং আইনজীবীদের বসার স্থানসহ পুলিশ প্রশাসনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা, হাজত খানা করা যায় তাহলে কোনো সমস্যা নেই।

এতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকার কথা ছিলো পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের প্রধান (অতিরিক্ত সচিব) এস এম হামিদুল হকের এবং বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকার কথা ছিলো বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের পরিচালক ড. খান মো. মনিরুজ্জামানের।