রূপগঞ্জের রাজনীতি -----------...

দীপু, খোকনের উত্থানে ভীত মন্ত্রী গাজী!

170
দীপু, খোকনের উত্থানে ভীত মন্ত্রী গাজী

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

রূপগঞ্জের রাজনীতিতে বিরাট উথ্যান ঘটেছে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মোস্তাফিজুর রহমান ভুইয়া দীপু এবং জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকনের। এই দুই নেতা গোটা রূপগঞ্জ জুড়ে এতোটাই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন যে তাদের উথ্যানে ভীতসন্ত্রস্ত্র হয়ে পরেছেন ওই এলাকার বর্তমান এমপি ও মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী।

রূপগঞ্জের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের মতে, সম্প্রতি দীপু ভুইয়া ও খোকনের পেছনে জড়ো হয়েছে রূপগঞ্জের হাজার হাজার তরুন যুবক। রূপগঞ্জের সব ইউনিয়নে এবং সব গ্রামের তরুনদের মাঝে রাজনৈতিক হিরো হিসাবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছেন দীপু ভুইয়া এবং খোকন জুটি। আর গোলাম ফারুক খোকনের রাজনৈতিক উথ্যানের পেছনেও রয়েছে দিপুর হাত। তাই গোলাম ফারুক খোকন এবার নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর আরো দিশেহারা হয়ে পড়েছেন গোলাম দস্তগীর গাজী।

কেনোনা দীপু আর খোকনের নেতৃত্বে সারা রূপগঞ্জ জুড়ে যেভাবে কিশোর, যুবক থেকে শুরু করে আবাল-বৃদ্ধবনিতা জেগে উঠেছে তাতে আগামী দিনের আন্দোলনে এই বিক্ষুব্দ জনতাকে সামাল দেয়া মোটেও সম্ভব হবে না গাজী এমপির পক্ষে। যার ফলে তিনি এখন দিশেহারা হয়ে হামলা মামলার পথ বেছে নিয়েছেন। মন্ত্রী এখন দীপু ভুইয়া এবং গোলাম ফারুক খোকনকে ভয় দেখাতে চাইছেন। লেলিয়ে দিয়েছেন তার সন্ত্রাসী বাহিনী। কিন্তু এতে সার্বিক পরিস্থিতি হিতে বিপরিত হচ্ছে বলেই মনে করে রূপগঞ্জের সচেতন মহল।

এদিকে, রূপগঞ্জের বিভিন্ন শ্রেনীপেশার মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিগত পনেরো বছর ধরে ওই জনপদের মানুষ মোটেও স্বস্তিতে নেই। মন্ত্রী গাজী নিজে এবং তার অনুসারী ভূমি দস্যুরা কেড়ে নিয়েছে তাদের ভিটেমাটি। মানুষ কোথাও গিয়ে কোনো ন্যায় বিচার পাননি। মন্ত্রী গাজী এবং তার পরিবার নিজেদেরকে রূপগঞ্জের জমিদার মনে করেন। তারা রাজা আর ওই এলাকার সর্বস্তরের সাধারন মানুষ যেনো তাদের প্রজা। গোটা রূপগঞ্জ জুড়ে তিনি গড়ে তুলেছেন বিশাল সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক। মূলত তার কারনেই গোটা রূপগঞ্জ জুড়ে খুন-খারাবি লেগেই আছে। এককথায়, রূপগঞ্জ এখন সন্ত্রাসের জনপদ হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে।

তাই আরো আগে থেকেই গাজী বাহিনীর এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে সোচ্চার রয়েছেন বিএনপি নেতা দীপু ভুইয়া এবং গোলাম ফারুক খোকন। আর এ কারনেই এখন রূপগঞ্জের সর্বস্তরের সাধারন মানুষ এদের পেছেনে এসে জড়ো হয়েছেন। তাই এ সময়ে এসে দীপু আর খোকনের রাজনৈতিক কর্মসূচিগুলিতে জনতার ঢল নামছে। বিশেষ করে তারা ডাক দিলে হাজার হাজার তরুন যুবক মাঠে নেমে আসছে। আর এতেই দিশেহারা হয়ে পরেছেন মন্ত্রী গাজী।

কারন আগামী দিনে যে আন্দোলন সংগ্রাম এবং নির্বাচন আসছে তাতে এই দুই নেতাকে সামাল দেয়া মন্ত্রী গাজীর পক্ষে মোটও সহজ হবে না। এ কারনেই আগে থেকে তিনি তাদেরকে ভয় দেখাতে চাইছেন বলে মনে করেন রূপগঞ্জবাসী। আর এ কারনেই সাম্প্রতিক সময়ে এসে দীপু ভুইয়া এবং গোলাম ফারুক খোকনের উপর একের পর এক হামলা হচ্ছে। হামলা হচ্ছে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের উপরেও।

এদিকে, বিএনপির নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর শেল্টারে এমদাদুল হক পাভেল, সবুজ খান শম্ভু, সহীদ, তাওলাদ এবং লিটন সহ বিশাল এক সন্ত্রাসী চক্র গোটা রূপগঞ্জ জুড়ে সক্রিয় রয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই এলাকার বিএনপির নেতাকর্মীরা। এলাকায় ভূমিদস্যুতা, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজী সহ সকল প্রকারের অপরাধের সাথে জড়িত এই চক্র। এদের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে বিশাল সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক। গোটা রূপগঞ্জ জুড়ে এই নেটওয়ার্কের সদস্য রয়েছে প্রায় পাঁচ শতাধিক সন্ত্রাসী।

এসব সন্ত্রাসীরা যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ সহ আওয়ামী লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে ভয়ংকর সন্ত্রাস। এদের অনেকে আবার সরকারী দলের বিভিন্ন পদেও রয়েছে। এদের দাবি, এরা মন্ত্রীর লোক। মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এদেরকে দেখা যায়। তাই প্রশাসন এদেরকে কিছু বলে না। সব সময় এই সন্ত্রাসীরা থেকে যায় ধরা ছোঁয়ার বাহিরে।

এসব সন্ত্রাসীদের চেনে থানা পুলিশও। জানে তাদের সকল অপরাধের কথা। কিন্তু মন্ত্রীর লোক হিসাবে পরিচিতি থাকায় এদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যাবস্থা নেয়না পুলিশ। যার ফলে গোটা রূপগঞ্জ জুড়ে একের পর এক খুন, দখল সহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ঘটেই চলেছে। এবারও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকনের বাড়িতে হামলার পর এই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ।

অপরদিকে, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম ফারুক খোকন সহ বিএনপির নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সরকারের পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীরের নির্দেশেই নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকনের বাড়িতে হামলা হয়েছে। এবারের এই হামলার মাধ্যমে চারটি গাড়ি সহ খোকনের বাড়িতে ব্যাপক ভাংচুর করে লাখ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করার পরেও থানায় মামলা করেননি গোলাম ফারুক খোকন। কেনো মামলা করেননি জানতে চাইলে তিনি বলেন থানায় লিখিত অভিযোগ করলেও পুলিশ মামলা নেয় না। এর আগেও হামলা করে গুলি করা হয়েছে এবং পুলিশ এসে গুলির খোসা উদ্ধার করেছে। তখন অভিযোগ করেছিলাম কিন্তু থানা কোনো মামলা নেয়াতো দূরের কথা একজন আসামীকেও গ্রেফতারের কোনো চেষ্ঠা করেনি। আর এ কারনেই এবারও স্বশস্ত্র হামলা করলো আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা।

তিনি বলেন, যারা হামলা করেছে তারা সবাই মন্ত্রীর লোক। মন্ত্রীর নির্দেশেই আমাদের উপর বার বার হামলা করা হচ্ছে। আর এ কারনেই পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, মন্ত্রী গাজী সাহেব রূপগঞ্জে সন্ত্রাস নির্ভর রাজনীতি করছেন। কারন তিনি বেশ ভালো করেই জানেন এই আসনে তার কোনো জনপ্রিয়তা নেই। নূন্যতম সুষ্ঠু ভোট হলেও তিনি লাখো ভোটের ব্যবধানে হেরে যাবেন। কারন তার পালিত সন্ত্রাসীরা বছরের পর বছর ধরে রূপগঞ্জবাসীর উপর নির্মম নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে যা কিনা বিভিন্ন্ সময় জাতীয় এবং স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। এক সময়কার শান্ত রূপগঞ্জ এখন খুন, মাদক আর সন্ত্রাসের জনপদ হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে। তাই নীরিহ রূপগঞ্জবাসীর উপর কারা নির্যাতন নীপিড়ন চালাচ্ছে এটা জানেন সবাই। তাই আগামী দিনগুলিতেও রূপগঞ্জবাসী যদি ভোট দেয়ার সুযোগ পায় তাহলে এখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কোনো আস্তিত্ব থাকবে না বলে রূপগঞ্জবাসী মনে করেন। মন্ত্রী হামলা মামলা করে বিএনপিকে ভয় দেখাতে চায়। বিগত দিনগুলিতেও তিনি বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর নানা ভাবে নির্যাতন চালিয়েছেন। মামলার পর মামলা দিয়েছেন। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয় নাই। রূপগঞ্জে বিএনপির জনপ্রিয়তা আরো বেড়েছে। তাই আমি মনে করি তিনি আমাদেরকে ভয় দেখাতে চাইছেন। তার পালিত সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রীর শেল্টার থাকার কারনেই থানায় অভিযোগ করলেও থানা কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে পুলিশ উল্টো তাদেরকে সহায়তা করে। কিন্তু এসব করে তিনি যেটা হাসিল করতে চাইছেন সেটা হাসিল করতে পারবেন না বলেই আমরা বিশ্বাস করি। খুব শিগগিরই রূপগঞ্জ সহ সারা দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আমরা তুমুল আন্দোলন গড়ে তুলবো ইনশাআল্লাহ। তাদের প্রত্যেকটি অপকর্মের বিচার সময় মতো হবে ইনশাআল্লাহ।